মুনীর হোসেনের গল্প ‘বিবর্ণ সকাল’

প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২

ভূমধ্যসাগরের শান্ত ঢেউয়ের মাঝ থেকে লাল থালার মতো সূর্যটা ধীরে ধীরে উদিত হওয়ার দৃশ্য উপলের মাঝে সবসময় অন্য রকমের ভালো লাগার আবেশ তৈরি করে। উপল ভাবে, কয়েক দিন কী এক ঘোর আর ভালো লাগায় সময়গুলো কেটে যাচ্ছে। সাইপ্রাসের এই সমুদ্রতীরবর্তী শহর, আয়া নাপাতে পুরো গরমের সময়টা যেন এক উৎসব মুখর কারনিভ্যাল। তার ওপর পিয়েত্রার সাথে পরিচয় হওয়ার পর থেকে উপলের মনটা এক অভাবিত ভালো লাগায় আবিষ্ট হয়ে আছে।

উপলের মনে হলো, এখন বাসায় ফিরে ঘুমানো উচিত। না-হলে সাড়ে দশটায় সুপার মার্কেটের কাজে যেতে দেরি হয়ে যাবে। আর দেরি হলে রক্ষা নেই! খারুস মালিকটা নিজের গোমড়া মুখ আরও বেশি গোমড়া করে রাজ্যের গা জ্বালানো কথাবার্তা বলা শুরু করবে। যেটা উপলের জন্য হজম করা খুব কঠিন এক ব্যাপার। উপল মুহূর্তের মধ্যে সানবেড থেকে উঠে বাসার দিকে হাঁটা ধরল। হাঁটতে হাঁটতে সে ভাবল, আজ রেস্টুরেন্টের কাজ থেকে তাড়াতাড়ি ছুটি নিতে হবে। পিয়েত্রার সাথে আজ সন্ধ্যার পর থেকে যতক্ষণ মন চায় ততক্ষণ সময় কাটাবো, তা সেটা ভোররাত হয়ে যাক না কেন! আশঙ্কার কালো মেঘ উপলের মনে উঁকি মারে যে, নয়টার সময় পিক আওয়ারে মালিক ছুটি দেবে কীনা।

ঘড়ির অ্যালার্মের তীব্র আওয়াজে উপল বিছানা থেকে ধড়মড় করে উঠে বসে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল, একদম কাঁটায় কাঁটায় দশটা বাজে। উপল বিছানা থেকে নামতে দেখে পাশের ডিভানে রেড ঘুমিয়ে আছে। উপল মনে মনে হাসে আর ভাবে, রেডই অনেক সুখে আছে, ওর মতো এত কাজের তাড়া নেই। দেশ থেকে প্রতি মাসে কলেজের খরচের জন্য টাকা আসে। সামারের ছুটিতে রেড ও নিকশিয়ার একঘেয়ে রুটিন মাফিক জীবনটার পরিবর্তন আর বেশি উপার্জনের আশায় আয়া নাপাতে এসেছে।

উপল দ্রুত পাউরুটির দুই পিস টোস্ট করে মাখন লাগাতে লাগাতে রেডের গায়ে ধাক্কা দেয় আর বলে, এই ব্যাটা ওঠ। কথা আছে।
কি বল? এত সকালে জ্বালাছিস কেন? রেড ঘুম জড়ানো কণ্ঠে উত্তর দেয়।
আজ পিয়েত্রার জন্য একটা গিফট কিনব। তুই দুইটার মধ্যে আমার সুপারমার্কেটের সামনে চলে আসবি।
তোর মাথা খারাপ হয়ে গ্যাছে। গিফট কেন দিতে হবে, ঘুরাফিরা কর, মজা কর, পারলে সেক্স কর। এসব গিফট দেয়া, প্রেমে পড়া একটা সুইডিশ মেয়ের জন্য! রেড রাগত কণ্ঠে জানতে চায়।

