বিশ্বের কোন অঞ্চলে কত ঘণ্টা রোজা
রিফাত বিন সালামপ্রকাশিত : মার্চ ২৬, ২০২৩
বরকত ও সংযমের মাস রমজান। ১৪০০ বছর আগে এ মাসেই পবিত্র গ্রন্থ কুরআনের প্রথম আয়াতগুলো নবি মুহাম্মদের (সা.) ওপর অবতীর্ণ হয়েছিল। প্রাচীন আরবে এ মাসকে শান্তি বা যুদ্ধবিরতির মাসও বলা হয়। ফলে আত্মশুদ্ধি, নৈতিক প্রশিক্ষণ ও আত্মগঠনের লক্ষ্যে এ মাসে রোজা পালন করেন বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান।
সুবহে সাদেক বা ভোরের সূক্ষ্ম আলো থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার, পাপাচার, কামাচার এবং সেই সাথে যাবতীয় ভোগ-বিলাস থেকে বিরত থাকার নামই রোযা। সূর্যাস্তের পর ইফতার গ্রহণের মাধ্যমে মুসলমানরা রোজার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। যা প্রায় একমাস ধরে চলে। তবে অঞ্চল ভেদে বদলে যায় রোজার সময়।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের মধ্যেকার সময়ের তারতম্যের কারণেই এমনটি হয়। চিলি বা নিউজিল্যান্ডের মতো বিশ্বের দক্ষিণের দেশগুলোতে বসবাসকারী মুসলমানরা গড়ে ১২ ঘণ্টা রোজা পালন করেন। অন্যদিকে আইসল্যান্ড বা গ্রিনল্যান্ডের মতো উত্তরের দেশগুলোতে বসবাসকারীরা ১৭ ঘণ্টার বেশি সময় রোজা রাখেন।
২০২৩ সালে বিশ্বের কোন অঞ্চলে কত ঘণ্টা রোজা:
- আমস্টারডাম, নেদারল্যান্ডস: ১৬ ঘণ্টা
- ওয়ারশ, পোল্যান্ড: ১৬ ঘণ্টা
- লন্ডন, যুক্তরাজ্য: ১৬ ঘণ্টা
- আস্তানা, কাজাখস্তান: ১৬ ঘণ্টা
- ব্রাসেলস, বেলজিয়াম: ১৬ ঘণ্টা
- প্যারিস, ফ্রান্স: ১৫ ঘণ্টা
- জুরিখ, সুইজারল্যান্ড: ১৫ ঘণ্টা
- বুখারেস্ট, রোমানিয়া: ১৫ ঘণ্টা
- অটোয়া, কানাডা: ১৫ ঘণ্টা
- সোফিয়া, বুলগেরিয়া: ১৫ ঘণ্টা
- রোম, ইতালি: ১৫ ঘণ্টা
- মাদ্রিদ, স্পেন: ১৫ ঘণ্টা
- লিসবন, পর্তুগাল: ১৪ ঘণ্টা
- এথেন্স, গ্রীস: ১৪ ঘণ্টা
- বেইজিং, চীন: ১৪ ঘণ্টা
- ওয়াশিংটন, ডিসি, ইউএস: ১৪ ঘণ্টা
- পিয়ংইয়ং, উত্তর কোরিয়া: ১৪ ঘণ্টা
- আঙ্কারা, তুরস্ক: ১৪ ঘণ্টা
- রাবাত, মরক্কো: ১৪ ঘণ্টা
- টোকিও, জাপান: ১৪ ঘণ্টা
- ইসলামাবাদ, পাকিস্তান: ১৪ ঘণ্টা
- কাবুল, আফগানিস্তান: ১৪ ঘণ্টা
- তেহরান, ইরান: ১৪ ঘণ্টা
- বাগদাদ, ইরাক: ১৪ ঘণ্টা
- বৈরুত, লেবানন: ১৪ ঘণ্টা
- দামেস্ক, সিরিয়া: ১৪ ঘণ্টা
- কায়রো, মিশর: ১৪ ঘণ্টা
- জেরুজালেম: ১৪ ঘণ্টা
