বন্যার পদ্মশ্রী প্রাপ্তিতে ঢাকায় আনন্দ উদযাপন
সুকুমার সরকারপ্রকাশিত : জানুয়ারি ৩১, ২০২৪
দুই বাংলার বিশিষ্ট রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা এবার ভারতের মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্রীয় বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রীতে ভূষিত হওয়ায় চ্যানেল আই কার্যালয়ে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। এই আয়োজনে শিল্পীর পদ্মশ্রীপ্রাপ্তির আনন্দ উদযাপন হয়। সুরের ধারার শিক্ষার্থী-শিল্পীদের গানে বরণ করে নেওয়া হয় গুণীশিল্পীকে। হাতে তুলে দেওয়া হয় ফুলের তোড়া। পরিয়ে দেওয়া হয় লাল-সবুজ উত্তরীয়। গত বৃহস্পতিবার ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে পদ্ম পুরস্কারের এবারের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানেই জ্বলজ্বল করছে দুই বাংলার জনপ্রিয় শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার নাম। ২০২৪ সালের পদ্ম পুরস্কারে পুরস্কৃত হন পদ্মাপারের ভূমিকন্যা, তথা খ্যাতনামা রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।
সংগীতশিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুরের ধারার চেয়ারম্যান রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা রবীন্দ্র সংগীত নিয়ে কয়েকটি বইও লিখেছেন। সংগীতে অবদানের জন্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কার পান তিনি। পরে এ শিল্পী নিজের গল্প জানান ওই চ্যানেলের তারকা কথনে। বলেন, বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তার পরিচয়। পড়তেন কবিতা। শিল্পীর মামাও রবীন্দ্রসংগীত গাইতেন। যখন গান শেখার শুরু তখনও জানতেন না রবীন্দ্রসংগীতকেই পেশা হিসেবে নেবেন। পরে ১৯৭৪-এ ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস (আইসিসিআর)-এর স্কলারশিপের জন্য আবেদনের কারণেই তার জীবনের মোড় ঘুরে গেছে। শিল্পী আরও জানান, যত সময় যাচ্ছে রবীন্দ্রসংগীতের প্রতি টান তত বাড়ছে। যে কোনো সংকটে, দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রবীন্দ্রনাথেই আশ্রয় খোঁজেন তিনি। প্রতিনিয়ত নতুন নতুনভাবে আবিষ্কার করেন। এই আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে আরও বেশি কাছের মনে হয় তার।
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা শান্তিনিকেতন থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিম নেন। শিক্ষাগুরু হিসেবে পেয়েছিলেন প্রখ্যাত শিল্পী কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলিমা সেন, শৈলজারঞ্জন মজুমদার, শান্তিদেব ঘোষ, গোরা সর্বাধিকারী, মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায়, অশেষ বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো তাবড় সঙ্গীতজ্ঞদের। সেই গায়িকার মুকুটেই এবার জুড়ল আরেক অনন্য সম্মানের পালক। সাধারণত মার্চ বা এপ্রিলে রাষ্ট্রপতিভবনের আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
এর আগে ২০২১ সালে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক সঞ্জীদা খাতুন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাজ্জাদ আলি জহির বীর প্রতীককে পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত করেছিল ভারত সরকার। তার আগে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও কূটনীতিবিদ সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি পদ্মভূষণ পেয়েছিলেন। আর পদ্মশ্রীতে ভূষিত হয়েছিলেন প্রত্নতত্ত্ববিদ এনামূল হক ও সমাজকর্মী ঝর্ণাধারা চৌধুরী।