মাহমুদ দারবিশের কবিতা মূলত মাতৃভূমি রক্ষার হাতিয়ার
ছায়াবীথি শ্যামলিমাপ্রকাশিত : আগস্ট ০৯, ২০১৯
ফিলিস্তিনের জাতীয় কবি মাহমুদ দারবিশ। যার জন্ম হয় এক রক্তাক্ত সময়ে। যখন প্রিয় মাতৃভূমি টালমাটাল। মাহমুদ দারবিশ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪২ সালের ১৩ মার্চ, ফিলিস্তিনের এক অখ্যাত গ্রাম `আল-বোরোতে`। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলি সৈন্যদের ফিলিস্তিন দখলের সময়, এক ভয়াবহ রাতে আক্রান্ত হয় দারবিশের এই ছোট্ট গ্রামটিও। সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় দারবিশের পরিবার। ইসরায়েলি সৈন্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা প্রায় ছত্রিশ ঘণ্টা লুকিয়ে ছিলেন ক্ষেতের মাঝে। পরে শরণার্থী হয়ে আশ্রয় নেন লেবাননে।
এক বছর পর, সাত বছর বয়সে, দারবিশ লেবাননের সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেন ফিলিস্তিনে, তার হারানো জন্মভূমিতে। কিন্তু শিশু দারবিশ দেখলেন ইসরায়েলি গোলার আগুনে পুড়ে গেছে তার বাড়ি-গ্রাম্তফিলিস্তিনের মানচিত্র। দারবিশ লিখেছেন, ‘একরাতে আমার চাচা এবং একজন পথপ্রদর্শকের সাথে লেবাননের সীমান্ত দিয়ে আমি প্রবেশ করলাম ফিলিস্তিনে। সকালে উঠে দেখি, আমি একটি ইস্পাতের দেয়ালের মুখোমুখি। আমি ফিলিস্তিনে। কিন্তু কোথায় আমার ফিলিস্তিন? আমি কখনো আমার বাড়িতে ফিরে যেতে পারিনি। প্রচণ্ড কষ্ট নিয়ে আমি দেখতে পেলাম আমার গ্রাম বিধ্বস্ত-ভস্ম।’
ফিলিস্তিনের সন্তান মাহমুদ দারবিশ ফিলিস্তিনে প্রবেশ করেন অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হয়ে। ১৯৬৯ সালে ইসরায়েলি কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকা জো হাদারেকে এক সাক্ষাৎকারে দারবিশ বলেছেন, ‘সেই একটি রাত সবাইকে শরণার্থী বানিয়ে দেয়, লেবনানে আমি শরণার্থী ছিলাম। ফিলিস্তিনেও আমি শরণার্থী হয়ে আছি। এটা কোনো কাব্যিক দীর্ঘশ্বাস ছিল না। ইসরায়েলি রাষ্ট্রের প্রথম আদমশুমারিতে যে সব ফিলিস্তিনী অন্তর্ভুক্ত হয়নি, নতুন ইসরায়েলি সরকার তাদেরকে পরিচয়পত্র দেয়নি। তাদের চিহ্নিত করে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে। ফলে দারবিশের মতো অজস্র ফিলিস্তিনী নিজ জন্মভূমিতে হয়ে থাকে অবৈধ অভিবাসী।
শৈশব থেকেই মাহমুদ দারবিশ কবিতা চর্চা শুরু করেন। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ আসাফির বিলা আজ্নিহা (বার্ডস উইদাউট উইংস) প্রকাশিত হয় ১৯৬০ সালে। তার কবিতার বইয়ের সংখ্যা ২০। বলা হয়, বর্তমান আরববিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফিলিস্তিনি কবি তিনি। অনুবাদের কল্যাণে তিনি পাশ্চাত্যেও সুপরিচিত, ২০০২ সালের এপ্রিলে ফিলাডেলফিয়ায় ল্যান্যান ফাউন্ডেশন তাকে ‘প্রাইজ অব কালচারাল ফ্রিডম’ দান করে। এ প্রতিষ্ঠানটি গঠিত হয় ১৯৯৯ সালে, লক্ষ্য কল্পনার স্বাধীনতা, অনুসন্ধান এবং মতপ্রকাশের মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অসাধারণ ও সাহসী কাজের স্বীকৃতি দেয়া।
