মুনতাসির মামুনের গল্প ‘এক বৃষ্টির বিকেলে’
প্রকাশিত : মে ১২, ২০২৪
ওয়াহিদুল্লাহ ভবনের মেইন গেইটের কাছে আসতেই সামনে আসতে থাকা মানুষটাকে দেখেই একরকম ফ্রিজই হয়ে গেলাম আমি। মানুষটা ধীর পায়ে আমার দিকে এগিয়ে এসে মিষ্টি করে হেসে কী যেন বললেন। ওনার কোনো কথাই যেন আমার কানে ঢুকছিল না। শুধু ওনার ঠোঁটের কোণে পরা ভাঁজ আর অপূর্ব ভঙ্গিতে বাঁকানো ভুরু জোড়া দেখে বুঝতে পারছিলাম, উনি হাসছেন। উনি আমার চোখের সামনে হাত নেড়ে কিছু বললেন। এতক্ষণে ওনার উচ্চারিত শব্দগুলো যেন আমার মস্তিষ্কের রাডারে ধরা পড়লো। উনি বলছেন, কী খবর?
জি ম্যাম, ভালো।
`হ্যাঁ, মানে ভালো? আলতোভাবে ভুরু নাচালেন তিনি। চোখ জোড়ায় দুষ্টুমি খেলা করছে তার।
জি মানে... আচমকা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম আমি। কী বলবো, বুঝে উঠতে পারছিলাম না।
আর জি মানে করতে হবে না। এই ছুটির দিনে এখানে কী করছো, তাই বলো।
জি মানে, একজনের সাথে দেখা করতে এসছিলাম। কথা বলতে বলতে কপাল ঘেমে যাচ্ছিল আমার।
স্পেশাল কেউ? খোঁচা দেয়ার ভঙ্গিতে চোখ নাচালেন উনি।
কথাটা শুনে মুহূর্তের জন্য অভিমানের মেঘ নামলো চোখে আমার। উনি কি জানেন না, আমার কাছে স্পেশাল কেউ কে? নাকি জেনেও না জানার ভান করেন সবসময়। মেঘ গলে বৃষ্টি নামার আগেই বড় একটা শ্বাস নিয়ে নিজেকে সামলে নিলাম। বললাম, না মানে, তেমন কেউ না। এমনিই একজন।
আমার কিন্তু মনে হয়, আমি জানি তুমি কার জন্য অপেক্ষা করছিলে।
বুক ঢিপঢিপ করতে লাগলো আমার কথাটা শুনে। শ্বাস নিতেও ভয় পাচ্ছিলাম। উনি কী বুঝে ফেলেছেন যে, আমি ওনার জন্যই আজ ক্যাম্পাসে এসেছি! রিমি ম্যামকে আমি প্রথম দেখি আমার ফার্স্ট টাইমে ভর্তি হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের তিন বা চার নম্বর ক্লাসে। সেকেন্ড টাইমে মেডিকেল অ্যাডমিশনের জন্য প্রিপারেশন নেয়াতে ব্যস্ত থাকায় ডিপার্টমেন্টের খুব কম ক্লাসই অ্যাটেন্ড করেছি। ক্লাস না কারণ হিসেবে ভর্তির প্রিপারেশন নিয়ে ব্যস্ততা যতটা জোরালো ছিল, তারচে বেশি জোরালো ছিল ফ্রাস্ট্রেশন। ফ্রাস্ট্রেশন ছিল পরিবারের এক্সপেকটেশন পূরণ করতে না পারা নিয়ে। আশপাশের মানুষদের টিটকারি থেকে। বাসার মানুষদের শুনিয়ে যাওয়া চাচা-মামাদের, আগেই