ফৌজিয়া সামিরের অনুগল্প ‘এক সাথে পথ চলা’
প্রকাশিত : মার্চ ২১, ২০২৪
- কই গো শুনছো ? কখন থেকে ডাকছি শুনতে পাচ্ছ না ?
- এই শোনো তারস্বরে চিৎকার করবে না একদম। আমি তোমার মতো পায়ের ওপর পা তুলে বসে নেই। যত রাজ্যের কাজ পরে আছে। আর উনি হেরে গলায় চিৎকার করছেন।
- কি বলছো আমি শুধু পায়ের ওপর পা তুলে বসে থাকি ? আর কিচ্ছু করি না ?
- হ্যাঁ করো তো, পাঁচ মিনিট অন্তর অন্তর চায়ের অর্ডার।
- এই শোনো, আমার জন্য চা বানিয়ে বানিয়ে না তোমার চায়ের হাত এতো ভালো হয়েছে। নাহলে যখন এবাড়িতে প্রথম এলে তখন তো কিছুই করতে পারতে না।
- তুমি তো এখনও কিছুই করতে পারো না। কোনোদিন তো একগ্লাস জল গড়িয়ে খেলে না।
- এরকম বলো না গিন্নী, আজও কিন্তু বাজারটা আমিই করি। তুমি বলো তো আমার মতো ভালো বাজার করতে আর কেউ পারে? তোমার ছেলে পারে ?
- বাজে না বকে কেনো ডাকছিলে সেটা বলো।
- আরেক কাপ চা আর সাথে কয়েকটা গরম গরম পিয়াঁজি। এই বৃষ্টির দিনে শুধু চা খেতে খেতে পেপার পড়ে মজা নেই বুঝলে।
- উঃ! নবাব পূত্তুর। পারবো না। এই বৃষ্টিতে ছাদ থেকে শুকনো জামা কাপড় তুলে আনতে আর মিলতে যেতে যেতে আমার হাঁটু ব্যথা বেড়ে গেলো আর উনি কিনা চা পিয়াঁজি খাবেন। ওসব এখন একদম হবে না।
- আমি কি একা খাবো নাকি তুমিও তো খাবে। বৌমা খাবে বাবু খাবে।
- কেউ খাবে না। এই তো ভাত খেলে গলা থেকে ভাত নামতে না নামতেই আরো খাওয়ার চিন্তা। বৌমা সবে শুয়েছে তাকে আমি ডাকবো না। তুমিও পেপার রেখে ঘুমাও।
- আচ্ছা, বেগুনি ?
- না।
- তুমি না সত্যি বুড়ি হয়ে গিয়েছো।
- আর তুমি এখনো আঠারো বছরের যুবকটি আছো, হয়েছে শান্তি ? এবার আমি যাই ?
- আরে ধুর! শোনো না, তোমার সেই কলেজ দিনের কথা মনে আছে ? বৃষ্টির দিনে আমরা কলেজের বাইরের সেই চায়ের দোকানে চা আর গরম গরম বেগুনী খেতাম। সবাই মিলে কত আড্ডা হতো।
- হ্যাঁ, কেনো মনে থাকবে না। দিন গুলো কি তাড়াতাড়ি কেটে গেলো তাই না গো। আর কোনোদিন ওইভাবে বৃষ্টির দিনে মাটির ভাড়ে চা খাওয়া হবে না।
- কেনো হবে না ? তুমি চাইলে আজকেই হবে।
- আজকে ?
- হ্যাঁ, তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও তারপর আমরা বেরোবো চা খেতে ।
- এখন ?
- হ্যাঁ।
- আরে..
- তুমি কি সত্যি বুড়ি হয়ে গেলে গো ?
- না গো। দাড়াও শাড়ী টা পাল্টে আসছি।
- বলছি তুমি যাকে রেডি হবে ততক্ষণে কি আরেকবার চা পাওয়া যাবে না ?
- উফফ!