হাদিউল ইসলামের পাঁচটি কবিতা

প্রকাশিত : জুন ১৬, ২০২১

প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্যে চাঁদ উঠেছিল

সে রাতে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্যে চাঁদ উঠেছিল
আমি গান্ধর্ব বিবাহ করে তোমাকে খেয়েছি চুমু
কামগন্ধা জোছনায় ডাহুক কেন বিসমিল্লা খাঁ
আমি ভেবেছি অনেক
জল সরে যাওয়া ঘাসের শয্যায় কোথাও মুরলী
নিশ্চয় বেজেছে ব্রজের ভাষায়

সে রাতে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্যে চাঁদ উঠেছিল
গান্ধর্ব বিবাহে সাক্ষী ছিল জারুল হিজল
পরিযায়ী হাঁস, তিনটি ডাহুক, জোনাকি কয়েক
এরা ললিতা বিশাখা অথবা প্রিয়ংবদা

আজ তুমি কার ঘর আলো করো শকুন্তলা— রাই?

সময়

প্রকৃতি সমতা মানে, অধিকন্তু মানুষ নষ্টের যম
অবিচার সব সময়ই অবিচার

দাদার ভিটেয় সকল সময় নাতিরা থাকে না
ভেবে দেখো, দাদারও একদা যৌবন ছিল
দাদারও প্রেমিকার প্রতি দড়িছেঁড়া টান ছিল তোমার মতোই, সে আজ কোথায়!
অথবা পিতা ও প্রপিতামহের কবরের ঘাস আজ গরু ও ছাগলে খায়!

মহাকালে জীবনও এক স্বপ্ন বটে, মশাল বাহক হওয়া চাই নতুন নতুন
ফুল না ছিঁড়ে প্রতিবেশীর বাগানটা শুধু দেখো
মুগ্ধতা নিয়েই ঢুকে যাও স্বীয় আস্তানায়

প্রেম থেকে দম্ভ বড় নয়, সে তো জানা কথা
স্বাস্থ্যবান মন কখনও সমাজের অনিষ্ট করে না

তোমাকে খেয়েছি চুমু

তোমাকে খেয়েছি চুমু  সাক্ষী রাখি নাই
তুমিও খেয়েছো চুমু  সাক্ষী রাখো নাই

পৃথিবীতে রাজসাক্ষী রয়েছে প্রচুর
গাছ পাখি চাঁদ তারা ঘাসের অঙ্কুর
তারা যদি মুখ খোলে এতদিন পর
দেবে কি উড়াল তুমি ঈষাণের ঝড়

শুধু তো বিষাদ ছোঁয় মুদ্রাদোষে একা
তোমাকে সাজাই পদ্যে শব্দে পাই দেখা

মাঠ

প্রলুব্ধ তাকিয়ে আছি চাঁদ
মাঠ ভেসে যাচ্ছে তোমার লাবণ্যে

একপাল অকাট্য শিয়াল মাঠময় হল্লা করে ফিরে যাচ্ছে যার যার ইচ্ছের বিবরে

চরাচর আমুদে আহ্লাদে রাধা
ঢলে পড়ছে সখী পত্র-পল্লবের গায়ে

হাসনা হেনা ও কামিনীর গন্ধ সম্মেলনে
আমিই ইঁদুর, আমিই বেড়াল

মাঠে পড়ে আছে কালচে রক্ত বিগত দিনের

পূর্ণিমায় লিখছি

ঘোরতর পূর্ণিমায় তোমাকে লিখছি
কামিনীর মদির ভাষায়
এত যে ক্ষরণ,  পিপাসার আকণ্ঠ গরলে
হাবুডুবু খাই

এ আমার সিনানের জল
এ আমার প্রণয় অতল

এত সামগান, লোকচক্ষুর আড়ালে সৌধ
সেঁধিয়ে দিচ্ছি দক্ষিণা হাওয়ায়
স্বর ও ব্যঞ্জনের মালা ফেলে কোথায় পালাবে?

গৃহস্তের ঘাম শরীরে আমার
ভালো থাকবে পাটশাক-করলা ভাজি-ডাল
আর সজ্নের ঝোলে