বাঁশ তুমি ঝাড়ে ক্যা, গুয়ায় আইসা লাগো

আবু তাহের সরফরাজ

প্রকাশিত : জানুয়ারি ২৯, ২০১৮

এক.
জগতের বয়েস কত? বিশ্বাসীদের দর্শন আর অবিশ্বাসীদের দর্শন নিয়া জগতে শুরু থেকেই সংঘর্ষ চলতেছে। মরতেছে মানুষ। হইতেছে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ। বইটই লেখা হইতেছে। ধরেন, বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দ্বন্দ্বে পইড়া জগতের সব মানুষ ফিনিস হয়া গেল, তখন?
মোহতারাম বুজর্গ, জগতে এসব করতে আসে নাই মানুষ। জগতে মানুষ আসছে প্রেম পেতে, আর প্রেম দিতে। প্রেমেই জগৎ সৃষ্টি। প্রাণের আদি বীজ নিউট্রন-প্রোটন। এ দুই কোষের প্রেমেই তো জগৎ। আহা প্রেম রে... প্রেমেই সৃষ্টি জগৎ সংসার/প্রেমেই বাঁচা-মরা/প্রেম কইরো না দেহের সনে/আত্মার সনে ছাড়া।
দেহ, মানে অস্তিত্বে বিশ্বাসী হলে কী আর প্রেম হয়রে পাগলা, আত্মা, মানে নিরাকারও থাকতে হয়। মুক্তচিন্তা একেই বলে। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দর্শন নিয়া মানুষের সর্বজনীন দর্শনভাবনাই মুক্তচিন্তা। এর একটু এদিক-ওদিক হলে তা পক্ষপাতমূলক চিন্তা।
অতএব, কথায় কথায় আমরা এখন থেকে আর মুক্তচিন্তার কথা না বলি। অবিশ্বাস মানেই মুক্তচিন্তা নয়। আবার বিশ্বাস মানেও মুক্তচিন্তা নয়।

দুই.
সারা বিশ্বে একের পর এক সন্ত্রাসী যেসব হামলা হচ্ছে। এর কারণ ও সমাধানের পথে হাঁটলে মাকড়শার জালের মতো সূক্ষ্মাতিসুক্ষ্মতার ভেতর দিয়া আপনাকে যেতে হবে। কোনো থই পাবেন না। ভয়াবহ জটিল হয়া উঠবে আপনার মস্তিষ্ক। এই হচ্ছে পৃথিবীর পরিণতি। এর কথাই কোরআনসহ অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ কইছে। মহাজ্ঞানীরাও এরকমই কহিয়াছেন।
তো, এখন জরুরি বৈশ্বিক একজন মহান সংস্কারকের। কিন্তু তা কি সম্ভব? কোরআন তো মোহাম্মদকে (স.) শেষ নবি কয়া দিছে। ব্যাসদেব, বুদ্ধ নিদেনপক্ষে একজন নানক হলেও তো পৃথিবীবাসীর চলতো।
হইছে কি, মানুষ এখন নিজের তৈরি সভ্যতার জৌলুসে আত্মতৃপ্ত। চারদিকে ছড়াচ্ছে মূর্খামি। হুমসিখেলি ঘটনা ঘটাচ্ছে যে যার মতো। মানুষের চিন্তার জগৎকে আবারো সুসংগঠিত করা জরুরি। আমি নিশ্চিত, পৃথিবী নামের এই গ্রহ প্রাকৃতিক নিয়মের আগেই মানুষ ধ্বংস করে ফেলবে মানুষ। এর মানে, বাঁশ তুমি ঝাড়ে ক্যা গুয়ায় আইসা লাগো।

তিন.
খ্যাতি একটি বোমা। হাজার হাজার প্রাণ বিধ্বংসী পারমাণবিক বোমার চেয়েও খ্যাতি নামের বোমাটি কয়েক গুণ বেশি বিধ্বংসী। কেননা এ বোমা যখন কোনো ব্যক্তিকে ঘিরে বিস্ফোরিত হয় তখন ওই ব্যক্তির সহজাত মানুষটি মারা যায়। যে বেঁচে থাকে, সে ওই মানুষটির কঙ্কাল।

চার.
বইমেলায় ৯০ ভাগ বই লেখকের টাকায় বের হয়। এদলে সচিব, আমলা থেকে শুরু করে পিঁয়াজ-রসুনের ব্যবসায়ীও আছেন। পাঁচভাগ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও আনিসুল হকদের মতো লেখকদের দখলে। বাকি পাঁচভাগ মিডিয়াপুষ্ট লেখক। যাদের সাথে প্রকাশকদের সুবিধে আদান-প্রদানের অলিখিত চুক্তি আছে।

 

লেখক: কবি ও কথাসাহিত্যিক