প্রেমে পড়ব কেন! ওকে আমার ভালো লাগে, ওর জন্য আমার আলাদা একটা টান অনুভব করি। উত্তর দিয়ে উপল দ্রুত বের হয়ে যায়।
দুরু দুরু বুকে উপল তার রেস্টুরেন্টের মালিক মি. এলিয়াসের সামনে এসে দাঁড়ালো। এলিয়াস টেবিলে ঝুঁকে গভীর মনোযোগ দিয়ে হিসাব-নিকাশ দেখছিল। কেউ একজন সামনে এসে দাঁড়িয়েছে এটা বুঝতেই এলিয়াস টেবিল থেকে মুখ তুলে তাকিয়ে দ্যাখে, সামনে উপল।
কি ব্যাপার উপল, কিছু বলতে চাও, কোনও সমস্যা?
উপল কোনও জবাব না দিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থেকে ইতস্তত করতে লাগলো। উপলের কাঁচুমাচু ভাব দেখে মি. এলিয়াস নিমিষে বুঝে ফেললো যে, উপল যা বলতে চায় সেটা কোনও মেয়েঘটিত ব্যাপার। স্মিত হেসে এলিয়াস জিজ্ঞেস করলো, তুমি নিশ্চয় কোনও বান্ধবি খুঁজে পেয়েছ?
উপল একটু চমকায়। পরক্ষণেই সলজ্জ কণ্ঠে জবাব দেয়, হ্যাঁ ঠিক। আমার আজ সন্ধ্যা নয়টাতে ছুটি দরকার।

উপলকে অবাক করে এলিয়াস বলে ওঠে, ঠিকাছে, প্রথম এবং শেষ। কিন্তু এরপর বান্ধবির সাথে ঘুরে বেড়াও বা সমুদ্রে সাঁতার কাটো, সব কাজের শেষে।
মি. এলিয়াস উপলের গমন পথের দিকে চেয়ে থেকে ভাবে, বিশ-বাইশ বছরের ছেলের এমন মায়াভরা চেহারা এই অঞ্চলে দেখা যায় না। ঘড়ির কাঁটা নয়টা ছুতেই, উপল বেরিয়ে পরে। যেতে যেতে উপল ভাবে, এতক্ষণে নিশ্চয়ই জামি মায়া ও পিয়েত্রাকে নিয়ে ‘জেসমিন ইনন’ পাবে চলে এসেছে। জামির কথা ভাবতেই উপলের চোখে ঝাড়া ছয় ফিট লম্বা এক সুঠামদেহি তরুণের ছবি ভেসে ওঠে।

জামি আসলেই খুব সুদর্শন ছেলে। ওর আর জামির বন্ধুত্বের গভীরতার বিষয়টা এখানকার সকল বাঙালির মুখে মুখে। ‘জেসমিন ইনন’ পাবের কাছাকাছি এসে উপল ওর প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে মোড়কে আবৃত ছোট বাকসোটা আরেকবার হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখে। আজ দুপুরে রেডের শ্লেষ মাখা কটুক্তি উপেক্ষা করে উপল বিশ পাউন্ড খরচ করে সোনার একটা রিঙে ঝুলন্ত দুটি হার্ট আকৃতির লকেট কিনে ফেলল, যা কিনা ওর দুদিনের কাজের মজুরি।

এলপিএস ডিসকোর স্বল্প আলোকিত এক কোণার টেবিলের পাশে উপল পিয়েত্রাকে বসে থাকতে দেখল। টেবিলের উপর পাঁচ-ছয়টা টেকিলার ছোট শট গ্লাস রাখা। উপল পিয়েত্রার সামনে দাঁড়িয়ে পকেট থেকে বাকসোটা বের করে বলল, এটা তোমার জন্য।
কি এটা? পিয়েত্রা উপলের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো।
খুলেই দেখো। উপলের ত্বরিত জবাব।

বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে পিয়েত্রা জবাব দিল, না, এটা এখন খোলা যাবে না। আমি অনুভব করছি, এটা খুব একটা টাচি কিছু। আমি আর দুঃখ পেতে চাই না। এমনিতেই তিন মাস আগে আমার ব্রেক-আপ হয়েছে।
উপল সহসাই থমকে যায়। কী বলবে বুঝে উঠতে না পেরে বোকার মতো বলে ওঠে, দেখি কে কতবার টেঁকিলা শট নিতে পারে।
পিয়েত্রা উপলের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে, কখনো আমাদের সুইডিশ মেয়েদের সাথে ড্রিংক করা নিয়ে বেট ধরতে এসো না। উই ক্যান ড্রিংক লাইক শিট।

উপল জানে, সে নিজে কখনও তিন শটের বেশি খেতে পারবে না। হঠাৎ করেই মিউজিকের শব্দ বেড়ে যায়। ড্যান্স ফ্লোরে লোক সমাগম বাড়তে থাকে। উপল ভাবে, পিয়েত্রাকে নিয়ে এখন ফ্লোরে গেলে মন্দ হয় না। ঠিক তখনই ডিজে ছেলেটা হুট করে এসে পিয়েত্রার এক হাত ধরে ওকে ফ্লোরে নিয়ে গেল। ড্যানিয়েল আধা গ্রিক আধা সাউথ আফ্রিকান, বয়স সাতাশ-আটাশ হবে। আজ দু’মাস হলো, এখানে ডিজের কাজ করছে।

উপল তিন দিন ধরে লক্ষ্য করছে, এই ব্যাটা ড্যানিয়েল পিয়েত্রার ব্যাপারে একটু বেশি খেয়াল রাখছে। উপল মুগ্ধ চোখে দেখে আর মনে মনে ভাবতে বাধ্য হয় যে, ড্যানিয়েল সালসা আর ট্যাঁংগও ভালোই নাচে। উপল নিজে টুকটাক নাচানাচি ভালোই করে, কিন্তু সালসা ওর দ্বারা কখনো হয় না।

উপল ফ্রেশরুম থেকে ফিরে দেখে, পিয়েত্রা মুখ কালো করে বসে আছে। উপল অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, কি ব্যাপার, কি হয়েছে? তোমাকে এত বিমর্ষ লাগছে কেন?
সেটা তোমার জানার দরকার নেই। তুমি দূর হও আমার সামনে থেকে। পিয়েত্রা ঝাঁঝালো কণ্ঠে উত্তর দেয়। উপল আচমকা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে চুপ হয়ে বসে থাকে। মিনিট দশেক পর মাথায় কোমল হাতের স্পর্শে উপলের সম্বিত ফেরে এবং তাকিয়ে দেখে, পিয়েত্রা ওর মাথার চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর বলছে, এই লাজুক ছেলে! এত অল্পতেই মন খারাপ করলে চলবে! তুমি আসলে অনেক কিছু এখনো বুঝো না।
মানে, কি বুঝি না? উপলের বিস্ময়মাখা জিজ্ঞাসা।
মানে, এখন আমি হোটেলে ফিরছি। রাত ৩টা বাজে। পিয়েত্রা জবাব দেয় আর খলখল করে হেসে ওঠে।
পিয়েত্রা চলে যায়, উপল বিমর্ষ হয়ে বসে থাকে।

উপল বারবার ঘড়ি দেখে আর ভাবে, কখন যে ১২টা বাজবে। তারপর ও বের হয়ে সোজা ‘জেসমিন ইনন’ পাবে চলে যাবে। পিয়েত্রা নিশ্চয় অনেক্ষণ ধরে বসে আছে। কাল সকালে ওদের ফ্লাইট। আজই ওর শেষরাত আয়া নাপাতে। উপল পাবে গিয়ে দেখে জামি, মায়া আর পিয়েত্রা বিয়ার খাচ্ছে আর কি নিয়ে জানি হাসাহাসি করছে। উপলকে দেখে মায়া চিৎকার করে বলে ওঠে, এই যে লাভার বয় উপল এসে গ্যাছে, চল জামি, আমরা যাই। আমরা আমাদের মতো আজকের রাত উদযাপন করি, ওরা ওদের মতন।

