১৫ আগস্ট সাইকাডেলিয়া
পথনাটক
চয়ন খায়রুল হাবিবপ্রকাশিত : আগস্ট ১৫, ২০১৮
১৯৭৫
মেঘ থেকে মেঘে রক্তবাহী উপগ্রহের দোলা
ধানমন্ডি ৩২ নম্বর দোতালার জানালা
পর্দা ফুড়ে অগস্ত্য সূর্যের দেশে
সিড়ির ধাপেরা উড়ে যায় বিশ্বায়িত বাংলাদেশে
গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড শহর বন্দর
বেতারে শুনেছে খুনের খবর
মাটি ল্যাপা ঘর ভোরের পুকুর
থরথর হাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
২০১৩
ডানাঃ ডাইরেক্ট নাটক ১
কাচের ওপাশে বসা সাদা দাড়ি, পায়জামা পাঞ্জাবি, টুপি পরা চশমা চোখে খোলা চপ্পল পায়ে পুরুষ,
নাম, গোআ।কাচের এপাশে বসা প্যান্ট শার্ট, জুতা পায়ে মধ্যবয়সী দুজন পুরুষ দর্শনার্থী।
গোআ`র অল্প পেছনে পিঠে পরির ডানা সাটা দুটা রোবোটিক্স পাহারাদার।পুরো কথপোকথন জুড়ে ওরা গোআ`কে পাখনা মেলে বাতাস করবে।
রোবো ১:
বিভিন্ন প্রামাণ্য পাঠে ৭২থেকে ৭৫,
অবকাঠামোগত ধ্বংশস্তুপে বাংলাদেশ বিরোধী অন্তর্ঘাত চালচিত্র !
রোবো ২:
স্বাধীনতার কিছু পর সিমান্তরক্ষী বাহিনী সদর দফতর ঢাকা পিলখানাতে মুক্তিযুদ্ধে অংশ-না-নেয়া-সৈনিকদের স্বসস্র বিদ্রোহ, প্রতিক্রিয়াতে সিমান্তরক্ষী বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা-সদস্যদের হাতে অস্ত্র! পিলখানাতে দু পক্ষ নির্বিচার গোলাগুলি, কর্মকর্তারা জিম্মি! জেনারেল ওসমানীর পিলখানা প্রবেশে গররাজি খন্ডযুদ্ধরত দুই পক্ষ! বঙ্গবন্ধু পিলখানাত প্রবেশে গোলাগুলি থামে, বিবদমান পক্ষগুলোর সমঝোতা!
রোবো ১:
সিমান্তরক্ষী বাহিনী ব্যবস্থাপনা, র্যাব ব্যবস্থাপনা সেনাবাহিনীর হাতে! পুলিশে
বাংলাদেশিদের আস্থা নাই, সিমান্তরক্ষী বাহিনী বিভিন্ন সময় নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি!কোন এক বাহিনীকে সামাজিক সমস্ত ক্ষত সারানোর দায়িত্ব চাপানো রাজনৈতিক আত্মহনন!তারপর সে বাহিনী কর্মকর্তা dohs ধরনে বিভিন্ন বৈশম্যমুলক পুরস্কারপ্রাপ্তি, সামন্ত থেকে পাতি বুর্জোয়া উন্নয়ন, তখন তারা প্লাস্টিক সার্জারির ফলাফল অর্গানিক হিসাবে দেখানোর জবরদস্তিতে র্যাব জাতিয় প্রতিষ্ঠানের সাফাই ভাষণ !
রোবো ২:
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার সময় যেরকম রক্ষীবাহিনী নিষ্ক্রিয়, আজকে একের পর এক ব্লগার হত্যা,
র্যাব সক্রিয় না!আমাদের আরো নিরাপদ থাকার অজুহাতে র্যাব!র্যাব উসিলাতে পুলিশ জবাবদিহিতার
আওতার বাইরে !
রোবো ১:
অনেক বলছে, ব্লগার হত্যার বিরুদ্ধে সক্রিয় হলে আওয়ামী লিগকে নাস্তিক দল বলা হবে!কে কি বলছে তা
নিলেতো আর আওয়ামী সরকার পার্বত্য শান্তি চুক্তিতে যেতে পারতো না!বিভিন্নমুখী দ্বন্দ্বের উদ্ভাসে গণমুখী দলের চলার পথ প্রশস্ত , বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা এ-প্রবর্তনা!গুরু, লঘু সবাই সমান অধিকার ৭২-সংবিধান!