দারবিশের কবিতাসমগ্র ‘দিওয়ান’ প্রগাঢ় প্রেম দ্বারা আচ্ছাদিত। বস্তুত, এই প্রেমিই তার কবিতার মূলভাব। মূল নির্যাস। দেখা যায়, কখনো এটা নারীর প্রতি প্রেম, বাস্তব বা কল্পিত। তবে মূল অর্থে কিন্তু এই প্রেম জন্মভূমি ফিলিস্তিনের প্রতি দারবিশের প্রগাঢ় অনুরাগ। যদিও প্রায়ই তিনি এটাকে উপমায়িত করেন দয়িতা নারীর সাথে। দারবিশের কবিতার মধ্যে বাস করে ফিলিস্তিন, যা তার বেশির ভাগ কবিতাকে জীবন্ত করে তোলে; কিন্তু একই সাথে কবিতা তার স্বদেশও বটে, এর মধ্যেই তিনি বাস্তব ও স্মৃতির ফিলিস্তিনকে প্রাণবান করেন তার প্রত্যেক তাৎপর্যময় অনুপুঙ্খসমেত।
দারবিশ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪২ সালে বিরওয়ায়, সেটা উত্তর ফিলিস্তিনের অ্যাক্রির পুবে একটা ছোট্ট গ্রাম। ১৯৪৮ সালে ইসরাইল প্রতিষ্ঠিত হলে তার পরিবারকে তাদের গ্রাম থেকে বিতাড়িত করা হয়, তারা আশ্রয় নেন লেবাননে। আল-বিরওয়াকে আক্ষরিক অর্থেই মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়। এক বছর পরে তিনি জন্মভূমিতে ফিরে আসেন, থাকেন ইসরাইলের অধীনে অন্য একটি জায়গায়, সেখানেই বেড়ে ওঠেন। মাতৃভাষা আরবি ছাড়াও তিনি হিব্রু ভাষায়ও দক্ষ হয়ে ওঠেন। ১৯৬০ সালে হাইস্কুলের শিক্ষা শেষ করে তিনি হাইফাতে সাংবাদিকতা শুরু করেন। তার কবিতা, অন্যান্য লেখা এবং বামপন্থী রাজনৈতিক কর্মতৎপরতার কারণে তাকে অনেক ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের জেল এবং গৃহবন্দিত্ব ভোগ করতে হয়। শেষ পর্যন্ত ১৯৭১ সালে তিনি ইসরাইল ত্যাগ করেন, প্রবাস জীবন যাপন করেন কায়রো, বৈরুত ও তিউনিসে, তারপর প্যারিসে। তিনি ১৯৯৫ সালে আম্মানে এবং ১৯৯৬ সালে ফিলিস্তিনের কর্তিত অংশ পশ্চিম তীরে চলে যান। তিনি রামাল্লা থেকে আল-কারমিল পুনঃপ্রকাশ করেন, এই ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকাটি তিনি বৈরুত ও প্যারিস থেকে বের করতেন।
একজন শিশুর ভিটে হারানো এবং তারপর ইসরাইলের অধীন নিজভূমে আগন্তুকের মতো বেড়ে ওঠার আঘাত ও যন্ত্রণা তার জীবনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে, তার ব্যক্তিত্বের ওপর এর প্রভাব ছিল খুবই গভীর; তার সকল কবিতা এবং অন্যান্য লেখায় এই ক্ষত প্রতিফলিত হয়েছে। ইসরাইলে থাকতে তিনি স্বদেশি ফিলিস্তিনিদের ক্ষতি এবং ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের সকল অবিচারের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ লড়াই নিয়ে কবিতা লিখতেন। অবশ্য ইসরাইল ত্যাগ করার পর আরববিশ্বে বসবাস করার সময় তিনি আরব শাসকদের অগণতান্ত্রিক আচরণ এবং ফিলিস্তিনি স্বার্থের প্রশ্নে তাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে তার মোহমুক্তি ঘটে।