- কুয়েত সিটি, কুয়েত: ১৪ ঘণ্টা
- গাজা সিটি, প্যালেস্টাইন: ১৪ ঘণ্টা
- নতুন দিল্লি, ভারত: ১৪ ঘণ্টা
- হংকং: ১৪ ঘণ্টা
- ঢাকা, বাংলাদেশ: ১৪ ঘণ্টা
- মাস্কাট, ওমান: ১৪ ঘণ্টা
- রিয়াদ, সৌদি আরব: ১৪ ঘণ্টা
- দোহা, কাতার: ১৪ ঘণ্টা
- দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত: ১৪ ঘণ্টা
- এডেন, ইয়েমেন: ১৪ ঘণ্টা
- আদ্দিস আবাবা, ইথিওপিয়া: ১৩ ঘণ্টা
- ডাকার, সেনেগাল: ১৩ ঘণ্টা
- আবুজা, নাইজেরিয়া: ১৩ ঘণ্টা
- কলম্বো, শ্রীলঙ্কা: ১৩ ঘণ্টা
- ব্যাংকক, থাইল্যান্ড: ১৩ ঘণ্টা
- খার্তুম, সুদান: ১৩ ঘণ্টা
- কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া: ১৩ ঘণ্টা
- সিঙ্গাপুর: ১৩ ঘণ্টা
- নাইরোবি, কেনিয়া: ১৩ ঘণ্টা
- লুয়ান্ডা, অ্যাঙ্গোলা: ১৩ ঘণ্টা
- জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়া: ১৩ ঘণ্টা
- ব্রাসিলিয়া, ব্রাজিল: ১৩ ঘণ্টা
- হারারে, জিম্বাবুয়ে: ১৩ ঘণ্টা
- জোহানেসবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৩ ঘণ্টা
যেসব অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি সময় রোজা রাখতে হয়:
-নুউক, গ্রিনল্যান্ড: ১৭ ঘণ্টা
-রেকজাভিক, আইসল্যান্ড: ১৭ ঘণ্টা
- হেলসিঙ্কি, ফিনল্যান্ড: ১৭ ঘণ্টা
- স্টকহোম, সুইডেন: ১৭ ঘণ্টা
- গ্লাসগো, স্কটল্যান্ড: ১৭ ঘণ্টা
যেসব অঞ্চলে সবচেয়ে কম সময় রোজা রাখতে হয়:
- বুয়েনস আইরেস, আর্জেন্টিনা: ১২ ঘণ্টা
- সিউদাদ দেল এস্টে, প্যারাগুয়ে: ১২ ঘণ্টা
- কেপ টাউন, দক্ষিণ আফ্রিকা: ১২ ঘণ্টা
- মন্টেভিডিও, উরুগুয়ে: ১২ ঘণ্টা
- ক্যানবেরা, অস্ট্রেলিয়া: ১২ ঘণ্টা
- পুয়ের্তো মন্ট, চিলি: ১২ ঘণ্টা
- ক্রাইস্টচার্চ, নিউজিল্যান্ড: ১২ ঘণ্টা
ইসলামে মেরু অঞ্চলসমূহে রোজা রাখা সম্পর্কে সরাসরি কিছুই বলা হয়নি। তবে ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে চরম উত্তরাঞ্চলীয় শহরগুলোর ক্ষেত্রে রয়েছে ভিন্ন নিয়ম। এ নিয়ম শুধুমাত্র সেসব অঞ্চলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যেমন: নরওয়ের লংইয়ারবাইন, যেখানে ২০ এপ্রিল থেকে ২২ আগস্ট পর্যন্ত সূর্য অস্ত যায় না। এ সময়ে এসব অঞ্চলে প্রায় ২৪ ঘণ্টা সূর্যের আলো থাকে। ফলে এসব অঞ্চলে মক্কা, সৌদি আরব বা নিকটতম মুসলিম দেশের সময় অনুসরণে রোজা রাখা হয়।