সে-সংবিধান মৌলবাদের শিকড়ে আঘাত, সে-সংবিধান ধর্ম-নিরপেক্ষ, প্রকৃত প্রস্তাবে ব্যক্তির ধর্ম-বিশ্বাসের সাথে রাষ্ট্র কোন সংঘাতে নাই!
রোবো ২:
যথার্থ পটভূমিতে মূল্যায়ন, বাংলাদেশ বিরোধী মুখোশ উদ্ঘাটন ও উৎপাটন!
যারা শিরাজ শিকদার ক্রসফায়ারে উচ্চকিত তারা চৈনিক অন্তকলহ কমরেডদের হাতে
স্বাধীনতার পর পর নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক, মেধাবী কবি হুমায়ুন কবিরের ঘটনাটি চেপে যায়!
`কুসুমিত ইস্পাত` লেখক হুমায়ুন কবির হত্যাকাণ্ড গোমর যারা জানবার তারা পরে হেফাজতি গড ফাদার,
কেউ কেউ দুতাবাস ও NGOদের বড় তরফে খিদমতগার!
গোআঃ তাহলে?
ছেলেঃ আমার আর্মি ট্রেনিং অনুযায়ি, আমাদের পক্ষ্যে আগে নিয়মিত বলেছে এরকম কিছুকে ওদের পক্ষে চলে যেতে হবে!
গোআঃ সেটা হয়েছে?
ছেলেঃ হয়েছে!
গোআঃ সাড়া কেমন?
ছেলেঃ পজিটিভ!টার্গেট করে যেসব হিন্দু এলাকাতে ঘরবাড়ি পোড়ানো হয়েছে,
তাদের শহুরে লোকজনই শেয়ার, লাইক দিচ্ছে হামলে পড়ে; একেবারে ফেমিলি গ্রুপ করে গায়েন, বায়েন,ভাই, বোন চা কোক খেতে, খেতে এন্ডোর্স করছে, কোলাকোলি করতে চাইছে!
আমারতো ইনফেন্ট্রি ট্রেনিং!ইঞ্জিনিয়ার বন্ধুরা হেল্প করেছে!এই যে আমার বন্ধু ও খুটিনাটি ভালো বলতে পারবে!
(ছেলে পাশের লোকের দিকে তাকায়)
ইঞ্জিনিয়ারঃ এটাকে শত্রুরেখার পেছনে ফিফথ কলাম বা পঞ্চম বাহিনী ফর্মেশান বলতে পারেন!
গোআঃ সেটাতো আমরা ৭১এ করেছি!বুড়ো বয়সে আমার জেলে আসাতো আটকায় নি!
ইঃ ৪২ বছর দেরি করিয়ে দেয়া খারাপ না এচিভমেন্ট হিশেবে!বার্ডের চাষীকে জাতীয় পুরস্কার দিতে,
সাতাত্তরে স্বাধীনতা দিবস পদকের ম্যানুফেকচার, ইঞ্জিনিয়ারিং হিসাবেও কিন্তু এক্কেবারে চানমারি!
১৮ কোটির দেশে এরকম কয়েক লাখ চানমারি করলেই কেল্লা ফৌত!
(গোআ, ইঞ্জিনিয়ারের দিকে বিরক্ত চোখে তাকায়, দাড়িতে এবং গলায় কিছুক্ষন হাত বুলিয়ে
আবার মনোযোগ ফিরিয়ে আনে)
রোবো ১:
বাংলাদেশ পরাজয়ে কাদের লাভ খতিয়ে দেখবার আছে!বাংলাদেশের জন্য ১৯৭১ সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন হলেও,
বাংলাদেশে লুকানো গোপন রাস্ট্র নক্সাদারদের কাছে ১৯৪৭ বেশি গুরুত্বপুর্ন!
