সজীব দে’র গল্প ‘হিরন্ময় ও একটি আজগুবি গল্প’
প্রকাশিত : জানুয়ারি ০৭, ২০২১
হিরন্ময় মাঝে মাঝে বলে, তার দুটি পাখা আছে।
আমি তার কথায় হাসি। এমন কথায় পাত্তা না দেবারই কথা।
ও প্রায়ই আসতো আমার বাসায়। আমরা মুখোমুখি বসতাম।
আমি কিছু বললে শুনতে কিন্তু কথা বলতো না। অবাক হয়ে আমার দিকে তাকাতো।
অনেক রাত হলে বলতাম, খেয়ে যা। ও বলত, খেতে ইচ্ছে হয় না। আমি আর কথা বাড়াতাম না। চলে যেত।
এভাবে বেশ কিছুদিন যায়।
একদিন খুব ভোরে আমার বাসায় আসে। দরজায় কড়া নাড়ে।
আওয়াজ শুনে ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলি। দেখি, এলোমেলো চেহারায় সে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি ওকে ঘরে আসতে বলি। সে বলে, চলো আমরা বের হই।
আমিও তার কথায় বের হয়ে পড়ি।
আকাশ তখনো নীল হয়ে আছে। ফুটপাত দিয়ে দুজন হাঁটতে হাঁটতে বাংলাবাজারের চৌরাঙ্গির কাছে আসি।
চৌরাঙ্গির চৌরাস্তা থেকে বরাবর হেঁটে গেলে লালকুঠি। আমরা লালকুঠির দিকে এগুচ্ছি।
আমি খেয়াল করিনি, হিরন্ময় আমার পাশে নেই। দেখি, সে আমার চেয়ে কয়েক ফুট উপরে ভাসছে। কিন্তু কোনো পাখা নেই। আর আমার দিক চেয়ে মিটিমিটি হাসছে।
আস্তে আস্তে সে যখন উপরের দিকে উড়ে যাচ্ছে আর বলছে, বলেছিলাম না আমার দুটো পাখা আছে... আমি জোড়ে চিৎকার করে বলি, কই তোমার পাখা?
সে বলে, পাখা ছাড়া কি পাখি উড়তে পারে? আমি হলাম পাখি। আমি মানুষ নই। পাখি হয়ে গেছি।
সে আমাকে রেখে আরও দ্রুত উড়তে উড়তে বুড়িগঙ্গার দিকে চলে যায়। এক সময় আমি আর হিরন্ময়কে দেখতে পাই না।
হিরন্ময় আর ফিরে আসেনি।