মির্জা আসাদুল্লাহ বেগ গালিবের আজ জন্মদিন

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪

মির্জা আসাদুল্লাহ বেগ গালিবের আজ জন্মদিন। ১৭৭৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর তিনি আগ্রায় জন্মগ্রহণ করেন। ভারতবর্ষে মোঘল-সম্রাজ্যের শেষ ও ব্রিটিশ শাসনের শুরুর দিকের একজন উর্দু এবং ফার্সি ভাষার কবি তিনি।

সাহিত্যে তার অনন্য অবদানের জন্য তাকে দাবির-উল-মালিক ও নাজিম-উদ-দৌলা উপাধি দেয়া হয়।  তার সময়কালে ভরতবর্ষে মোঘল সাম্রাজ্য তার ঔজ্জ্বল্য হারায় এবং শেষে ১৮৫৭ সালের সিপাহীবিদ্রোহ এর মধ্য দিয়ে ব্রিটিশরা পুরোপুরিভাবে মোঘলদের ক্ষমতাচ্যুত করে সিংহাসন দখল করে। তিনি তার লেখায় এ ঘটনা বর্ণনা করেছেন। মহাবিদ্রোহের সময়কার তার লেখা সেই দিনলিপির নাম দাস্তাম্বু। তিনি জীবনকালে বেশ কয়েকটি গজল রচনা করেছিলেন যা পরবর্তীতে বিভিন্ন জন বিভিন্ন আঙ্গিকে বিভিন্নভাবে বর্ণনা করেছেন ও গেয়েছেন।

তাকে মোঘল সম্রাজ্যের সর্বশেষ কবি হিসেবে ও দক্ষিণ এশিয়ায় তাকে উর্দু ভাষার সবচেয়ে প্রভাবশালী কবি বলে মনে করা হয়। আজ শুধু ভারত বা পাকিস্তানে নয়, সারা বিশ্বেই গালিবের জনপ্রিয়তা রয়েছে।

গালিব কখনো তার জীবিকার জন্য কাজ করেননি। সারা জীবনই তিনি হয় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অথবা ধারদেনা করে নয়তো কোনো বন্ধু উদারতায় জীবনযাপন করেন। তার খ্যাতি আসে মৃত্যুর পর। তিনি তার নিজের সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন, তিনি বেঁচে থাকতে তার গুণকে কেউ স্বীকৃতি না দিলেও, পরবর্তী প্রজন্ম তাকে স্বীকৃতি দেবে। ইতিহাস এর সত্যতা প্রমাণ করেছে।

গালিব ১৭৯৭ সালে আগ্রায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্বপুরুষরা আগ্রার আদি বাসিন্দা ছিলেন না৷ তাঁর দাদা কাকান বেগ খান সামরিক উচ্চাভিলাষী ব্যক্তি হিসেবে সমরকন্দ থেকে ভারতে আগমণ করার পর বিভিন্ন সময়ে পাঞ্জাবের গভর্ণর, মোগল সম্রাট শাহ আলম ও জয়পুরের মহারাজার অধীনে সামরিক দায়িত্ব পালন করেন৷ কাকান বেগের বিরাট পরিবারের মধ্যে তার দুই পুত্র আবদুল্লাহ বেগ খান ও নসরুল্লাহ বেগ খান তার পদাংক অনুসরণ করে সৈনিকের পেশা গ্রহণ করেছিলেন বিভিন্ন শাসকের অধীনে৷ অষ্টাদশ শতাব্দীর ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতে এই পেশা অত্যন্ত অনিশ্চিত ও বিপজ্জনক ছিল৷ গালিবের পিতা আবদুল্লাহ বেগ খানের মৃত্যুর সময় তার বয়স মাত্র চার বছর৷ ভাই এর পরিবারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন নসরুল্লাহ বেগ খান৷ ১৮০৬ সালে নসরুল্লাহ খান মারাঠাদের অধীনে আগ্রা দুর্গের অধিনায়ক হন এবং এক পর্যায়ে বৃটিশের কাছে দুর্গ সমর্পণ করলে তিনি বৃটিশ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পুরস্কৃত হন৷ চাচার মৃত্যুর সময়ে গালিবের বয়স নয় বছর৷

১৮৬৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি গালিব ইন্তেকাল করেন। দিল্লীর নিজামউদ্দিন আউলিয়ার মাজারের কাছে পারিবারিক গোরস্তানে তাকে দাফন করা হয়। বর্তমানে গালিবের সমাধিক্ষেত্রটি চরম অবহেলায় পর্যবসিত।