ফিলিস্তিনের বিশাল অংশ ১৯৪৮ সালে ইসরাইলে রূপান্তরিত হয়, সেটা এখনো সেভাবেই থেকে গেছে। অন্য অংশগুলোর ইতিহাস বেশ গোলমেলে। কিছু যুক্ত হয়েছিল পশ্চিম তীর নামে জর্ডানের সাথে, গাজা উপত্যকা শাসন করছিল মিসর। ১৯৬৭ সালে ইসরাইল সেগুলোও দখল করে নেয় এবং নতুন নতুন বসতি স্থাপন করতে থাকে। ১৯৯৩ সালে অসলো চুক্তির পর কিছু অংশ চেয়ারম্যান ইয়াসির আরাফাতের ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে অর্পিত হয় বটে, কিন্তু ইসরাইল বাস্তবে সেগুলোকেও আবার জবরদখলে নিয়ে বসতি স্থাপন করে। তিনি তার জনগণের জন্য যে স্বাধীন বাসভূমির আকাঙ্ক্ষা করেছিলেন, সব কিছুই তার থেকে অনেক দূরে চলে যায়।
আদর্শ বাসভূমির জন্য লড়াইয়ের যাত্রা দারবিশ তার কবিতায় প্রতিফলিত করতে থাকেন। দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও ফিলিস্তিন বিষয়ে নিষ্ক্রিয়তা এবং ফিলিস্তিনিদের ওপর আরোপিত দুর্ভোগ ও অবিচারের প্রতি বিশ্ববাসীর উদাসীনতার কারণে হতাশ ফিলিস্তিনি ও আরব জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার সোচ্চার কণ্ঠ হিসেবে তিনি জাতীয় প্রতীকের মর্যাদা অর্জন করেন।
১৯৮৪ সালে তিউনিসে প্রকাশিত হিসার লি মাদায়িন আল-বাহর (সমুদ্র নগরীর অবরোধ) কাব্যগ্রন্থের ‘রিহলাত আল-মুতানাব্বি ইলা মিসর’ (আল-মুতানাব্বির মিসর ভ্রমণ) শীর্ষক কবিতায় দারবিশ বলেন আমার মাতৃভূমি আমার সবচেয়ে নতুন কবিতাটি। কবি পরিপূর্ণরূপেই তার মাতৃভূমিকে তার কবিতার সাথে সমতুল্য করেছেন, তার নতুনতম কবিতাই তার স্বদেশভূমি, তার মধ্যেই তার বসবাস।
ঐতিহাসিকভাবে বলতে গেলে তার প্রকৃত স্বদেশভূমি অবশ্য ফিলিস্তিন; কিন্তু যতক্ষণ তিনি কবিতা লিখে চলেছেন ততক্ষণ তার স্বদেশ তার প্রতিটি নতুন কবিতার মধ্যে অস্তিত্ববান হয়ে উঠছে। এমনকি কেউ যদি তাকে বলে যে তার জন্মভূমি তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে তাহলে তিনি তার উত্তর দেন আরেকটি কবিতা লিখে, এভাবে তিনি তার স্বদেশকে পুনরায় অর্জন করেন সেইসব স্মৃতিকে আবাহনের মাধ্যমে যা ধ্বংস করে ফেলতে চায় তার শত্রুরা। আত্মপরিচয় ও জন্মভূমির সাথে সংশ্লিষ্ট এবং পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ভাষা, নৈতিকতা, আদর্শসহ সকল সাংস্কৃতিক-ঐতিহাসিক বাস্তবতাকে স্মৃতি সংরক্ষণ করে।
১৯৮৯ সালে লন্ডনে প্রকাশিত ‘মা’সাত আল-নারজিস ওয়া মালহাত আল-ফিদ্দা’ (দ্য ট্র্যাজেডি অব নার্সিসাস অ্যান্ড দ্য কমেডি অব সিলভার) নামক দীর্ঘ কবিতায় দারবিশ বলেন মাতৃভাষার মতো স্বদেশভূমিও মানুষ উত্তরাধিকার সূত্রে পায়।
তিনি এই ধারণার পুনরাবৃত্তি করেছেন আরো তিনটি কবিতায়। স্বদেশভূমি কেবল সেটা নয় যেখানে আপনি জন্মেছেন এবং বড় হয়েছেন, বরং এটা আপনার মধ্যে জন্ম নেয় যখন আপনি অস্তিত্ববান হয়ে ওঠেন। এটা আপনার মধ্যে বাস করে এবং এটা আপনার পূর্বপুরুষের কাছ থেকে পাওয়া সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের অংশ। এটা জন্মসূত্রেই আপনার অংশ : আপনি এর থেকে আলাদা হতে পারেন না, যখন আপনি নিজেকে প্রকাশ করেন, তখন আপনি এমনকি তার মধ্যে দিয়েই নিজেকে প্রকাশ করেন, বিশেষভাবে যখন আপনি সেটা করেন আপনার নিজ ভাষায়। আপনার স্বদেশভূমি, দারবিশ বলেন, আপনার মুখের ভাষার মতো উত্তাধিকার সূত্রে পাওয়া।