রোবো ২:
১৯৭৫ একের পর এক অভ্যুত্থান, পালটা অভ্যুত্থানে অনেকে ভাবতে থাকে,
`হত্যাকাণ্ড ক্ষমতার উৎস`।ক্ষমতায়নে ছোট, বড় শরিক এহেন প্রণোদনার বশবর্তী হলে সেখানে জনগণ গৌন,
তাদের নিরাপত্তা বিধান রাস্ট্রযন্ত্রের কাছে কোন অগ্রাধিকার নাই!হত্যাকারীর নিরাপত্তা অপরাষ্ট্র কর্মকাণ্ডের নিয়ামক!১৫ আগস্ট স্বঘোষিত হত্যাকারীদের সাংবিধানিক বিচারের নিহিত অর্থ ক্ষমতায়নে প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ
অংশীদারদের জ্ঞাতার্থে, `হত্যাকাণ্ড ক্ষমতার উৎস নয়`।
১৯৭৫
আলোর উৎসে আত্মাহুতি ঠান্ডা মাথার খুনি
ওরা মুলত শেকলবাধা অমাবশ্যার প্রেতযোনী
বুলেটে বেয়নেটে চলটা উঠে দেয়ালগুলো ঝাঝরা
মরনঝাপিতে ঝাপ মেরেছে বীজধানখোর মাজরা
আংটির আঙ্গুলে তবু নির্মোক
আধ্যাত্ম প্রায়ানাম প্রাকৃত শোক
বিষাদে কিন্ন মার বুকে দুধ
রবি সোম মঙ্গল বুধ বিশ্যুধ
২০১৩
ডানাঃ ডাইরেক্ট নাটক ২
গোঃ বলুন!
ইঃ ডিটেইলসে না গিয়ে বলতে পারি যে এবারের ফর্মেশান আরো বড়, আরো সুক্ষ!মুল বাহিনীর চেয়ে পঞ্চম বাহিনী বড় থাকবে!চাদের বুকে মুখ দেখানো চলবে গ্রামে গঞ্জে; তবে শহুরেদের জন্য ভার্সিটি-বেইসড-ফিফথ-কলাম!
গোআঃ কাজ হলে হয়?
ইঃ নর্থ সাউথ মডেলটা খুব বেশি শকিং!আবার এমেরিকানদের রাডারে ঐ মডেলটা আছে!ব্লগার নিকাশ-টাইপ
শক-ট্রিটমেন্ট বিচ্ছিন্ন সেলগুলো স্বতন্ত্রভাবে চালাবে।কিন্তু সিস্টেমেটিকালি আমরা পাশাপাশি
নর্মাল-সামাল-বেসামাল-লং-টার্ম-ট্রিটমেন্টে যাব!
গোআঃ সেটা কিরকম?
ইঃ এটা আবারো সেই বার্ডের মাহবুব চাষী এপ্রোচের সাথে মোস্তাকি কাস্টমার সার্ভিসের ফিউশান!
রায়ের সময়গুলো জানা দরকার!তখন সরকার রায়ের ইম্প্যাক্ট সামাল দিতে ব্যাস্ত থাকবে!
আমাদের ইউনিটগুলো অটোমেটিকালি সক্রিয় হবে!
পঞ্চম বাহিনি তাদের স্ক্রিপ্ট এখানে ফাইন টিউনিং করবে!ঠিক যেভাবে যে শুনতে চায় সেভাবে এরা বলবে!
রোবো ১:
ডেটলাইন বসুন্ধরা গ্রুপ!
২০০৬সালে বসুন্ধরা গ্রুপ টেলি কমিউনিকেশান শাখার পরিচালক হুমায়ুন কবির সাব্বির হত্যাকান্ড ঘিরে একের পর এক চমকপ্রদ দুর্নিতির ফিরিস্তি!সাব্বির খুন ২০০৬। বসুন্ধরা গ্রুপ চেয়ারম্যান শাহ আলমের ছেলে পলাতক শাফায়াতসোবহান সানভির আসামি, বিচারপতি মোতাহার হোসেন অধিন বিশেষ ট্রাইবুনাল ৪ এ মামলা শুনানি শুরু ২০১১ডিসেম্বার। ১৫ ডিসেম্বার মাননিয় বিচারপতি সানভিরসহ অভিযুক্ত সবাইকে বেকুসুর খালাসের রায়!বহুল প্রচারিত এ মামলার লম্বা তদন্ত বা না-তদন্ত চলাকালে দুর্নিতি দমন কমিশন প্রমান করে যে সাব্বির খুনের পরততকালিন স্বরাস্ট্র প্রতিমন্ত্রি লুতফজ্জামান বাবর বসুন্ধরা চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ২১কোটি টাকা ঘুশ!
