‘সংস্কৃতি মন্ত্রলায় থেকে শেখ মুজিবের ছবি সরালেন ফারুকী’

লতিফুল ইসলাম শিবলী

প্রকাশিত : নভেম্বর ১৩, ২০২৪

কবি নজরুল ইনস্টিটিউট হলো সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের অধীনে, সেই অর্থে আমার দপ্তরের মন্ত্রী বা উপদেসআ হলেন মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী। দপ্তর প্রধান হিসেবে মঙ্গলবার আমি আমার দপ্তরের পক্ষ থেকে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি। এটাকে ফারুকীর হেটারসরা দোষ হিসেবে দেখছে। অসুবিধা নাই। আমার সঙ্গে ফারুকীর সম্পর্ক ভাই ও বন্ধুর মতো। এই সম্পর্ক প্রায় ২৫ বছরের পুরাতন। ফারুকীর স্ত্রী তিশা ও তার ভাই ইথেন আমার ছোট ভাই-বোনের মতো। তাদের বাবা-মা আমাকে সন্তানতুল্য আদর করতেন। সেই ফারুকী এখন কর্মসূত্রে আমার দপ্তরের মন্ত্রী। এই দুই সম্পর্কের কারণে আমার কাজের ক্ষেত্রটা অনেক সহজ হবে, এটাই স্বাভাবিক।

আমার কাছে নজরুল ইনস্টিটিউট কোনো চাকরির জায়গা না। নজরুল আমার সাংস্কৃতিক বিপ্লবের হাতিয়ার। যে হাতিয়ার দিয়ে আমি ফ্যাসিবাদের ন্যারেটিভের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নেমেছি। এই লড়াইয়ে আমার মতো ফারুকীও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ফারুকী দোষেগুণে মেশানো মানুষ। এই মন্ত্রণালয় চালানোর যোগ্যতা তার আছে।

অতীতে তার ফ্যাসিবাদের সাঙ্গে ঘেঁষাঘেষির যেমন প্রমাণ আছে, তেমনি তাদের বিরোধিতা করারও প্রমাণ আছে। আমি খুব ভালো করেই জানি, আওয়ামী ফ্যাসিসদের দ্বারা সে কেমন নিগৃহীত হয়েছে। জুলাইয়ের তীব্র দিনগুলিতে আমরা যখন অসহায়ের মতো দেশের সেলেব্রিটি বুদ্ধিজীবীদের সমর্থনের আশায় তাকিয়ে ছিলাম, তখন ২/১ জন ছাড়া আর কাউকে আমাদের পাশে পাইনি।

সেই জুলাইয়ে ২/১ জনের মধ্যে ফারুকী ছিলেন একজন। ফারুকীর সেই সময়ের স্ট্যাটাসগুলো অনেক তরুণকে সাহস জুগিয়েছে। অনেকের মতো সে চুপ থাকেনি। নিশ্চিত নিরাপত্তার জীবন ফেলে ফারুকী রিস্ক নিয়েছিল। জুলাই আন্দোলন ফেইল করলে আমাদের অনেকের মতো ফারুকীর পরিণতিও ভয়াবহ হতো।

আমি ফারুকীর জুলাইয়ের ভূমিকার জন্য তার অতীত ভুলতে রাজি আছি। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ ক্ষমাশীল। আর এখন থেকে ভবিষ্যতের ফারুকী তো আমাদের নাগালের মধ্যেই থাকবে। আমি ইনসাফ থেকে কখনই নড়ব না ইনশাআল্লাহ। ফারুকী যতক্ষণ ইনসাফের উপর থাকবে ততক্ষণই সে আমার নেতা। ইনসাফ থেকে সরে দাঁড়ালে সবার আগে আমিই তার বিরুদ্ধে দাঁড়াব।

ইনসাফের প্রশ্নে আমি কারও পরোওয়া করি না। মনে রাখবেন আমি এই কথা যার জন্য বলছি পদাধিকার বলে তিনি এখন আমার বস। এবং তিনি আমার বন্ধু তালিকায় আছেন।

গতকালের ছবিতে যারা আমাদের মাথার ওপর শেখ মুজিবের ছবি দেখেছেন, তাদের জানার জন্য বলছি যে, ফারুকী আজ তার অফিস তথা সংস্কৃতি মন্ত্রলায় থেকে ফ্যাসিবাদের আইকন শেখ মুজিবের ছবি সরিয়ে ফেলেছেন। সম্ভবত সচিবালয়ে এই কাজ ফারুকীই প্রথম করলেন।

দায়িত্বপ্রাপ্ত ফারুকীর মধ্যে আমি সেই স্পিরিট দেখেছি, সে আমাদের বিশ্বাসের মর্যাদা রাখবে ইনশাল্লাহ। আমরা একটু অপেক্ষা করি আর তার কর্মের দিকে তাকিয়ে থাকি। আমি সর্বদা আপনাদের ভালো পরামর্শ তার কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আপনাদের সঙ্গে আছি। আমাকে ভুল বোঝার দরকার নাই।

নির্বাহী পরিচালক
কবি নজরুল ইনস্টিটিউট

মঙ্গলবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে এই স্ট্যাটাস লেখেন শিবলী। সেখান থেকে সংগৃহীত।