‘বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক নববর্ষের অঙ্গীকার’

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : এপ্রিল ১৪, ২০২৫

বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই এই নববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার হোক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “প্রিয় দেশবাসী, সবাইকে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২- এর শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, শুভ নববর্ষ। পহেলা বৈশাখ আমাদের প্রাণের উৎসব। বাঙালির সর্বজনীন উৎসব। পুরো পৃথিবীতে যেখানে যেখানে বাঙালিরা আছেন, আজ আমাদের সবার আনন্দের দিন, বর্ষবরণের দিন।”

তিনি আরও বলেন, “ফসলি সন হিসেবে কৃষিকাজের সুবিধার জন্য বাংলা সাল গণনা শুরু হয়েছিল। এখনো এ দেশের কৃষক বাংলা তারিখের হিসাবে বীজ বোনেন, ফসল তোলেন। বাংলা নববর্ষের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হালখাতা। এখনকার আধুনিক সময়েও এখনো হালখাতার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে বাংলাদেশের হাট বাজারে, শহরে-বন্দরে।”

ড. ইউনূস বলেন, “নববর্ষের বৈশাখি মেলায় বাংলাদেশের জেলায় জেলায় উদ্যোক্তারা নিজেদের সৃজনশীলতা তুলে ধরেন। এ দিনকে উপলক্ষ্য করে সারাদেশে ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটি, মাটির হাঁড়ি-পাতিল, খেলনা, হাতপাখা ইত্যাদি তৈরি করেন তারা। বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় এবং একে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের এইসব ঐতিহ্য যেন আমাদের নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। আমাদের সংস্কৃতি যেন বিশ্বের দরবারে আমরা ছড়িয়ে দিতে পারি। আমাদের স্বর্গীয় ঐতিহ্য নতুনভাবে নতুন প্রজন্মের কাছে উৎসবমুখর পরিবেশে তুলে ধরতে এবং পৃথিবীর সামনে তুলে ধরতে বছরের এ দিনটিতে আমরা সুযোগ পাই।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীও চৈত্র সংক্রান্তি ও নববর্ষ এবার বড় পরিসরে উদযাপন করছে। পহেলা বৈশাখ সম্প্রীতির দিন, মহামিলনের দিন। আজ সবাইকে আপন করে নেওয়ার দিন। এবারের নববর্ষ নতুন বাংলাদেশের প্রথম নববর্ষ। আসুন আমরা বিগত বছরগুলোর গ্লানি, দুঃখ বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে চলি।”

ড. ইউনূস বলেন, “চলুন নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান আমাদের সামনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে। এ সুযোগ যেন আমরা না হারাই। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এ বছরের নববর্ষের আমাদের অঙ্গীকার।”

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “নববর্ষ ১৪৩২ আমাদের সবার জন্য শুভদিনের সূচনা করুক। নববর্ষ আমাদের সবার জন্য নতুন ও গভীর আনন্দের উন্মোচন করুক, এই কামনা করছি। সবাইকে আবারও নববর্ষের শুভেচ্ছা ও সালাম জানাচ্ছি। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।”