ওরা চলে যায়। উপল পিয়েত্রার পাশে বসে। উপল অবাক হয়ে দেখে যে, পিয়েত্রা ওর দেয়া লকেট পড়ে আছে। কালো টি শার্ট আর আকাশি ডেনিম প্যান্টের মতো সাধারণ পোশাকেও ওকে উপলের কাছে অন্য যে কোনও দিনের চেয়ে আকর্ষণীয় লাগছে। উপল কিছু বলতে পারে না, চুপ করে পিয়েত্রার দিকে চেয়ে থাকে। এভাবে কতক্ষণ সময় পার হয়ে যায়, উপল বুঝতে পারে না। আচমকা পিয়েত্রা উঠে দাঁড়ায়, তারপর উপলের হাত ধরে বলে, আমার একটু কাজ আছে। তাড়াতাড়ি চলে যাব। তুমি ভালো থেকো, কষ্ট পেয়ো না।

উপলকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে দ্রুত পাব থেকে বেরিয়ে যায়। উপল স্থানুর ন্যায় বসে থাকে, কি করবে বুঝে উঠতে পারে না । হঠাৎ রেডের ডাকে উপল সম্বিত ফিরে পেয়ে দেখে, রেড ঠিক ওর তিন হাত দূরত্বে মটরসাইকেল নিয়ে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে আছে। রেড জিজ্ঞেস করলো, কিরে তুই একলা এখানে কি করছিস, তোর উনি কোথায় গেল?

উপল রেডকে সব খুলে বললো। সব শুনে ও বললো, চল ওকে খুঁজে বের করি আগে। তারপর না-হয় বাকিটা দেখা যাবে।
মুহূর্তের মধ্যে উপল মটরসাইকেলে চড়ে বসলো। এলপিএস ডিসকো আতিপাতি করে খুঁজেও ওরা পিয়েত্রাকে পেল না। কি করবে বুঝতে না পেরে দুজনে সিটি স্কয়ারের দিকে রওনা দিলো। পথিমধ্যে রেড জুস কেনার জন্য একটা মিনি সুপার মারকেটের সামনে বাইক দাঁড় করালো। উপল সুপারমার্কেটের সামনে রেডের জন্য অপেক্ষা করছে। হঠাৎ কার ডাক শুনে রাস্তার ওই পাশে `ব্ল্যাক বিউটি` ডিসকোর দিকে তাকালো এবং দেখলো যে, জামির সাথে কাজ করে দিমিত্রিস ওকে ডাকছে আর বলছে তোমার সে এখানে। আমি মাত্র দেখলাম।

উপল রেডকে বললো, ও এখানে, আমি ভিতরে যাচ্ছি, তুই আয়। ভিতরে গিয়ে একটু খুঁজতেই উপল পিয়েত্রাকে বসে থাকতে দেখল। উপল ওর নাম ধরে ডাকতেই পিয়েত্রা চোখ তুলে তাকালো। উপল স্পষ্ট ওর হঠাৎ করেই উজ্জ্বল হয়ে যাওয়া চেহারায় খুশির ঝিলিক দেখতে পেল। পরক্ষণেই পিয়েত্রা চেহারা গম্ভীর করে উপলকে জিজ্ঞেস করলো, তুমি এখানে? উপল কোনও কথা না বলে ওর এক হাত ধরে ড্যান্সফ্লোরে নিয়ে আসলো। তখন দ্রুতলয়ে বেজে চলছিল:

I ve never seen u lookin so lovely as you dressed tonight, never seen shine so bright
Ooo I ve been blind, you re amazing
Oh lady in red...