রোবো ২:
মন্ত্রি বাবর বিরাট অঙ্কের টাকা দেয়া থেকে বোঝা যায়, এ মামলা ঘিরে তুমুল প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নিতি!
২০১৪ সংবাদ অনুযায়ী দুর্নিতি দমন কমিশন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মোতাহার হোসেন
সাব্বির হত্যা মামলায় কোন দুর্নিতি করেছেন কি না তার তদন্ত শুরু।
ই: রোবট ভাইয়া, রোবট আপা বসুন্ধরা গ্রুপের কালের কন্ঠকে গ্রাউন্ড সফট করবার কেরামতিতো আমরাই শিখালাম!
ছেলেঃ ধরুন, আপনাকে নিয়ে বলার সময় ফিফথ কলাম রাইটার-রা যেমন গ্রাউন্ড সফট করেছে এরকমটা বলে যে
আপনি ভাষা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন; সেই একই টেকনিকে নয়া ফিফথ কলাম বলবে, ``অমুককে আমরা `ভলবাসতাম`
`বিপ্লবী` হিশেবে, তার অধপতনে আমরা ক্ষুব্ধ...``
ইঃ টার্গেট হচ্ছে, গ্রাউন্ড সফট করা!সাবেক বিপ্লবী বললে একটা নস্টালজিয়া তৈরি হয়!এসব আমরা ব্যাবহার করবো।
গোআঃ আল্লামার মেসেজগুলোর কি হবে?
ইঃ সেগুলো থাকবে!একদল সেগুলো নিয়ে লিটারাল যা আছে, তা বলতে থাকবে।আরেকদল মডারেট করে বলবে!
আর ফিফথ কলাম একেবারে বিপক্ষদের মত বলবে!এই ফিফথ কলাম মডারেটদের অন্যদের কাছে এক্সেপ্টেবেল করে
তুলবে, আর মডারেটরা লিটারাল মানে কাঠ-অর্থোডক্সদের এক্সেপ্টেবল করে তুলবে!
রোবো ১:
এরশাদিয় জান্তা আমলে ছাত্র আন্দোলনকারী হত্যা হতো ট্রাক চাপা দিয়ে!কাজটা করতো পুলিশ এবং রাষ্ট্রযন্ত্র
আগাগোড়া তাতে সরাসরি জড়িত ছিলো!এখন ব্লগারদের হত্যা করছে মাদ্রাসার ছাত্ররা কিম্বা মৌলবাদে আচ্ছন্নদের শাখা প্রশাখা!এরশাদিয় জান্তা আমল থেকে এখন অব্দি নুতন চিন্তাকে উতখাত করবার যে ধারা তার শুরু সেই পাকিস্তান আমলের আইউবি জান্তার আমল থেকে এবং এর নির্দেশনাতে থেকেছে মধ্যবিত্ত!
রোবো ২:
এরশাদিয় আমলে সৈয়দ আলি আহসান, আল মাহমুদ গং বিভিন্ন ঘরোয়া আড্ডাতে ছাত্র
আন্দোলনকারীদের আখ্যা দিয়েছিলো, `ডাকাত` বলে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলতো `ডাকাতদের গ্রাম`!
ট্রাকের চাকাতে পিষে ছাত্র হত্যা হলে এরা হুররে দিয়ে বলতো `ডাকাত মারা পড়লো`!
কথিত ডাকাত-বিরোধী ততপরতার সাংস্কৃতিক জবরদস্তি থেকে `কবিতাকেন্দ্রে`র যাত্রা এবং বিভিন্ন ব্যানারের প্রতিক্রিয়াশীল সাহিত্য কেন্দ্রের রমরমা!এরশাদ পরবর্তি আমলে ব্লগার হত্যাকারীদের হয়ে বিভিন্নরকম সাফাই সাপ্লাই অব্যাহত রেখেছে জামাতি-মার্ক্সিস্ট লেবাসধারি গং!
