রওশন আরা মুক্তা

রওশন আরা মুক্তা

রওশন আরা মুক্তার চারটি কবিতা

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ০২, ২০২০

ভাদ্র

আমি সাধবো না আর, আমি ভাঙবো না আর
আমি আছড়ে পড়ব না আর বালুতটে
বাষ্প ওঠা ভেজা সৈকতে ডাকব না আর
এবার শীতলতা নামুক তোমার পিঠের কাঁচা টমেটো ক্ষেতে
সকালে পেঁয়াজ পাতার শিশিরে চেহারাটা দেখে নিও
আজকে আর কত দূর তুমি যাবে?
পোষাকের নিচে চামড়া যেমন
রক্তও তো বইছে ধমনীতে
লবণ তাতে ততখানিই
যা বাকিটা আমার শীতে

ফেরারি

সত্য হলো নো ম্যানস ল্যান্ড
রাতে ঘুমালে ওখানেই থাকি
সেখানে কোনো মানুষ নাই
শুধু রোহিঙ্গা, রোহিঙ্গা আর রোহিঙ্গা
নারী রোহিঙ্গা, নবজাতক রোহিঙ্গা, বৃদ্ধ রোহিঙ্গা
কিশোর যুবক বালিকা রোহিঙ্গা
নো ম্যান্স ল্যান্ডের সবদিকে মানুষের হাতে বন্দুক
রোহিঙ্গাদের সাথে নিঃশ্বাস নিতে থাকি
ভাবি, বুঝি এটাই শেষ বায়ু
নিজের কোনো দেশ নাই
গুলি তাড়া করে ফিরছে
কখন যেন বিঁধে যায় বুকে

হোলি জেইল

জেলখানাটা যেন দেখতে কেমন?
কয়েদিরা সেখানে কেমন-কেমন করে যেন থাকে?
আসমানের একটুকরো নীল আর গাছের পাতার সবুজ দিয়ে
হিম্মতের ছবি কারা আঁকে?
জেলখানাটা দেখতে কেমন,
কারা সেখানে থাকে?
লৌহকপাটের এ-পাশে
পলায়নের ইচ্ছা কেন জাগে
জেলখানাটা দেখতে কেমন
কারা-কারা সেখানে থাকে
রাত আর দিন লেপ্টে-থাকা সময় যে-দেয়ালের ও-পাশে
তাতে কবিতা কারা লিখে-লিখে রাখে!
জেলখানাটা দেখতে কেমন
কারা সেখানে থাকে?

ঘটমান

সকাল হইতেছে; আস্তে আস্তে সূর্যের আলো আইসা
ঢুইকা পড়লো আমার সন্ধ্যালাগা ঘরে
অভ্যাস থেকে বাইর হইয়া গিয়া তুমি
চেষ্টা করতে থাকলা মনে না করতে আমারে।
পানি খাবা বইলা জগ উল্টাইয়া ফেললা
গা যেন না ভিজে তাই, আকাশ কাইটা দরজা বানাই
ওইপাশে গিয়া শিউর করি ডোরটা লক হইল কিনা
শিউর করতে চাই, যেন জানালাগুলার দাগ মুইছা দিতে পারি
ইরেজার দিয়া; তবে মুছতে পারতেছি না চোখের পানির রেখা
একটু পরেই তুমি বাইরে যাবা,
পার্কে বইসা অন্যের খাওয়া চকলেট খাবা।
একটু পরেই ঘুমাবো আমি পানির নিচে পাতালে
ভাসতেছি আমি, মহানন্দে কাটতেছি সাঁতার তোমার গতকালে