দেশপ্রেমের আগুন প্রজ্বলিত রাখার জন্য তার বাহ্যিক বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। স্বদেশ যখন বস্তুগতভাবে দূরে, তখন তার প্রতি ভালোবাসাকে জীবন্ত রাখার জন্য কবিকে স্মৃতির ওপর নির্ভর করতে হয়, যেমনটি ঘটেছে সব ফিলিস্তিনির ক্ষেত্রেই, যাদেরকে জোরপূর্বক বহিষ্কার করা হয়েছে। স্মৃতি ছাড়া মানবিক প্রেম শুকিয়ে মরে যায়; যে রকম পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে উত্তাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সংস্কৃতিকে আসন্ন ভবিষ্যৎ সন্তানদের মাঝে প্রবাহিত করে দিতে হয়। মাহমুদ দারবিশ এবং সকল ফিলিস্তিনি বোধগম্য কারণেই ফিলিস্তিনকে হারিয়ে ফেলার ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করেন, কারণ এটা গভীরভাবে অনুভূত তাদের জাতির এবং জীবনের ন্যায্য অধিকার হারানোর ক্ষতি যা তারা এই ক্ষতির আগে নিজেদের দেশে ভোগ করেছেন শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে। তারা মনে করেন, তাদের অন্তরে এবং স্মৃতিতে ফিলিস্তিনের টিকে থাকা উচিত। সে জন্য দারবিশের কবিতায়, ফিলিস্তিন-প্রেমকে অব্যাহতভাবে পুনঃপুন বৃদ্ধি করা হয়, এটা সম্পাদিত হয়েছে অতীতের স্মৃতি এবং স্বদেশের হ্রদ ও নদী, পাহাড় ও সমতলভূমি, সমুদ্র ও তার তীর, প্রাণী ও উদ্ভিদ, জলপাই ও কমলালেবু, গাছপালা ও পাখি, লোকসমাজ ও লোকসাহিত্য এবং তার সকল বস্তুগত জিনিসের বারবার স্মরণের মাধ্যমে।
দারবিশ তার এসব স্মৃতিকে মজবুত করেন তার জানা-চেনা সাধারণ ফিলিস্তিনিদের কাহিনী স্মরণ করে, যারা স্বদেশকে ভালোবাসে এবং তার জন্য দুর্ভোগ সয় ও প্রাণ দেয়, অথবা সেইসব ফিলিস্তিনি লড়াকুর কথা স্মরণ করেন, যারা স্বদেশের সেবায় তাদের ভাগ্যকে বরণ করে নেন। সে কারণে নির্বাসনে থাকার চেয়ে জাফায় ফেরার সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ফিলিস্তিনি লোকটি মারা যায়। যে ফিলিস্তিনি যোদ্ধা লড়াইয়ের ময়দান থেকে বিয়ে করতে আসছে সে শত্রুর বিমান হামলায় শহীদ হয়। প্যারিসে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধি ইজ্জ আল-দীন ক্কালাক্ক আততায়ীর হাতে নিহত হন, সে রকমই রোমে নিহত হন মজিদ আবু শারার।
দারবিশ এ রকম আরো কিছু বাস্তব ঘটনার কথা উল্লেখ করেন তার কবিতায়; তারা সবাই ফিলিস্তিনের প্রতি এই মহান ভালোবাসা ও তাকে ফিরে পাওয়ার বিশাল আশার উদাহরণ সূত্র। তার কবিতায় ফিলিস্তিন-প্রেমকে নতুনভাবে উচ্চকিত করা হয়েছে ওইসব ফিলিস্তিনির স্মৃতির মাধ্যমে, যারা কোনো অপরাধ না করেও বিশেষ বিশেষ ধ্বংসযজ্ঞে নিহত হয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ১৯৫৬ সালে ইসরাইলে কাফির ক্কাসিমে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর গণহত্যা, বা ১৯৭৬ সালে লেবাননের তাল আল-জাত্বার শরণার্থী শিবিরে ফ্যালাঞ্জিস্টদের হত্যাযজ্ঞের কথা। দারবিশের ক্ষেত্রে স্মৃতি এবং স্বদেশ অবিচ্ছেদ্য যমজস্বরূপ, আর এটাই একটা কারণ যে তার কবিতা তার স্বদেশ হয়ে ওঠে।