১৯৭৫
জল্লাদদের পুরানো পোশাকগুলো
অন্ধকারের চেয়ে অন্ধকার ভীষণ ভুতুড়ে কালো
শুক্যুরবার তক ইনডেমনিটি হা টিট টি ঢিশু ঢিশু
ধামাচাপা মৃতের হাড় গোড়ে নাচে উর্দিধারির ডাকিন-টিসু
কালো কারচুপি সাদা টুপি যত শবেবরাতের রাতভর
সামনে পিছে তথ্যটুইস্ট হিজিবিজি সব কাগজি বছর
বছর ঘুরে ঘুরে রাতদুপুরে হঠাত ঘুম ভেঙ্গে চিচিং ফাক
পুরো দৃশ্যটা কাগজে আকা ভোরবেলাকার মোরগের ডাক
২০১৩
ডানাঃ ডাইরেক্ট নাটক ৩
(ছেলে খুক খুক কেশে কথা বলে)
ছেলেঃ আমরা খুব ভাল একজনকে পেয়েছি!সাইদির চেয়ে ভালো!চাদের বুকের ছবির মত ইত্তেফাক-ভাষাতে লেখে্!
টক শোতে পাতানো খেলার আদলে মহড়াটা পরীক্ষা করা হয়েছে!...তাওহিদিদের পাশে এরা আমাদের প্যরালাল
বিপ্লবী ভাইরা!তর্কে ওস্তাদ!তর্কে ব্যবহার না করে তর্ককে ডাইলিউট করে দিতে এরা সামনে একেবারে সেন্টারে থাকবে।
থাকছেও শেষ খবর পাওয়া অব্দি।এদের ফেলে কেউ কোনদিকে তাকাচ্ছে না!
(এবার গোআ`কে শুধু বিরক্ত না, একটু ক্ষিপ্তও দেখায়)
রোবো ১ ও ২:
রাইগেন না, রাইগেন না গো গোআজম ভাই!
রোবো ১:
বিশ্বজিৎ আর রাজন কিন্তু কোন ব্লগ লিখে নাই!নাস্তিক, এটা সেটা বলে ওদের দুজনের বেলাতে আমাদের সামাজিক অসুস্থতা ধামাচাপা দেয়া যাবে না!পাষণ্ডরা লুকায় আছে আমাদের ভদ্রবেশী বাবা, ভাই, দুলাভাইদের ভেতর এবং তাদের আগলে রাখছে আমাদের আতঙ্কগ্রস্ত মা, বোন, ভাবিরা!আমাদের খুনি-সাশ্রয়ী রাজনৈতিক দল, পুলিশ শুধুমাত্র মিডিয়ার উদ্ঘাটনের মুখে বিহিত সাধনে ছদ্মমনযোগি হয়!খুন হয়ে যাওয়াদের বাইরে আছে আমাদের মানসিক অসুস্থ স্বজনেরা, যাদের অনেকের স্নায়বিক বিপর্যয় ঘটেছে শৈশবে,কৈশোরে নিজের উপরে কিম্বা অন্য কারো উপরে হওয়া মানসিক বা শরীরী বা উভয় ধরনের নির্যাতন প্রত্যক্ষ করবার ফলে!
রোবো ২:
এক্ষণে তোমাদের বাবাসহ তোমাদের ভাড়ার ঘরের কঙ্কাল নিয়ে তোমাদের বিশদে যেতে হয়, যদি যেতে চাও, কারণ তোমাদের স্কিতজোফ্রেনিক-যমজ সে-বিশদে যেতে পারছে না!আর সে-বিশদে না গেলে দর্পণে বার বার বিশ্বজিৎ ও রাজনের মুখ দেখতে থাকবে!
২১১৩
ডানাঃ ডাইরেক্ট নাটক ৪
গোআঃ বাবাজিরা, তোমাদের টকশো মশকরাতো একটার পর একটা চলছেই!আমাকে দেখছি এখানেই জীবন শেষ করতে হবে!
