রাহমান চৌধুরীর কবিতা ‘ঘৃণা করি আজ তাদের’
প্রকাশিত : জুলাই ১৭, ২০২৪
ঘৃণা করি সেইসব বুদ্ধিজীবী শিক্ষক শিল্পী সাহিত্যিকদের
যারা আমার সন্তান আমার শিক্ষার্থীদের
বুকে গুলি করার পক্ষে সম্মতি দিয়েছিল বিবৃতি প্রদানের মাধ্যমে
হত্যাকাণ্ড চালিয়ে পুনরায় আন্দোলনকে দমন করতে
বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিতে চায় যারা
যদি তারা কেউ কেউ মুক্তিযোদ্ধা হয় তবুও
কারণ তারা আর মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র ধারণ করে না
কিংবা কখনোই ধারণ করতো না
মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র চিন্তায় ধারণ না করেই তারা যুদ্ধে চলে গিয়েছিল
সেদিন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অস্ত্র ধরার জন্য তাদেরকে অবশ্যই অভিবাদন জানাই
কিন্তু আজ আর নয়
যখন তোমরা তারুণ্যের বুকে গুলি চালাতে সম্মতি দিয়েছো
যখন তোমরা আর মানুষের বাক-স্বাধীনতা মানতে রাজি নও
যখন তোমরা তোমাদের স্বৈরাচারী মনোভাবের বিরুদ্ধে
রাজপথে মিছিল দেখতে চাও না
ঘৃণা ছাড়া তখন তোমাদের আর কি প্রাপ্য বলো?
যারা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে
বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে তারা ঘৃণ্য দালাল
কিন্তু যারা স্বাধীনতার পর এদেশের সম্পদ লুটপাট করেছে
বিদেশে এদেশের সম্পদ পাচার করেছে
বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করে সম্পদের পাহাড় বানিয়েছে
বিলাস বৈভবে মেতে আছে তারা সবাই বিশ্বাসঘাতক
স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে
নিজেদের মাতৃভাষা নিজেদের ভূখণ্ড
নিজদেশের জনগণের সঙ্গে তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে
মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের মতন তোমাদেরকে আমরা ঘৃণা করি
কারণ তোমরা জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছো
স্বাধীনদেশের তারুণ্যের রক্তে তোমরা হাত রঞ্জিত করেছো
১৯৫২ সালে যা করেছিল শাসকরা এবং তাদের বুদ্ধিজীবীরা
ঠিক তাই করেছো তোমরা আজ
সত্যি বলছি, তোমাদের হিংস্র নখ দন্ত দেখে ফেলেছি
কিন্তু তারুণ্য বুকের রক্ত দিয়েই তা টের পেয়েছে
মুছে ফেলতে পারবে না আর তোমাদের সেই চেহারা
বহুকাল ধরে তোমরা এখন ঘৃণাই কুড়াবে।
জুলাই ১৭, ২০২৪