সৌদি জোট, আমাদের দাসত্ব
রিফাত বিন সালামপ্রকাশিত : নভেম্বর ১২, ২০১৮
১৯৮০ সালের বাংলাদেশি ডাক টিকিট। ফিলিস্তিনে চলমান ইজরাইলের গণহত্যার বিরুদ্ধে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনবাসীর সশস্ত্র আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েই এই টিকিট ছেপেছিল বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের ওই সশস্ত্র আন্দোলনের আদর্শ এখন রূপকথা মাত্র।
২০১৫ সালে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নামে ৩৪টি মুসলিম প্রধান দেশ নিয়ে একটি নতুন সামরিক জোট গঠনের ঘোষণা দেয় সৌদি আরব। জোটে বাংলাদেশও আছে (এই মুহূর্তে জোটে বাংলাদেশে অবস্থান অস্পষ্ট)। শুধু জোট না বরং বাংলাদেশ ভূখণ্ডেও এই জোটের প্রভাব ভয়াবহ। এ অঞ্চলের ধর্মীয় উগ্রতা অনেকাংশে সৌদি কেন্দ্রিক। হেফাজত বা সরকারের ধর্মীয় ঝোঁকও একই ধারার অংশ মাত্র। অর্থনৈতিকভাবে আরবের উপর নানা কারণে নির্ভরশীল বাংলাদেশও তার স্বতন্ত্র অবস্থান হারিয়ে ক্রমে পাকিস্তানের মতোই আরেক রাষ্ট্র হয়ে উঠছে। আসন্ন নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে মৌলবাদীদের নিয়ে রাষ্ট্রীয় উন্মাদনা তারই আরেক চিত্র। কেন সৌদি-আরব মানবতার শত্রু তার প্রমাণ অসংখ্য। সাম্প্রতিক একটা তথ্য আর কিছুই না, আরেকটা প্রমাণ স্রেফ।
সৌদি আরব পাঁচশোটি মারকাবা ট্যাংক কিনেছে ইসরায়েলের কাছ থেকে। ১১ নভেম্বর একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, স্পেনের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দখলদার ইসরায়েলের কাছ থেকে পাঁচশোটি মারকাবা ট্যাংক কিনেছে মুসলিম প্রধান দেশ সৌদি আরব। সৌদি যুবরাজ বিন সালমান ওই ট্যাংকগুলোর জন্য নগদ অর্থ পরিশোধ করেছেন। স্পেনের নৌ বাহিনীর মাধ্যমে ট্যাংকগুলো কেনা হলেও সামনের ছয় মাসের মধ্যে ট্যাংকগুলো সৌদি আরবের সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সৌদি এমন সময় ইসরায়েলের কাছ থেকে সমরাস্ত্র কিনেছে যখন ইয়েমেনে চলছে গণহত্যা। অন্যদিকে ১৯৬৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সময়ে ইসরায়েলি আগ্রাসনে ৪২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শহিদ হয়েছে। এছাড়া লাখ লাখ মানুষ শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে।
সেই জোটে বাংলাদেশ থাকার অর্থ একই গণহত্যায় অংশ নেয়া। এ ধরনের জোটে যুক্ত হওয়া এটাই প্রমাণ করে, যে বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে খুব বেশি দূরে নাই। সোজা বাংলায় সমাজতান্ত্রিক পথ ছাড়া এই চক্র থেকে বাংলাদেশের মতো থার্ড ওয়াল্ড কান্ট্রির মুক্তি নাই।