ছেলেঃআব্বা, মশকরা শব্দটা লাগসই ব্যাবহার করেছেন, মশকরাটা কাজে দিচ্ছে!একটার পর একটা ব্লগার
কাপিশ হয়ে যাচ্ছে!কিন্তু তার সাথে জড়িতরা বহাল তবিয়তে আছে!পঞ্চম বাহিনিকে টেকানোটা, বিস্তার করাটা খুব দরকার!আমি ছেলে হিশাবে আপনাকে এখানে এসে দেখলাম, আঙ্কেলরা এখানে! আপনি কি চাইবেন, আমি আপনার জায়গাতে বসা থাকি; আর আপনার নাতি, নাতনিরা এখানে এসে ইঞ্জিনিয়ার পাশে নিয়ে আমার সাথে কথা বলুক?
গোআঃ বাচ্চিদের তবিয়ত ভাল তো?
ছেঃ হ্যা, হ্যা ওরা ভাল আছে!...এচিভমেন্টগুলো দেখুন!টক শোতেও আমরা, আবার টক শোর যে প্রেসেন্টাররা
আমাদের বিরুদ্ধ্বে, স্টুডিওর বাইরে আমাদের পুরোনো লোকদেরই হাততালি দিচ্ছে!শামসুর রাহমানদের,
জাহানারা ইমামদের যারা আমাদের হয়ে গালাগাল করেছে তাদের আমরা সেন্টারে নিয়ে এসেছি!
তারা এখন পাব্লিকের ডার্লিং...মহা এচিভমেন্ট!
গোআঃ হয়েছে, হয়েছে...এটা বাসা না! তোমাকে আর্মিতে পাঠানো তাহলে বিফলে যায় নি!
ইঃ বাপকা বেটা, সেপাইকা ঘোড়া!
রোবো ১:
স্বাধীনতা পরবর্তি রব, জলিল, সিরাজুল আলম খান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া আওয়ামী লিগের অন্তর্গত সমাজতান্ত্রিক তরুন শক্তিকে বিপ্লবের নামে বের করে আনে এবং এদেরকে নিয়ে গড়ে তোলা গনবাহিনীকে নিয়োগ করে অন্তর্ঘাত্মুলক ততপরতায়। তখন সে তরুন শক্তি দমন, পিড়ন,নির্বাসনের যোয়াল কাধে নিলেও এদের হোতারা থাকে ধরা, ছোয়ার বাইরে!পরবর্তিতে বিভিন্ন পর্বে সামরিক জান্তাদের সাথে রব, জলিল গং এর নৈকট্য দেখে প্রশ্ন জাগতে পারে যে গনবাহিনী কি বিপ্লবের নামে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা ছিলো কি না?যুদ্ধ পরবর্তি যে ধ্বংশস্তুপের ওপর বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে ছিলো, তা পুনর্গঠনে নিশ্চিতভাবে ঐ তরুন শক্তি ব্যাপক ভুমিকা রাখতে পারতো!
রোবো ২:
যুদ্ধ পরবর্তি ধ্বংশস্তুপেরপ্রকৃতিটা বুঝতে ১৯৭২এর জানুয়ারিতে টাইম ম্যাগাজিনে ছাপানো
বিশ্বব্যাঙ্কের মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদনে তাকানো যাক: ``বেশ কিছু শহরের অবস্থা আনবিক বোমাতে
ধ্বংশের পরের সকালের মত।ষাট লাখ বাসগৃহ পাকিস্তানিরা সম্পুর্নভাবে গুড়িয়ে দিয়েছে।
এক কোটি চার লাখ কৃষিজিবি পরিবারের চাষের যন্ত্র, হালের গবাদি নেই।
পরিবহন ও টেলি কমিউনিকেশান সম্পুর্নভাবে বিকল। সব সেতু উড়িয়ে দেয়া হয়েছে এবং অভ্যান্তরিন নৌপথ
ব্যবহারের অনুপযুক্ত।আত্মসমর্পনের দিন অব্দি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ভুখন্ডটির ধর্শন সার্বিকভাবে চালিয়ে
যায়। ব্যবসা, বাণিজ্যের মালিকানা সর্বাংশে পশ্চিম পাকিস্তানিদের হাতে ছিলো এবং পুর্ব পাকিস্তান থেকে
