স্বাক্ষর শুভর ৩ কবিতা
প্রকাশিত : ডিসেম্বর ২৫, ২০২১
আয়না
সেইসব দিনে উতরাইতে থাকি সমস্ত নদী
আমার ক্ষুধার ওপর পড়ে মাটির প্রলেপ
দক্ষিণের দিকে যাইতে যাইতে
হাওয়ায় ভাসে শাদাফুল
সেইসব দিনে জীবন নিরবধি।
সেইসব দিনে বুকে জাগে গাছ
তোমার আঁচল বাঁধে শেকড়ের মতো
ঝড়ে উপড়ে যাওয়ার আগে
মন্দিরে বাজে কাঁসা
সেইসব দিনে আমি সন্ধ্যান্মুখ মাছ।
সেইসব দিনে আমি চেয়েছি মৃত্যু
জীবনের সত্য যে উন্মোচন করে সদা
আমি তো জানি হে
মৃত্যু মাত্র আয়না।
সেইসব দিনে আমি ভালোবেসেছি
আমার যাবতীয় ঘৃণা
আমার সমস্ত ক্ষত শুকিয়ে যাওয়ার আগে
হাতে নিয়েছি একখানা তৃণ
খুঁচিয়ে বের করেছি রক্ত।
সেইসব দিনে আমি জন্ম নিয়েছিলাম
আমার রক্তের আগুনে জ্বলে সে আঁতুড়ঘরের আলো
আমার জন্মের বিম্বে আমি দেখেছি আমাকে
হাতে নিয়েছি করুণ আয়না,
আমি তো জানি হে
মৃত্যু মাত্রই আয়না।
হে রাত্রি
হে রাত্রি, তোমাকে সত্য জানি।
তোমার কাছে দেখেছি গভীর আলো
দিনের দৃশ্য যখন ক্লান্ত করে আমার আত্মা
আমি তোমার কাছে পুড়াইছি আমার চোখ।
হে রাত্রি, তোমাকে কেউ দেয় নৈঃশব্দ্যের নৈবেদ্য
কিন্তু শব্দ তো তোমার ভেতর ফুটতে থাকে অবিরাম,
তোমাকে বলা হয় অন্ধ
তাদের জন্য যারা তোমাকে আলোর উল্টোদিক হিসেবে দেখতে চেয়েছিল।
হে রাত্রি, তোমার কাছে বান্ধা আছে
সব শোক, আঙুলের নিচে চাপাপড়া বিষাদ
তুমি এক গভীর অন্ধকার
এমন অন্ধকার অন্ধও কি দেখতে পায় কখনো?
বিষণ্ণ মাছ
বরফের স্তূপ
সাঁতার কাটতে থাকে
একটা বিষণ্ণ মাছ।
তিনতলা ঘর
চারতলায় বাগান
নিচতলায় কবর।
ঝড়
আগুন
গাছ।
দূরত্বের দিকে
অন্ধ তৃণ
ধনুর্বিদ কাঁদে।
ঈশ্বরের ছায়া
কত বড়?
ঈশ্বরের ছায়া নাই।
কেন?
ঈশ্বর ঘুমায়।
আলো এবং অন্ধকার
তুমি এবং আমি
এক এবং আলাদা
তোমার সম্মুখের অংশের কাছে
তোমার সরু পিঠ যেমন।