মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়ের তিনটি সনেট
প্রকাশিত : নভেম্বর ১৯, ২০২৪
তুমি অনির্বাণ
কারো রক্ত গাঢ়, কারো গাঢ়তর, কারো
সুগাঢ়, প্রগাঢ়, তরলতাহীন লতা
রক্তের চেয়েও দামি, রক্তের গাঢ়তা
রক্ত, স্বেদ, করুণা ও লাল কণিকারও
অধিক সবুজ, ক্লোরোফিল তোলে ধ্বজা
তেমন যেজন, তাকে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম।
করুণার সিন্ধু নয়, রাখি তার নাম
ভূমধ্যসাগর। বলি, শোনো, তুমিও যা,
ঈশ্বর, আল্লাহ, যীশু, জিহোবার সার।
সূর্য চন্দ্র তারা আছে, রয়েছে আকাশ,
রামধনু, নায়াগারা, উত্তরমেরুর
অরোরা বা নীলনদ, কর্ণাটকী সুর,-
ক্ষণস্থায়ী, তুমি যে চিরাগ বারোমাস!
কোনো কোনো বহ্নিশিখা বিধাতা নিভান
প্রয়োজন সিদ্ধ হলে; তুমি অনির্বাণ!
থার্ড ইনিংস
কুড়ি কুড়ি পঞ্চাশ পঞ্চাশ খেলা শেষে
সাবেক সে টেস্টম্যাচ শাদা পোশাকের
পাঁচ কিম্বা ছ’দিনের, রক্তে পাই টের।
ব্র্যাডম্যান মনসুর আলী বেনো খেলে হেসে
মনে পড়ে। ক্রিকেটের জাদু টেস্টে। আর
সব এলেবেলে, নিরিমিশ, ছেলেখেলা,
বাইশ গজের গণ্ডি কেবল একেলা
খেলা হতো যদি, হয়ে ছড়ানো সংসার!
একটি ইনিংস, তার সব ভুলভাল
শোধরাও দ্বিতীয়ে, বা আরও অধঃপাত
কখনো উল্কা, কভু শামুকের গতি,
ডাবল সেঞ্চুরি একয়ে, দুইয়ে বেসামাল!
এক নয়, দুই নয়, চাই থার্ড ইনিংস,
সপ্তাহ লাগুক তাতে, এই সুপারিশ।
ডুপ্লিকেট
এ জীবনে আসল যা ছিল, দেখা সারা
এখন সর্বত্র দেখি ডুপ্লিকেট। ডিম
পোলট্রিক! রসগোল্লা ময়দার। হিম
চোখে দেখে বন্ধু, উষ্ণতা কাহারা
নিয়ে গেছে। মৌমাছির নকল গুঞ্জন,
খাটাসের গন্ধ, সব ডুপ্লিকেট। নেই
প্রকৃত সুবাস। ফুল আছে? শুধাই যাকেই,
বলে, আছে। প্লাস্টিকের। নাকের কুঞ্চন
নববধূ থেকে ইলিশের, সবটাই
ডুপ্লিকেট পাবে তুমি। এমনকি প্রেম
চিনের নকল আণ্ডা!যদি শুনতেম
কখনো এমন প্রেমে নিজেকে ডুবাই?
অকশনঅলা হাঁকে: `লাস্ট ডুপ্লিকেট
শ্বাসবায়ু, মাতৃস্নেহ, ডু নট বি লেট!`