সমস্ত তহবিল সরিয়ে ফেলা হয়েছে।পাকিস্তান এয়ারলাইন্সের চট্টগ্রাম শাখাতে কেবল ১১৭ রুপি পাওয়া গেছে।
রাস্তাঘাট, দফতর থেকে সরকারি বেসরকারি সমস্ত গাড়ি উঠিয়ে পশ্চিমে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে!....``
রোবো ১:
মাদ্রাসা ও মাদ্রাসার বাইরের তরুনদের যারা ইসলামি বিপ্লবের ধুয়া তুলে, হেফাজতি মিছিলের নামে রাস্তায় ঠেলে দিচ্ছে আজকে তাদের ভুমিকাও কি গতকালের রব, জলিল, সিরাজুল আলম খানের মত নয়?সে সময়ের মত এ সময়েও তরুনদের বিভ্রান্তকারিরা চোরাগোপ্তা বুদ্ধিজীবীদের, আমলাদের পাশে পাচ্ছে!হেফাজতি মিছিলকারিরা প্রকাশ্যে একজন মেয়েকে পেটালো, ঢাবি, জাবি, রাবি, চবি র লাইনে দাঁড়ানো খাটো চুলের মিনিয়েচার কুমির কন্যাগন সুর মিলিয়ে বললো, হেফাজতের বাক-স্বাধিনতাও নিশ্চিত করতে হবে!কোনটা যে বাক-স্বাধিনতা এবং কোনটা দির্ঘ মেয়াদে বাক-স্বাধীনতার অন্তরায় তা নিয়ে আমাদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে বার বার!
রোবো ২:
অসুরের সাথে সুর মেলানোর ঘটনাটাও যোগান, চাহিদার চক্রেই ঘুরছে!
কারো চুল রাঙ্গানোর পয়সা দরকার, কারো ফ্ল্যাট মর্টগেজের তহবিল দরকার, কারো হেরোইন, ফেন্সিডিল, ইয়াবার খরচ দরকার!মফস্বলগুলোতে রিয়েল স্টেট ব্যাবসাতে হাজার, হাজার কোটি পেট্র ডলার ছড়ানো জামাতিদের সাথে মধ্যবিত্ত ফাউস্টিয়ান-চুক্তি করেছে, আমরা তোমাদের স্বল্প সুদে রিন দেব, বিনিময়ে তোমাদের ছেলেমেয়েরা যাতে আমাদের বিরোধীতা না করে!বাবা,মায়ের গোপন রিনের নিমক হালাল করতে গতকালকের মফস্বলি মার্ক্সিস্ট, মাওবাদি আজকের রাজাধানিজাত জামাতি-মার্ক্সিট টাউটে রুপান্তরিত!
এই সহজ সমিকরনে বাগড়া বাধানোর কাজটা করেছিল ব্লগার কমিউনিটি যার দায় শুধতে হচ্ছে জীবন দিয়ে!
রোবো ১:
জামাতি-মার্ক্সিস্ট চিন্তাতে কিছু অভিনবত্ব থাকলেও তা ঐ পুরানো হন্তারক পুলিশের আরেকটু গাড় কালো পোষাক পরবার মত!য়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রশ্রয়ে এহেনো অপঘাতমুলক চিন্তার জন্ম, সে রাস্ট্রযন্ত্রের নক্সাতেই ব্লগার হত্যার ফরেনসিক লুকানো!
১৯৯০
নাচাও রাস্তা নাচাও মনকার আচিক আন্দোলন
ঢুকে যাও যদি খালি পাও মায়ের পেট আপন
চ্যানেল টিপেটুপে দ্যাখো পাও না কি হারানো লাগেজ
স্ক্রিন জুড়ে তেলবাহি ট্যাঙ্কারে লিকেজ
ফসিল জ্বালানির পেট্রল পোড়া ভকভক বমি
বংগপোসাগর এখন জিয়ন্ত তিমির মমি
সংঘ জোতদার ঘাপটিবাজ ড্রাকুলার খিচুনিতে বেধা
দেবদূতযুক্ত সোনালি তরবারি দেবদুতযুক্ত যোদ্ধা
২১১৩
ডানাঃ ডাইরেক্ট নাটক ৫
ইঃ এই রোবটগুলা বেশি বুঝে!আঙ্কেল, আমাদেরকে ওদের মত আবার ঠিক ওদের মত না একটা ইউসার ফ্রেন্ডলি স্লোগান দেন!যেটা নিয়ে আদিবাসীদের আবার কোন অসুবিধা হবে না!