কইছিলাম, মাইয়া মানুষগো পড়াল্যাহার পিছনে অত খরচ কইরা কুনো ফায়দা নাই, এর থেইকা কিছু খরচ-মরচ কইরা বিয়া দিয়া দ্যাও... ঝামেলা যাক গা, ধরনের কথাবার্তা থেকে। ওইদিন এসব খোঁটা দেয়ার উত্তরে কোনো কথাই বলেনি আমার সবসময় উঁচু গলায় কথা বলা আমার আব্বু। পুরোটা সময় পাথরের মতোই নীরব ছিলেন।
ফ্রাস্ট্রেশন ছিল নিজের স্বপ্ন পূরণের ট্র্যাক থেকে পিছিয়ে পড়া নিয়ে। তবে ম্যামের প্রথম ক্লাসটাই আমাকে ক্লাস অ্যাটেন্ড করতে বাধ্য করলো। ক্লাসে ঢুকে যখন উনি ওনার কোর্স নিয়ে কথা বলছিলেন। আমি শুধু শুনছিলাম ওনার ভয়েজ আর খেয়াল করছিলাম ওনার এক্সপ্রেশন। কী মিষ্টি রিনরিনে গলা! পরনে আকাশি নীল রঙের শাড়ি আর কপালে কালো টিপ। কথা বলার সময় ওনার হাত নাড়া, ভুরু নাচানো, কপাল কোঁচকানো, ঠোঁটের কোণ আর গালে পরা ছোট্ট কিউট টোলটা, বাতাসে বারবার কপালের ওপর এসে পরা অবাধ্য চুলগুলো হাত দিয়ে সরিয়ে কানের পেছনে নেয়া... কিছুই যেন আমার চোখ এড়াচ্ছিল না। কথা বলতে বলতে হঠাৎ কী একটা বলে যেন হাসলেন উনি। ওনার হাসিটা দেখে জাস্ট পাথর হয়ে গেলাম। ঠোঁটের মাঝখানটা আলতো ফাঁক হয়ে ঠোঁটের দুকোণ হালকা ভেতরে ঢুকে গালের টোলগুলো মৃদু ফুলে চোখের তারা ঝিকমিকিয়ে উঠলো তার হাসিতে।
উফ্ আল্লাহ, একটা মানুষ এত্ত সুন্দর করে হাসে কীভাবে! ওইদিনই বুঝে গেছিলাম, এই ক্লাস আমাকে করতেই হবে। ক্লাস না করার পথ অনেকটাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আমার সেদিন থেকে। ক্লাসগুলো অ্যাটেন্ড করলেও উনি যা পড়াতেন,তারচেয়ে বেশি আমি খেয়াল করতাম ওনাকে। ক্লাস করতে ওনার কথা বলার ধরণ, কথা বলার সময়ের এক্সপ্রেশন, হাসি, মাথা ঝাঁকানো, হাঁটার লয়... একরকম মুখস্তই হয়ে গিয়েছিল আমার। ওনার সাথে একান্তে কথা বলার ইচ্ছেটাও খুব করে পেয়ে বসেছিল আমাকে। একদিন উনি ক্লাস নিয়ে বেরোনোর পর ওনার পিছু পিছু ওনার অফিস রুমের বাইরে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম বোকার মতো।
এই যে, কিছু বলবে? ভেতর থেকে বললেন ম্যাম।
জি মানে... কী বলবো, বুঝে উঠতে পারছিলাম না আমি।
ভিতরে আসো।
দুরু দুরু বুকে রুমে ঢুকলাম আমি।
বলো।
জি মানে... অ্যাটেন্ডেন্স মিস করেছিলাম। বোকার মতো বলে বসলাম আমি।
ক্লাসে বললে না কেন সেটা?
