মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় নিতহ ১১

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২৪

মিয়ানমারের শান রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে দেশটির সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় বেসামরিক ১১ নাগরিক নিহত ও ১১ জনের বেশি আহত হয়েছে। জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠী তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে।

২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে মিয়ানমারের সেনা সরকারের সঙ্গে সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর লড়াই চলছে। অভিযোগ রয়েছে, মিয়ানমারের সেনারা রক্তক্ষয়ী প্রতিশোধ নিচ্ছে এবং বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে বিমান ও গোলা হামলা চালাচ্ছে।

টিএনএলএর কর্মকর্তা এলওয়ে ইয়েও বলেন, “স্থানীয় সময় শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সেনারা নামকাম শহরের দুটি এলাকায় বোমা হামলা চালায়। হামলায় ১১ জন নিহত এবং ১১ জন আহত হয়। নিহতদের মধ্যে রয়েছে পাঁচ পুরুষ, চার নারী ও দুটি শিশু। হামলায় স্থানীয় রাজনৈতিক দলের কার্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

চীনের ইউনান প্রদেশের সীমান্তসংলগ্ন এলাকা থেকে নামকামের দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। গত বছর কয়েক সপ্তাহের লড়াই শেষে টিএনএলএর যোদ্ধারা শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে একজনকে বের করে আনা হচ্ছে। তাকে দেখে আহত বলে মনে হচ্ছে।

একটি ভিডিওতে কয়েকটি বিধ্বস্ত ভবন দেখা গেছে। এএফপির সংবাদকর্মীরা ভিডিও দেখে জায়গাটিকে নামকাম হিসেবে শনাক্ত করেছে। এটি আগে অনলাইনে দেখা যায়নি বলেও উল্লেখ করেছেন তারা। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “স্থানীয় একটি হাসপাতালে আমি আহত ১৩ ব্যক্তিকে দেখেছি। আমি শুনেছি, সন্ধ্যায় তাদের শেষকৃত্য হবে।”

ওই বাসিন্দা আরও বলেন, “আরও বিমান হামলা হওয়ার আশঙ্কা জানিয়ে টিএনএলএ স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করেছে। নিরাপত্তার কারণে স্থানীয় মানুষদের কেউ যদি শহর ছেড়ে যেতে চায়, তবে তাদের সরে যেতে দেওয়া হবে।”

নিরাপত্তার কারণে স্থানীয় ওই বাসিন্দা তার নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে জান্তার মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি এএফপি।

গত বছর থেকে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে লড়াইয়ে চীন সীমান্তবর্তী উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের বেশ কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে সেনারা। সম্প্রতি জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং সশস্ত্র গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোর বেসামরিক নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছে, তারা যেন পাল্টা হামলার জন্য প্রস্তুত থাকে।

চলতি সপ্তাহে মিয়ানমার জান্তা টিএনএলএকে ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে। তারা বলেছে, টিএনএলএকে যারা সমর্থন করবে এবং যোগাযোগ রাখবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপর দুই সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মির (এমএনডিএএ) বিরুদ্ধেও একই কথা প্রযোজ্য হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, সংঘাতের কারণে ২৭ লাখের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। সূত্র: এএফপি