হৃদ্য আবদুহুর পাঁচটি কিশোর কবিতা
প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২
তেরিমেরি পালোয়ান
গুমগুম ভাঙে ঘুম গুড়িগুড়ি বিষটি
গুনগুন গান গেয়ে খাও ঝাল মিষটি।
পা ফেলে গুটিগুটি এলো ওই গুগলি
কথা বলো গুছিয়ে, করো না হে চুকলি।
সকালের কাঁচারোদ উঠোনের ঘাসে
ছায়াবীথি ইসকুলে যায় আর হাসে।
তেজপাতা খেয়ে সে হলো খুব তেজী
তেলচিটে তেলাপোকা ধরে আনে বেজি।
তেরিমেরি পালোয়ান ছুটে এসে বলে,
চলো যাই ধানক্ষেতে পানি দেয়া কলে।
ইসকুলে প্রতিদিন পড়া আর লেখা
ভালো আর লাগে না তো গৎবাঁধা শেখা।
কত কত পড়া এই পৃথিবীর বুকে
হৃদয়ের খাতা খুলে নাও সব টুকে।
ভূতেনবাবু
ভূতেনবাবুর সঙ্গে জেনো খুব শিগগির রাতে
হতেই হবে ডিনার আমার ইলিশ এবং ভাতে।
ভূতেন খাবেন মস্ত কাঁচা ইলিশ মাছের মুড়ো
সঙ্গে আরো থাকতে পারে শুকনো মরিচ গুড়ো।
ভূতেনবাবু বীর পালোয়ান অ্যাঁব্বড় তার গোঁফ
হাতের মুঠোয় উপড়ে ফেলেন বুনোলতার ঝোপ।
মেঘের ভেতর নীল পাহাড়ে থাকেন ভূতেন বাবু
রোজ সন্ধেয় টিচারটাকে করতে পারেন কাবু।
টিচার হলেন দম দেয়া কল, নিয়ম মেনে পড়ান
ভাল্লাগে না অংকের বই, অংক তবু করান।
চোখের ওপর চশমা এঁটে টিচার মিয়া কন,
যোগ-বিয়োগের সূত্র জানা খুবই প্রয়োজন।
এই টিচারের নেই কি আমার মতো এমন খোকা?
একটুও কি হয় না মায়া মাথায় দিতে টোকা?
হাইব্রিড
আমাদের চারপাশে আছে যা যা
তাই নিয়ে আমাদের পরিবেশটা।
গাছপালা আছে তাই নিতে পারি শ্বাস
ফুলফলে সুশোভিত এই না আবাস।
স্বার্থের ঠুলি আজ মানুষের চোখে
গাছপালা কেটে সাফ করে কেন লোকে?
হাইব্রিড ফল খাই, সবজিতে কেমিকেল
আসলের দুনিয়ায় নকলের একি খেল!
নদীতেও হাইব্রিড মৎস্যের চাষ
হাইব্রিড দুনিয়ায় মানুষের বাস।
সবকিছু নষ্টের অধিকারে আজ
মানুষের নেই কোনো ঘেন্না ও লাজ।
কোতোয়াল
কোতোয়াল কোঁচ হাতে
কোনাকুনি যায় রাতে
নদীতে
খুব বড় মাছ পেলে
কোপতা খায় ছেলে
মনিতে।
কোলাহল করে তারা
মামনির কোল ছাড়া
পেলে যে
তারপর ঘরে এসে
কোলাকুলি করে বসে
হেলে যে।
মাছ নিয়ে কোঁচড়ে
খুব ভোরে ফেরে সে
বাড়িতে
কোরমা রেঁধে বৌ
এসে বলে, হাত ধোও
হাঁড়িতে।
ওরা
ওই দেখো কে আসছে ছুটে
বলতো সে কী চায়
সবহারাদের নেই তো কোথাও
বাঁচার মতো ঠায়।
বাঁচতে তারা চাইছে বলেই
আসছে ছুটে ঢাকা
রিকশা টেনেও চলবে তো পেট
আসবে হাতে টাকা।
কিন্তু গ্রামে করবে কি তার
নেই তো হিসেব কিছু
চাষবাসে লস খাচ্ছে তারা
কিস্তি আছে পিছু।
সুদ মহাজন সুদের জালে
আটকে ফ্যালে তাকে
তাই তো ঢাকা শহর তাদের
পেট বাঁচাতে ডাকে।