ভারতের কোনও জনবিস্ফোরণ সমস্যা নেই
গর্গ চ্যাটার্জীপ্রকাশিত : জানুয়ারি ১৯, ২০১৮
ভারতের কোনও জনবিস্ফোরণ সমস্যা নেই। এর পরে যদি আপনাকে কেউ ভারতের সমস্যা নিয়ে কিছু বলে, তাকে বলবেন, ভাই, একটু রাজ্যভিত্তিকভাবে ভেঙে বলুন।
পশ্চিমবঙ্গের মোট উর্বরতা হার (টোটাল ফারটিলিটি রেট অর্থাৎ মোটামুটি নারী প্রতি সন্তান) হলো ১.৬৪। নেদারল্যান্ড, ক্যানাডা ও ডেনমার্কের মতো। তামিল নাড়ু, পাঞ্জাব ও কেরল পশ্চিমবঙ্গের মতোই- ১.৭। কর্ণাটক, অন্ধ্র প্রদেশ, তেলাঙ্গানা, মহারাষ্ট্র- এ সবকটি ১.৮ এর কাছাকাছি। অর্থাৎ বেলজিয়াম, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ডের সমতুল্য। এ সবকিছুই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের থেকে কম।
২.১ যদি মোট উর্বরতা হার হয়, সেটাকে বলে রিপ্লেসমেন্ট রেট। অর্থাৎ যে হারে যতজন মারা যান, ততজন জন্মান। অর্থাৎ জনসংখ্যা বাড়ে না, কমে না। তাহলে এই সকল রাজ্যের জনসংখ্যা বাড়ে কেন? জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের সুফল্গুলি এই সকল রাজ্য ভোগ করতে পারে না কেন? কারণ বাইরে থেকে পিলপিল করে লোক আসে। কোথা থেকে আসে?
ভারতীয় উন্নয়নের মোট উর্বরতা হার ২.৩৪। ২.৩৪ এরচেয়ে বেশি উর্বরতার হার বড় রাজ্যগুলির মধ্যে ৬টিতে। ভারতীয় ইউনিয়নের তথাকথিত জনবিস্ফোরণ সমস্যা এই ৬ রাজ্যের সমস্যা। এই ৬ রাজ্য হলো- বিহার, উত্তর প্রদেশ, ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, মধ্য প্রদেশ ও রাজস্থান। সব কটি হিন্দিভাষী রাজ্য। আপাতত সবকটি বিজেপি শাসিত।
ফলে ভারতের সমস্যার কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করা বন্ধ হোক। ভারতের সমস্যা হিসেবে কিছুকে দাগিয়ে দেবার মানে হলো, অহিন্দি রাজ্যের রাজস্ব ও করের টাকা দিয়ে হিন্দি রাজ্যে টাকা ঢালার ফিকির বানানো। যখনই হিন্দি বলয়ের কোনও সমস্যা হয়, সেটা ‘ভারতের সমস্যা’ বানিয়ে ফেলা হয় এই কারণেই। হিন্দিরা তাদের সমস্যা সমাধান করুক। আমরা অহিন্দিরা নিজেদের সমস্যার সমাধান করব। অহিন্দি রাজ্যেগুলির, আমাদের আসলেই একটা সমস্যা আছে, যেটার সমাধান দরকার। সেটা হলো, হিন্দি রাজ্যগুলির সমস্যা থেকে আমরা কিভাবে নিজেদের আত্মরক্ষা করব, তার উপায় বার করা।
জয় বাংলা।