বস্তুজগতের বিপরীত আরেক জগৎ মহাবিশ্বে রয়েছে
ছায়াবীথি শ্যামলিমাপ্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৯
বস্তুজগতের পাশাপাশি সমান্তরালে বিপরীত আরেকটি জগৎ সৃষ্টি হয়ে আছে বলে আধুনিক বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে। বিপরীত সেই জগতে এ পৃথিবীতে যত প্রকার সত্তা আছে, তার প্রতিটিরই বিপরীত সত্তা রয়েছে। অর্থাৎ আমাদের মানব সমাজের প্রত্যেকেরই একটি করে বিপরীত সত্তা ওই জগতে তৈরি হয়ে আছে, যাকে বলে ‘আইডেনটিক্যাল টুইন’। আগামীতে যত মানুষ পৃথিবীতে জন্মে নেবে, ঠিক ততজনেরই বিপরীত সত্তা ওই বিপরীত জগতে তৈরি হবে।
পৃথিবীর মানুষ প্রতিদিন যে কাজকর্ম করে, তার সরাসরি প্রতিক্রিয়া বিপরীত জগতে সৃষ্টি হয়। মানে, ওই জগতের বিপরীত সত্তার উপর সরাসরি প্রভাব পড়ে। পদার্থ বিজ্ঞানের রীতি অনুযায়ী এটি একটি চিরসত্য বিধান। কণিকা জগৎ বিষয়টি প্রমাণ করে দেখিয়ে দিয়েছে।
সূরা আয্ যুমারের পাঁচ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “তিনি যথাযথভাবে (প্রতিটি বিষয়ে পরিমাপ ও পরিমাণের অনুপাত ঠিক করে) সমগ্র মহাবিশ্ব (বস্তুজগৎ ও প্রতিবস্তুজগৎ এ দু’ভাগে বিভক্ত করে) সৃষ্টি করেছেন।”
সূরা আন্ নাবার আট নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “আমি সৃষ্টি করেছি তোমাদেরকে জোড়ায় জোড়ায় (পৃথিবীর মানুষ এবং একই চেহারার পরকালের জন্য প্রতিবস্তু দিয়ে সৃষ্ট বিপরীত মানুষ)।”
এরই মধ্যে বিজ্ঞান প্রমাণ করে দেখিয়েছে যে, বিজড়িত আলোর কণার জোড় থেকে একটি ফোটন কণিকা আলাদা করে যদি দূরে কোথাও নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাকে বিভিন্ন অবস্থায় নাড়াচাড়া করা হয়, তাহলে অপর ফোটন কণিকাটিও একইভাবে নড়েচড়ে ওঠে। যদিও তাদের মধ্যে অনেক দূরত্ব বজায় থাকে। এতেই প্রমাণিত হয়, পৃথিবীর মানুষ যে ধরনেরই কর্মকাণ্ডই করুক না কেন, সাথে সাথে তা বিপরীত জগতে সৃষ্ট তারই বিপরীত সত্তার ওপর হুবহু প্রতিফলিত হয়। এতে কোনো ধরনের তারতম্য ঘটে না। কারণ এ মহাবিশ্বে মানুষসহ প্রতিটি বস্তুই মৌলিকভাবে আলোর কণা ফোটন দিয়েই সৃষ্টি হয়েছে।
কিন্তু কোথায় এই বিপরীত জগৎ? এর সন্ধান এখনো বিজ্ঞানীরা পাননি। তবে পদার্থবিজ্ঞানী আবদুস সালাম বলেছেন, আমাদের এই বস্তুজগৎ থেকে অনেক অনেক দূরে মহাশূন্যের কোনো এক সুদূরলোকে বস্তুজগতের বিপরীত জগৎটি সৃষ্টি হয়ে আছে। যেখানে এই বস্তুজগতের সবকিছুই বিপরীতভাবে বিদ্যমান রয়েছে। ব্যাপারটা ঠিক যেন আয়নায় প্রতিফলিত প্রতিবিম্ব।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, নিশ্চয়েই আবিষ্কৃত অদৃশ্য বস্তু ও শক্তি আমাদের বস্তুজগতে (দৃশ্যমান বস্তুর জগতে) এত প্রভাবশালী হতে পারলে অবশ্যই তাদের প্রভাব প্রতিপত্তিকে কাজে লাগিয়ে তারা আমদের জগতের সমান্তরালে দৃশ্যমান বস্তুর বিপরীতে অদৃশ্য বস্তু ও শক্তি দিয়ে প্রতিবস্তুর জগৎ সৃষ্টি করে থাকবে। অদৃশ্য বস্তু ও শক্তির প্রভাব বিদ্যমান থাকায় আমরা সেই প্রতিজগতকে কখনোই দেখতে পাব না।
এ বিষয়ে সূরা নামলের ৬৫ নম্বর আয়াতে উল্লেখ রয়েছে, “বলো, আল্লাহ ছাড়া আর কেউ মহাবিশ্বে অদৃশ্য বিষয়সমূহের পূর্ণ জ্ঞান রাখে না।”