জেফার রহমান
স্বাধীন খসরুর গদ্য ‘জেফার রহমান ও তার নতুন গান’
প্রকাশিত : মে ১৯, ২০২৪
কয়েকদিন থেকে বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো একটা গান নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। আলোচনার থেকে সমালোচনা বেশি, নেতিবাচক। আর যারা সমালোচনা করছেন তাদের মধ্যে অধিকাংশই মেয়ে সমালোচক।
প্রথমে আমি বুঝতে পারিনি, কোন গান বা কার গান নিয়ে কথা হচ্ছে। বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস ও কমেন্ট দেখে বোঝার চেষ্টা করলাম। কিন্তু পুরোপুরি ব্যর্থ।
আজকে বিষয়টা পরিষ্কার হলো। লস এঞ্জেলেসে ফুয়াদ আল মুক্তাদিরের কম্পোজিশনে জেফার রহমানের একটি নতুন ইংলিশ গান Spicy। ইউএসএ তে জন্ম না হলেও খুব ছোটবেলা থেকে ফুয়াদ আল মুক্তাদিরের বেড়ে ওঠা ওখানে।
ফুয়াদ আল মুক্তাদির আমার দূর সম্পর্কের। আত্মীয় সিলেট অঞ্চলের মানুষ। ফুয়াদের প্রথম দিকের একটি অ্যালবাম সম্ভবত ‘বন্য’ যদি ভুল না হয়। এই অ্যালবামে আমি প্রথম জেফার রহমানের গান শুনি। গান শুনে মনে হয়েছে, ওখানে জন্ম নেয়া বেড়ে ওঠা একজন মেধাবী শিল্পী।
দেখতেও বেশ সুন্দর, ট্রেন্ডি, খুবই স্মার্ট এবং অন্যরকম সাহসী। যার গান আগে বাংলাদেশে শুনিনি। তারপরে শুনেছি ইংরেজি গান। মনে হয়েছে বাংলা না করে জেফার ইংরেজি গানে খুব ভালো করবে বিশ্বব্যাপী, বিশ্ব পরিমণ্ডলে, যদি চেষ্টা করে।
জেফারের হেয়ার স্টাইল অন্যরকম। ভিন্ন রকম মানে অন্য আর দশটা বাঙালি মেয়ের থেকে আলাদা। আমার মোটেও খারাপ লাগেনি। মনে হয়েছে, এটিই হচ্ছে জেফারের ভেতরের পরিস্ফুটন। এটাই তার ট্রেডমার্ক। তখন শুনেছি জেফারের হেয়ার স্টাইল আর পোশাক নিয়ে নানান ধরনের কথা, খ্যাত খ্যাত বর্ণনা, যার যার ইচ্ছা মতো।
এটা কি ধরনের হেয়ার স্টাইল? এটা কোন স্টাইল হইলো? এটা কি ধরনের পোশাক, কোন ফ্যাশন হইলো? আমরা এটা করি না, আমরা ওটা পরি না, এটা আমাদের হেয়ারস্টাইল না, এটা আমাদের কাপড় না...আমাদের আমাদের...আমাদের না!
যারা এসব করেছেন তাদের মধ্যে ১০০% ভাগই মেয়ে। কোনো ছেলেকে এসবে দেখিনি, মনে হয় ছেলেদের হাতে এসবের এত সময় নেই।
এবার আসি আসল কথায়। যে গান নিয়ে শুধু সমালোচনা হচ্ছে, গানটি পুরোপুরি ইংরেজি গান। সাথে একজন অ্যামেরিকান Rap আর্টিস্ট। তিনি Rap করেছেন ইংরেজিতে। এই ইংরেজি গানের মধ্যে পুরনো একটি প্যারোডি বাংলা গানের একটা অংশ মিক্সড করা হয়েছে। তা খুবই অল্প সময়।
হায় হায় ঠুনকো আদব, বেয়াদবির সংসারে হঠাৎ জেগে ওঠা মনোভাব এমন কেন? মনে হচ্ছে, জেফারের ওই ইংরেজি গানের বাংলা অংশটুকু বাংলা গানকে ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছে, মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে!
ভাবনায় বড় হোন। বেশি করে ভাবুন। ভাবুন ভাবুন আর বেশি করে প্রতিদিন হাঁটুন। ইহা কোনো নারীবাদী ও পুরুষবাদী লেখা নয়। আমি কোনো বাদী নই। আমি হলাম একজন একান্ত নিতান্তই মানুষবাদী।
লেখক: অভিনেতা