ছেলেঃ ওহ, আব্বা বলা হয় নি, আদিবাসীদের ভেতর আমাদের ফিফথ কলাম খুব এফেক্টিভ কাজ করছে!শত্রুসেনারা যেই স্লোগানই দেয়, সেটা নিয়েই আমাদের লোকেরা আদিবাসীদের বিভ্রান্ত করে দিচ্ছে!প্রসেসটা কাজ করছে!ইউসার ফ্রেন্ডলি স্লোগান খুব দরকার!
গোআঃ হুম, বুঝলাম!(ঘাড় ঘুরিয়ে সেন্ট্রির দিকে তাকায়, ছেলের দিকে তাকায়, ইঞ্জিনিয়ারের দিকে তাকিয়ে
সরাসরি বলেঃ ...আমাদের স্লোগান এখন থেকে ``ধর্ম যার যার, ব্যবসা সবার।``!
গোআ উঠে দাড়ায়!পরি-সেন্ট্রিদের পাহারায় মঞ্চ থেকে বেরিয়ে যায়!
ছেলে, ইঞ্জিনিয়ার উঠে দাড়ায়!``ধর্ম যার যার, ব্যবসা সবার`` স্লোগান দিতে, দিতে মঞ্চ থেকে বেরিয়ে যেতে থাকে!
বেরোনোর আগেই স্লোগানের শব্দ টুইস্ট হতে থাকে, ``ধর্ম যার যার, ধর্ম-ব্যাবসা সবার``...
আলো কমে আসে! মঞ্চের বাইরে ভয়াবহ ভাঙচুরের শব্দ হয়!
রোবো ১:
বঙ্গবন্ধুর হত্যার মাসে বরেণ্য শিল্প এস, এম, সুলতানের জন্ম!
শিল্প বলেছিলো:``যে শিশু সুন্দর ছবি আকে, তার গ্রামের ছবি আকে, সুন্দর ফুলের ছবি আকে, জিব জন্তুর
ছবি আকে, গাছপালার ছবি আকে সে কোনদিন অপরাধ করতে পারে না, সে কোনদিন কাউকে ব্যথা দিতে পারে না।``
রোবো ২:
শিল্প আরো বলেছিলো ``মানুষ যখন নিঃসঙ্গ হয়ে যায়, যখন নিরুপায় হয়, তখন তার মধ্যে এ ভাবটার সৃষ্টি হয়...এম্পটিনেস...সে ফিল করে...য্যমন গরিব মানুষ রোগগ্রস্থ হলো, চিকিৎসার পয়সা নেই, আল্লার পরে ডিপেন্ড করে, আল্লা তুমি বাচাও, না হলেআমাদের এ রোগী বাচে না!``.....
রোবো ১, রোবো ২:
১৫ই আগস্ট, ১৯৭৫ বংগবন্ধুকে হত্যার পর ঢাকার বিভিন্ন মোড়ে মোতায়েন ট্যাঙ্ক বাহিনীর কালো পোষাকের সৈনিকদের দেখিয়ে বাংলাদেশকে ভয় দেখানোহয়েছিলো!আজকের বাংলাদেশে র্যাব বাহিনীর পোষাকও কালো!
২০১৫
সার ডিডিটি ইত্যকার বিষাক্ত ফেনায় থরোথরো
ইচ্ছামৃত্যুর সিলভিয়া প্লাথ নাম পালটে মেরিলিন মনরো
নাম পালটে ডলি আনোয়ার কিম্বা গল্পকার কায়েস আহমেদ
রিক্সার টিনপ্লেটে লেখা শহীদ পাখিদের নির্বেদ
কেউ যায় ঘুরপথে কারো পছন্দ শর্টকাট
ফাল্গুনের হাওয়াতে কাপে বাংলাদেশের ঘাট মাঠ ফুটপাথ
কাপে কর্মাকর্ম ঠেকানো ধর্মাধর্মের নেতৃত্ব
নাকে তুলা গুজে চুপ থাক ফতোয়াবাজ লাশের কর্তৃত্ব।
চয়ন খায়রুল হাবিব
অগাস্ট ২০১৫
ব্রিটানি
লেখকের নিজস্ব বানানরীতি অনুসৃত