মোহাম্মদ রফিক
মোহাম্মদ রফিকের ৩ কবিতা
প্রকাশিত : জুন ০৪, ২০২১
ঘুমকথা
সে এসেছিল, নাকি আসেনি,
ভাবি, জীবন যে একটাই;
সাড়া দিয়েছিল, নাকি দেয়নি,
মৃত্যু, একবারই দেখা দেয়;
তারপর অতঃপর, আমি,
সন্তরিপণে, গোরের শিয়রে
গেড়ে রাখা, প্রস্তরখণ্ডটি
সরিয়ে, পাা ফেলি, কোনদিকে;
জীবন-বা কাহিনি বা, কিংবা
জীবনকাহিনি, তথাস্তু বা;
মঞ্চে, পর্দা টেনে দাও, তবু,
অন্তরালে, মেলে কি হিসাব;
ফল্গুধারা, অনন্ত কালের,
জন্মমৃত্যু, বিরাগ্যবিচ্ছেদ;
স্মৃতি বা বিস্মৃতি, একই ধাম,
সৃষ্টি ও প্রলয়, তারই নাম;
সান্ধ্যআসর, কার চোখে
কবিয়াল, বাঁধো দুটি পদ;
নাইয়া, কোন কূলে দেবে ঘাট,
উড়ো কেশ, বাতাস অপার!
নয় আবির্ভাব, নয় তিরোধান
তোমার দুয়ার, ভেবে নিই;
জেনেছি কি, সে কার বসত,
পথ, পথে বেপথ থাকেই,
বিভ্রম বিভ্রাট, চলাচলে
কামনা আকাঙ্ক্ষা, বায়বীয়,
বেশরম কটাক্ষ, লাজুক;
সোহাগ দংশন, পুষ্পপাপড়ি
লখিন্দর, হিম ভীমরতি
অকালের, ময়ূর-ময়ূরি
কামকেলি, নিয়তিশরণ;
দুয়ার ছিল বা, অবারিত;
যত কাছে যাই, পিছে হাঁটি,
পারাপার, কে কবে পেরলো,
দুস্তর নিঃসীম, বেহুলার;
মরি মরি, গাঙুরের ঢেউ
সাগরে উধাও; সন্ধ্যা নাকি
উজ্জয়নী পথ, মনচিতে
করে-বা বিলীন; ঘণ্টা বাজে
শমন, সময়, কালান্তক
নিস্তব্ধতা, হা-মুখ গহ্বর;
দুর্জ্ঞেয় রহস্য, হে অপার
ধাঁধা, অগ্নিপঙ্ক্ষী, না মানব;
সে ছিল না মৃত্যু, জন্ম নয়,
হর্ষ, মরণের জন্মান্তর,
পরম আকুতি, বিনিময়ে
তোমার বিধান, প্রিয়েপ্রিয়
ধূপধুনো আগরবাতির
ঘ্রাণ, বৃষ্টি, পাপিয়ার পিউ কাঁহা
পথ ছিল, দ্বার প্রবেশের;
অবান্তর, জিজ্ঞাসা, আদউ!
চক্ষু দুটি
নক্ষত্রের জলে পুড়ে গেলে,
পাতার ওপর, লেপি মাটি;
ভস্মরাশি, গড়ায় ধুলিতে,
ভুলি, তবু আশীর্বাদ হোক;
বৃষ্টি ধৌত, আগ্নেয় শিলায়,
মুক্ত হয়, অন্তর শরীর:
পিপাসার্ত, বাষ্পীয় আকাশ,
মেঘ ভাঙে, প্রভাতি ব্রীড়ায়;
কাল অন্ধ, তোমার দু’চোখে,
খুঁজেছে আশ্রয় পথবাসী
কান্তারের, আন্ধার গহ্বরে,
প্রতারিত বুকে, সেঁকে দিন!