কিছু না বলে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকলাম আমি।
রোল বলো। রোল কলের খাতাটা খুললেন উনি।
ইস! এখন কী করি! রোল দেখলেই তো উনি বুঝে যাবেন, আমি রেসপন্স করেছি।
কী হলো, বলো! তাগাদা দিলেন ম্যাম।
যা থাকে কপালে, ভেবে বলে দিলাম রোল।
নাজিয়া জাহান? খাতায় চোখ বুলাচ্ছেন ম্যাম।
জি ম্যাম।
অ্যাটেন্ডেন্স দিয়েছি তো তোমারটা।
জি মানে, আস্তে রেসপন্স করেছি। ভাবলাম আপনি হয়তো শুনতে পাননি। হড়বড় করে বলে ফেললাম আমি।
খাতা থেকে চোখ তুলে আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলেন উনি।
ব্যাপার না, এমন হয়। অভয় দিলেন উনি আমাকে।
কিছু বললাম না আমি।
ক্লাসে যাও, নাহলে পরের ক্লাসে হয়তো সত্যি সত্যিই অ্যাটেন্ডেন্স মিস করে ফেলবে।
রুমের বাইরে এসে হাঁফ ছাড়লাম আমি। ভেবেছিলাম, অযথা ওনাকে বিরক্ত করায় কী রাগটাই না হবেন উনি। এরপর থেকে হঠাৎ হঠাৎ কথা হতো ওনার সাথে। বেশিরভাগই কুশল বিনিময় আর পড়াশোনা নিয়ে। আমার মেডিকেলে ভর্তির ইচ্ছের কথা উনি জানতেন। উৎসাহও দিতেন খুব। মেডিকেলে চান্স পাওয়ার আগেই উনি পড়াশোনার জন্য দেশের বাইরে চলে যাওয়ায় ভর্তির খবরটা ওনাকে দিতে পারিনি। ফেসবুকে অ্যাড হওয়ার রিকোয়েস্ট উনি এক্সেপ্ট করেন অনেক পরে। তবে ফ্রেন্ডলিস্টে ঢোকা সত্ত্বেও সাহস অভাবে ওনাকে নক দিতে পারিনি অনেকদিন। পরে একদিন সাহস করে নকটা দিয়েই ফেলি ছোট্ট একটা মেসেজ দিয়ে, ম্যাম, আমাকে কি চিনতে পেরেছেন?
রিপ্লাই আসে না তো আসেই না। মাঝে মাঝে ওয়েভ দিয়ে রাখতাম, যাতে মেসেজটা ওনার ইনবক্সে ওপরের দিকে শো করে। মেসেজের রিপ্লাই আসে অনেক পরে। সেদিন খেয়ালের বশেই আরেকবার ওনাকে ওয়েভ দিয়ে অন্যদের সাথে চ্যাটে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। তখনই রিপ্লাইটা আসে, Oops সরি, তোমার মেসেজটা এতদিন দেখা হয়নি।
তাড়াহুড়ো করে সেদিন যে কী কী টাইপ করেছিলাম, সেটা আর মনে নেই। এরপর থেকে ফেইসবুকে টুকটাক কথা হতো আমাদের নানা বিষয় নিয়ে। সেসময়টায় আমি প্রায়ই কবিতা লিখে টাইমলাইনে পোস্ট করতাম। উনি সেগুলোর দুএকটা পড়ে মাঝে মাঝেই প্রশংসা করতেন, বাহ, বেশ ভালো লেখোতো তুমি। ইন্সপায়ার করতেন। অন্যরাও এ ধরণের প্রশংসা করলেও ওনার ইন্সাপায়ারেশনের অন্যরকম মানে ছিল আমার কাছে। আগ্রহের আতিশায্যে মাঝে মাঝেই ইনবক্সে ওনাকে লেখা পড়তে দিতাম, ম্যাম, এটা ক্যামন হয়েছে? সেসময় মনেই থাকতো যে, উনি আমার শিক্ষিকা আর আমি ওনার এক সময়কার ছাত্রী। উনার দেশে ফেরার খবর পাবার পরপরই আমার এক্স ব্যাচমেটদের সাথে কন্টাক্ট করে ওনার ক্লাস করি আমি নিজের মেডিকেলের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে। ওনার সাথে সামনা সামনি দেখা হয় পহেলা বৈশাখের দিন। পহেলা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ জমজমাট অনুষ্ঠান হয়। শিক্ষকরাও প্রোগ্রাম অ্যাটেন্ড করেন নিজেদের ডিপার্টমেন্টের। ছাত্রদের করা আয়োজনের শামিল হন। ম্যামকে ছবি তোলার কথা বলতেই উনি রাজি হন। ওইদিনটা ছিল আমার ভার্সিটি লাইফের সেরা দিনগুলির একটা।
