নীহার লিখনের কবিতা ‘আমার হৃদয় এক ফিলিস্তিন’
প্রকাশিত : মে ২১, ২০২১
আমার হৃদয় এক ফিলিস্তিন। বোমা ফেলে কোনো নাগালই পাবে না তুমি যার। গাজারও ঊর্ধ্বে সে ভূমি, কোনো বিমানে পাবে না খুঁজে তুমি। দেখবে প্রায় অলৌকিক ধোঁয়ারা, দুধের ভেড়ার যত লোমের আবেশে সাদা শিশুদের অভিপ্রায়ে উঠান জুড়েছে শ্বাশত ঢংয়ে, পাহাড় ভাববে তুমি সুউচ্চ পামির, রুটির পোড়া গন্ধের পড়শিবাড়ির কারো নেড়ে দেয়া পোষাকে দেখবে রক্ত শুকিয়ে নকশি হয়েছে, হাঁটু ভেঙে বসেছে বলির নিচে ঠাকুরদা আর ঠাকুমারা কী যে মনোহর। তার পাশে নেকড়েরা তুন্দ্রা-বনটি যেন খুঁজে পেয়ে আলগোছে পেয়েছে আবাস, সেনারও তো সোনালি মানুষ থাকে। শ্রান্তিতে হাতরায় পিঠ, তারও থাকে মিরিক মাছের মতো মন।
ফিলিস্তিনের জলে পদ্মটি আমার অন্তর, উড়নার মতো করে উড়ছে বাতাস, ঘুম ভেঙে তারে ভোরে পেয়েছি নিতুন শিশু দুধ গন্ধেই চিরদিন, যেভাবে তোমার পৃথিবীতে পালঙ্ক থেকে নামা শিশুরাও পেয়েছে তাকে, ক্লাস্টার বোমারা আর সেসব কী বোঝে! মাটির কতটা গভীরে বিদীর্ণ হয় কোনো কান্নারত মায়ের আওয়াজ।
কুচকাওয়াজ চাইনি, নীরবে আসলে পেতে হাস্নাহেনার রাত, গোলাপ প্রপাত, পাতে তুলে দিতাম অমৃত এক জীবনের। সামান্য সঞ্চয় ভেঙে ফেলে দিতাম পশমি কোনো ওমের গরদ বরফের শরীরে তোমার, ফিলিস্তিনের মায়াবনের হরিণও দিতো লুকানো সুবাস।
আমার হৃদয়ে তুমি কামান দাগাবে কই বলো, আমিই জানি না যার কতটা গভীরে থাকে প্রেম, কতটা দীর্ঘ এক নদীর ধারায়, মানুষ থোকা ফুলের মতন চোখে স্বপ্ন দেখে মুক্তির, পাড়ায় পাড়ায়।
তারাতো সে পাখিই, গুলির শব্দে উড়ে যায়, ফের ফিরে ডালে, এখানে, ওখানে, ব্রহ্মাণ্ডের সমস্ত ঢালে, যারা অবিনাষী প্রাণের আয়ু; স্বাধীনতা কোষে কোষে পুতে রাখা তৃণের ভুজালি যার, রক্তে তুফান তুলে প্রেমের স্নায়ু।
ও আগুন, তুমি শত হৃদয়ের চেয়ে বেশি আগুনতো নও, প্রশ্বাস আর্তিতে ফুঁ দিলে নিভেছো অসীম, দেখো আকাশ তোমাকে দেখছে; ঘিরেছে তোমাকে আজ কোমল মানুষ, নরম স্নিগ্ধ পৃথিবীর একা ফিলিস্তিন, যার অন্তরে আমি এক ক্রন্দন।
চলে যাও রসুই ঘরে, তোমাকে চুমু খাবে ক্ষুধার্ত সকলে মিলে, তোমাকে নিয়ে আমি লিখবো মহৎ কবিতা, মেনে নিয়ে সব নন্দন।