সৈয়দ আফসার

সৈয়দ আফসার

সৈয়দ আফসারের পাঁচটি কবিতা

প্রকাশিত : জানুয়ারি ১৬, ২০২১

কেন এত বেঁচে থাকা

বেদনার সাথে অকারণেই সম্পর্ক ভালো। স্বপ্ন, তুমি বেদনার হাত ধরে বেঁচে থাকো আর সীমিত আকারে অভিমানী হও ঠোঁটে। তবুও ডাক্তারের কাছে যাওয়া—
আসা ক্লান্তিকর, অস্বস্তি লাগে। শোনা গেল, বেদনার
বয়স বাড়ছে। চেপে রাখি। কাউকে কিছুই হয় না বলা। শুধু জিজ্ঞাসা, এ-ই যা; মরার পর কি কবিতা লেখা যায়? কে শোনে কার কথা! শেষাবধি বেড়ে চলে ঋণের বোঝা; আমাদের গড় আয়ু আর গড় উচ্চতা, এই নিয়ে বেঁচে থাকা... এই নিয়ে বেঁচে থাকা...

বেদনা

এই যে তিরতিরে হাওয়া, গলা বের করে সবকথা নিয়া গেল উড়াইয়া। তুমি কী কিছু শুনতে পেলে? আমি প্রায়ই ভুলে যাই, পূর্বের দেখা ও কথা। মুখ তুলে তাকালে বুক অব্দি জেগে ওঠে ব্যথা। তুমি প্রায়ই বলো হৃদয়টা খুব বড় আমার। চিন্তা করে দেখলাম, এমনটা হতে পারে বয়সের ভারে। বেদনা থুতনির নিচে তাকাইয়া হাসাহাসি করে; বেদনা কী হতে পারে না আমার পুরনো প্রমিকা?

তালু

সর্বস্ব গোপন রেখেছ হাতের তালুতে
তাই দ্বিধাদ্বন্দ্ব যত সাতপাকে ঘুরে
ফিরে এলে খুলে দেব মুঠোহাত
দেখব কীভাবে তুলে নাও পূর্ণতা
                              ছেঁকে নাকি চেটে;

তুমি তো মুখ ফুটে কিছু বলোনি
দাঁড়িয়েছ সরোবরে দূরত্ব রেখে
                              মনে হয় দূরদেশে

সর্বস্ব গোপন রেখেছি; তাই দেহ পুড়ে শিহরণ তোলে;

ফিরে যাব না বলে গুণে রাখি পথ, গেঁথে রাখি ছায়া
তোমার আউলা চুলে; কার সৌরভে বিমোহিত হলে
ছুঁয়ে দিলে হিমদেহে বরফ গলে
                              এই শীতবরফের দেশে

ভালোবাসা

এই সেদিন,
যে আমাকে অপমান করলো তাকে
আর যারা উপেক্ষা করলো তাদেরও
                      ভালোবাসি আমি
সুযোগে হাসির ছলে জনসম্মুখে বা পথে
আড়ালে, যে আমাকে অপমান করবে
          তাকেও ভালোবাসি আমি নীরবে
নিঃস্বার্থে মানুষকে ভালোবাসা পরম ধর্ম
এই ব্রতে মানুষের ভেতর পায়চারি করি
ঘৃণা ও করুণা জোড়চোখে জমিয়ে রাখি

কারণ, তুচ্ছ এই আমি—
মানুষকে ভালোবাসা ছাড়া
        কতটুকু পথ একা, হেঁটে যেতে পারি!

বন্ধন

মা, বৃক্ষ ও নদী তিনে একটি আত্মা

বৃক্ষ, প্রাণ খুলে হাসে ফল ও ফুলে
নদী, বুক উজাড় করে জলবৈচিত্র্যে
মা, সন্তানকে ভালোবাসে নির্লোভে

মা, বৃক্ষ ও নদী তিন একই বহতা
আমি ও মা একটি সম্পর্কের সুঁতা