উপল হঠাৎ লক্ষ্য করলো, পিয়েত্রা একটা সিগারেটে না আগুন জ্বালিয়ে এমনি হাতে ধরে আছে। উপল জিজ্ঞেস করলো, সিগারেটে আগুন ধরাচ্ছ না কেন?
যখন দুজনের মধ্যে আগুন জ্বলছে তখন আর আগুনের দরকার কি? একথা বলেই পিয়েত্রা আচমকা উপলকে জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে বললো, আমি আর দুঃখ পেতে চাই না। তুমি ভালো থেকো।

পরমুহূর্তেই পিয়েত্রা এক ঝটকায় উপলকে সরিয়ে দিয়ে এক দৌড়ে ডিসকো থেকে বেরিয়ে গেল। রেড হতভম্ব হয়ে উপলকে জিজ্ঞেস করলো, কি হলো এটা? উপল সব খুলে বলতেই রেড বললো, একটা ব্লেড নে, তারপর ওকে খুঁজে বার করে ওর সামনে নিজের হাতে পোচ দিয়ে বল যে, তুই ওকে ভালোবাসিস।

ভালোবাসা বুঝাতে এসব কেন করতে হবে? উপলের বিস্ময় ভরা জিজ্ঞাসা। আর এসব হিন্দি বা বাংলা সিনেমাতেই মানায়, বাস্তবতা ভিন্ন, আর এটা ইউরোপ।
তুই তাহলে মর। রেডের রাগত জবাব।

পাঁচদিন পর। উপল কাজ থেকে ফিরে পার্কের বেঞ্চে বসে ভাবছে, গত কয়েকটি দিন কী পাহাড়সম বেদনায় না কাটলো! উপরন্তু বন্ধুদের টিপ্পনি তো আছেই। একমাত্র ব্যতিক্রম জামি, এব্যাপারটা নিয়ে একদম কিছু বলে নাই। উপল মনস্থির করলো যে, ও পিয়েত্রাকে ফেন করে ওর না বলা কথাগুলি বলবে। উপল পাশের ফোনবুথে ঢুকে স্লটে কয়েন দেয়ার আগে ঘড়ি দেখলো, রাত ৪টা। তারমানে এখন সুইডেনে রাত ২টা। উপল কিছক্ষণ ইতস্তত করার পর ডায়াল করে ফেললো। বেশ কিছুক্ষণ রিং বাজার পর অপর প্রান্তে রিসিভার উঠানোর শব্দ পেল। উপলের বুকের ধুকপুক শুরু হয়ে গেল। হ্যালু... অপর প্রান্তে পিয়েত্রার কণ্ঠ শোনা গেল।
উপল কোনোমতে নিজেকে সামলে বললো, আমি পিয়েত্রার সাথে কথা বলতে চাই।
ইয়েস, দিস ইজ পিয়েত্রা স্পিকিং, উপল ইস দিস ইউ?
তুমি কিভাবে বুঝতে পারলে যে, এটা আমি?
একমাত্র তুমিই আছ ওভার সিজ কল করার। পিয়েত্রা বলে, আমি জানি তোমার খারাপ লাগছে।
আই ব্যাডলি মিস ইউ, আই ফিল ফর ইউ... উপল কম্পিত স্বরে বলে।

কিন্তু এতটা কিভাবে সম্ভব? আমরা কোনোদিন সেক্স করিনি। এমনকি সেরকম ঘনিষ্ঠ হই নাই। ইউ নেভার আস্কড মি টু ডু সো, তুমি আসলে কি চেয়েছিলে? পিয়েত্রা ব্যাকুল হয়ে জানতে চায়।
আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম।
ও প্রান্তে হঠাৎ পিনপতন নীরবতার পর ঘনঘন শ্বাস ফেলার শব্দ। উপল ফোন কেটে দেয়। বুথ থেকে বার হয়ে বিচের দিকে হাঁটা দেয়। বিচে পৌঁছে উপল কিছক্ষণ সানবেডে শুয়ে থাকে। ভূমধ্যসাগেরর বুক চিরে সূর্য উদিত হতে থাকে। উপল অবাক হয়ে লক্ষ্য করে, বরাবরের মতো সূর্যটা লাল নয়, কেমন যেন পাণ্ডুর, রঙহীন, আলো ঝলমলে সকালটা বিবর্ণ। উপল উঠে দাঁড়ায় আর ভাবে, এখানে আর না। উপল দ্রুত হাঁটতে থাকে...