নিজের পরীক্ষা এগিয়ে আসায় ম্যামের পরের ক্লাসগুলো করতে পারিনি। তবে ক্লাস না করলেও ক্লাসে ম্যাম কী করেন-বলেন...তার খোঁজ রাখতাম ঠিকই। গতরাতে একটা পোস্টের কমেন্টের জবাবে দেখি, ম্যাম বলছেন, আজকে ডিপার্টমেন্টে আসবেন ওনার ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডা দিতে। সেই কথার সূত্র ধরেই আজকে আমার আসা।
কী, এত ভাবা হচ্ছে শুনি? ম্যামের কথায় নিজের ভেতর ফিরে এলাম। ইস, উনি দাঁড়িয়ে আছেন আর আমি কিনা ওনাকে সামনে রেখে এসব আকাশ-পাতাল ভাবছি! মাঝে মাঝেই এরকম ভাবনায় ডুবে যাই। তখন স্থান-কাল-পাত্রের খেয়াল একদমই থাকে না আমার।
বাইরে কী বৃষ্টি শুরু হয়েছে দেখেছো, আটকে গেলাম। মাথার চুল হাত দিয়ে ঠেলে পেছনে নিতে নিতে বললেন উনি।
করিডোরের গ্রিল দিয়ে বাইরে তাকালাম। যাব্বাবা, এত জোরে বৃষ্টি পড়ছে বাইরে, খেয়ালই করিনি। আর করলেও বৃষ্টির শব্দটা হয়তো তখন আমার ভাবনার ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড হিসেবে মাথার ভেতর বাজছিল।
তারপর, তোমার কী খবর বলো... ক্লাস ক্যামন চলছে? নাকি ছুটি? আমার দিকে কিছুটা ঘন হয়ে ঝুঁকে এলেন ম্যাম। ওনার কয়েক গোছা চুল কপাল থেকে ঝুলে আছে সামনের দিকে।
জি ম্যাম, পরীক্ষা চলছে... রিটেন শেষ, ভাইভার জন্য বসে আছি। একটু সরে আসলাম আমি।
বাড়ি যাওনি এর মধ্যে?
মাঝে একবার গেছিলাম,আবার চলে এসছি...।
ইস, রোজার মধ্যে বাড়ি ছেড়ে...
গাড়ির হর্ণের শব্দ শুনে চমকে উঠলাম।
উফ, আম্মু চলে এসেছে আবার... একটু বেশিই চিন্তা করে আমাকে নিয়ে বাসার সবাই। গাড়িটা লক্ষ্য করে বললেন ম্যাম।
চিন্তা করার মতোই কেউ আপনি। আমিই তো আপনাকে নিয়ে কত... মনে মনে বললাম আমি।
গাড়ি থেকে নামলেন বয়স্কা এক মহিলা। চেহারায় আভিজাত্যের ছাপ।
তুমি আবার আসতে গেলে কেন? কপট রাগের ভঙ্গিতে মাকে বললেন ম্যাম।
আমি না আসলে হয়, তোর কোনো ঠিক-ঠিকানা আছে নাকি, হয়তো বৃষ্টি দেখে ভিজতেই নেমে পড়বি।
বুঝলাম, ও আমার স্টুডেন্ট, নাজিয়া... মানে,আগে স্টুডেন্ট ছিল, এখন মেডিকেলে পড়ে। আমার পরিচয় দিলেন ম্যাম।
আমি সালাম দিলাম। উনি মৃদু হেসে সালামের প্রত্যুত্তর দিয়ে ম্যামের দিকে ফিরলেন।
চলো।
তুমিও চলো, তোমাকে নামিয়ে দেই। ম্যাম বললেন আমাকে।
না না, ঠিকাছে... আমি বৃষ্টি থামলে চলে যেতে পারবো। মুখে বললেও মনে মনে আমি ওনাদের সাথে যেতে চাইছি।
আরে, চলো তো... এই শহরের বৃষ্টির কোনো ঠিক-ঠিকানা আছে নাকি, যখন হয় না, তখন হয়ই না... আর যখন হয়, তখন এত সহজে থামে না। চলো।
আমাকে অটোস্ট্যান্ডে নামিয়ে দিলেই হবে। গাড়িতে উঠতে উঠতে বললাম আমি।
এই বৃষ্টিতে অটো পাবে!
