মাঝরাতে ঢাবিতে হাসিনার গ্রাফিতি মোছার চেষ্টা, শিক্ষার্থীদের বাধা
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে শেখ হাসিনার ব্যঙ্গ গ্রাফিতি মধ্যরাতে মুছে ফেলার চেষ্টা করে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। বিষয়টি জানতে পেরে শিক্ষার্থীরা এসে বাধা দেয়।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থীরা। তারা জানায়, রাত ২টার দিকে সিটি করপোরেশনের লোকজন শেখ হাসিনার ব্যঙ্গ গ্রাফিতি মুছতে যায়। এ সময় তারা গ্রাফিতির মুখের অংশ মুছে ফেলে।
পরে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে সেটি পুরোপুরি মুছে ফেলা সম্ভব হয়নি। এরপর শিক্ষার্থীরা পুনরায় সেখানে শেখ হাসিনার গ্রাফিতি এঁকে দেয়।
ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি শাখার ফেসবুক পেজে জানানো হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের স্বৈরাচারী নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ নামক এই গ্রাফিতিতে পুনরায় শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
গ্রাফিতি আঁকার কাজটি করেন ছাত্র ইউনিয়নের চারুকলা অনুষদ শাখার সদস্য মৃধা রাইয়ান ও ঋষি। তাদের সঙ্গে ছিলেন রাইয়ান ফেরদৌস ও সর্দার নাদিম মাহমুদ শুভ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশন থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সাইয়েদ আবদুল্লাহ লিখেছেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে মেট্রোরেলের পিলার থেকে এই গ্রাফিতিটা গতকাল গভীররাতে মুছে ফেলা হচ্ছিল।”
তিনি আরও লেখেন, “খবর পেয়ে সাথে সাথে গভীর রাতেই অনলাইনে সরব হই আমরা কয়েকজন। ওইটা মোছা হয়ে যাওয়ায় পরবর্তীতে কয়েকজন হাসিনার অন্য একটা ক্যারিকেচার আঁকে। কিন্তু কথাটা হলো, ভিন্নটা কেন করা হবে, আগেরটাই লাগবে, হুবহু আগেরটাই এবং ওইটার ওপরও কালি মেখে, রক্তের মতো লাল রঙ দিয়ে ডা–ই–নি টাইপ ভাইভই রাখতে হবে, আর ওইটাতে যেভাবে জুতার মালা দেওয়া ছিল, ওই একইভাবে রাখতে হবে। মানে হুবহু রেস্টোর করতে হবে।”
সাইয়েদ আবদুল্লাহ লেখেন, “ওইটার ভেতর যে মেসেজ ছিল, নতুনটার ভেতর সেটা নাই। গণঅভ্যুত্থানে দেশের জনগণ হাসিনাকে যেভাবে প্রত্যাখ্যান করে উৎখাত করেছিল, সেটার অটো রিপ্রেজেনটেশন ছিলো ওইটাতে। আর হুটহাট করে যারা এইটা মোছার প্ল্যান করেছিল বা যাদের মাথা দিয়ে এই প্ল্যান বের হয়েছিল, তাদের প্রত্যেককে আইডেন্টিফাই করে কঠোর জবাবদিহিতার ভেতর নিয়ে আসা উচিত।”
তিনি আরও লেখেন “এই নির্দেশ এসেছিল কোন সংস্থা থেকে? এবং ক্যাম্পাসের ভেতর বড় টেকনিক্যাল ভেহিকেল নিয়ে এসে এই কাজ করা হয়েছে, তারমানে হলো এইটার পার্মিশনের সাথে ভিসি বা প্রক্টরের এফিলিয়েশন থাকবার কথা। অর্থাৎ কোনো এজেন্সি থেকে যদি বলা হয় এবং প্রক্টর বা ভিসি যারা এইটা প্রতিরোধ করে নাই, তাদের প্রত্যেককে কঠোর জবাবদিহিতার ভেতর নিয়ে আসতে হবে। স্বৈরাচারী হাসিনাকে প্রত্যাখ্যান করার চিহ্নগুলো মুছে দিয়ে এরা কী করতে চায়, সেটা বুঝবার দরকার আছে।”
সাইয়েদ আবদুল্লাহ লেখেন, “এবং একইসাথে বিভিন্ন জায়গায় ওই জুতারমালা গলায় দেওয়া প্রত্যাখ্যাত হাসিনার ডা-ই-নি রূপ ফুটিয়ে তোলার দরকার। যতবার মুছতে চাইবে, ততবার আরওবেশি করে সবজায়গায় ফুটিয়ে তুলতে হবে।
তিনি আরও লেখেন, “বিভিন্ন জায়গা থেকে এরা প্রথমে গ্রাফিতি মুছতে চাইবে, তারপর দেশের মানুষের মন থেকেই ওই হয়েনাদের অপকর্মের ফিরিস্তি মুছে দিতে চাইবে। কিন্তু আমরা তা হতে দিবো না। দেশের জনগণের উচিৎ সেটা কোন অবস্থাতেই না হতে দেওয়া!”