পেয়ে যাব একটু দাঁড়ালেই... সমস্যা হবে না।
গাড়ির পেছনের সিটে বসেছিলাম আমরা তিনজন। আমার পাশে ম্যাম। ম্যামের গা থেকে হালকা ধরণের কোনো পারফিউম আর দামি কোনো পাউডার আর লোশনের মেশানো ঘ্রাণ পাচ্ছি আমি। গাড়ি চলার সময় মাঝে মাঝেই ওনার হাতের স্পর্শ লাগছে আমার হাতে। সিটগুলো বেশ বড়ই বলতে হবে, চারজনও বেশ আরামেই বসা যাবে।
তুমি কি হোস্টেলে থাকো না বাইরে? প্রশ্ন করলেন ম্যামের আম্মু।
জি হোস্টেলেই।
বেশ বেশ।
এরপর আরো কিছু প্রশ্ন করলেন উনি আমার পড়াশোনা নিয়ে।
হ্যাঁরে, তোর মামির সাথে একবার বেরোস কাল, গয়নার ডিজাইনগুলো একবার দেখতে হবে। ম্যামকে বললেন উনি।
উফফ্, এত তাড়াহুড়োর কী আছে!
তাড়াহুড়োর কী আছে মানে, আর মাত্র মাস দুয়েক বাদে তোর বিয়ে... এখনই গয়না গড়িয়ে না নিলে হবে কীভাবে!
কথাটা আমার মাথায় যেন বজ্রাঘাত করল। ওদের আর কোনো কথাই আমার কানে ঢুকছিল না।
কী, ম্যাডামের বিয়েতে আসবে তো?
ম্যামের মায়ের কথার উত্তর দিতে বেশ যুদ্ধ করতে হলো আমাকে নিজের সাথে। কোনোমতে ধরা গলায় বললাম, জি মানে, হ্যাঁ অবশ্যই।
এই মেয়েটা সবসময় নার্ভাস থাকে এরকম! আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন ম্যাম।
কাদা মাখা পিচ ঢালা রাস্তা দিয়ে হাঁটছি আমি। প্রচণ্ড বৃষ্টি। বৃষ্টি হচ্ছে বাইরে এবং হয়তো আমার ভেতরেও। শরীরের সাথে সাথে তাতে ভিজছে আমার ভেতরটাও। রাস্তায় একটা কুকুরও দেখা যাচ্ছে না। সবেমাত্র বিকেল পাঁচটা হলেও বৃষ্টির কারণে সন্ধ্যা-সন্ধ্যা পরিবেশ চারপাশের। কিছু মানুষ আশেপাশের দোকান বা যাত্রী ছাউনীর নিচে আশ্রয় নিয়েছে। আমাকে হাঁটতে দেখে তাদের অনেকেই মনে হচ্ছে বেশ অবাক হয়েছে। প্রবল বৃষ্টিতে তাড়াহুড়ো না করে এরকম নির্বিকারভাবে সম্ভবত কেউ হাঁটে না।