দেশে বেকার সংখ্যা ২৬ লাখ ৬০ হাজার: বিবিএস
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : জানুয়ারি ০৬, ২০২৫
১৯তম আইসিএলএস (পরিসংখ্যানবিদদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন) অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশের শ্রমশক্তির ২৬ লাখ ৬০ হাজার মানুষ বেকার ছিল।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২৪ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ের ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপে এ তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার জরিপের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
বেকারের এই নতুন হিসাবটি ১৯তম আইসিএলএস (পরিসংখ্যানবিদদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন) অনুযায়ী তৈরি করেছে বিবিএস। এই পদ্ধতি অনুসারে যারা উৎপাদনমূলক কাজে নিয়োজিত থাকে, কিন্তু বাজারে পণ্য বা সেবা বিক্রি করে না, তারা কর্মে নিয়োজিত নয় হিসেবে ধরা হয়।
তারা বেকার জনগোষ্ঠী হিসেবে বিবেচিত হয়। এবারই প্রথমবারের মতো এভাবে হিসাব করেছে বিবিএস। এতদিন ১৩তম আইসিএলএস অনুসারে বেকারত্ব ও শ্রমশক্তির হিসাব করা হতো। নতুন হিসাবের পাশাপাশি এবার পুরোনো হিসাবটিও দেয়া হয়েছে।
সেই হিসাব অনুসারে, সেপ্টেম্বর মাস শেষে দেশের বেকারের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৫ লাখ ৫০ হাজার। এর আগের প্রান্তিকে এই সংখ্যা ছিল ২৬ লাখ ৪০ হাজার। এর মানে হলো, পুরোনো হিসাবে বেকারের সংখ্যা কমেছে। তবে নতুন হিসাবে বেকার বেড়েছে ২০ হাজার।
বিবিএসের জরিপে বলা হয়, সার্বিকভাবে বেকার জনগোষ্ঠী মূলত তারাই যারা জরিপের আগের ৭ দিন সময়ে এক ঘণ্টাও কোনো কাজ করেনি, কিন্তু কাজ করতে তৈরি ছিল। একই সঙ্গে তারা জরিপের পরের দুই সপ্তাহেও কাজের জন্য তৈরি ছিল।
এছাড়া বিগত ৩০ দিনে বেতন বা মজুরি অথবা মুনাফার বিনিময়ে করার জন্য কোনো না কোনো কাজ খুঁজেছে, এমন ব্যক্তিরা বেকার হিসেবে বিবেচিত হয়।
বিবিএসের একজন কর্মকর্তা জানান, এবারই প্রথমবারের মতো ১৯তম আইসিএলএস অনুসারে বেকারত্ব ও শ্রমশক্তি জরিপ করা হয়েছে। ফলে পরিসংখ্যানে কিছুটা তারতম্য রয়েছে।
১৩তম আইসিএলএসের ভিত্তিতে বিবিএসের সর্বশেষ ত্রৈমাসিক জরিপ অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাস শেষে দেশের শ্রমশক্তি ছিল ৭ কোটি ৬ লাখ নারী-পুরুষ। এর মধ্যে পুরুষ ৪ কোটি ৭৪ লাখ ৯০ হাজার এবং নারী ২ কোটি ২৫ লাখ ৭০ হাজার।
এর মধ্যে কতজন কর্মে নিয়োজিত আছেন? জরিপের সময় দেশে ৬ কোটি ৭৫ লাখ ১০ হাজার নারী-পুরুষ আগের ৭ দিনে এক ঘণ্টা মজুরির বিনিময়ে কাজ করেছে। অর্থাৎ এরা কর্মে নিয়োজিত হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ৪ কোটি ৫৭ লাখ ৭০ হাজার এবং নারী ২ কোটি ১৭ লাখ ৪০ হাজার।
যারা কর্মে নিয়োজিত নয় কিন্তু বেকার হিসেবেও বিবেচিত নয়, তারাই মূলত শ্রমশক্তির বাইরের জনগোষ্ঠী। এই জনগোষ্ঠীতে আছে শিক্ষার্থী, অসুস্থ ব্যক্তি, বয়স্ক, কাজ করতে অক্ষম, অবসরপ্রাপ্ত এবং কর্মে নিয়োজিত নয় বা নিয়োজিত হতে অনিচ্ছুক এমন গৃহিণীরা। সেপ্টেম্বর মাস শেষে দেশে এমন ৫ কোটি ১৪ লাখ ৪০ হাজার নারী-পুরুষ ছিল।
প্রতিবছর কমপক্ষে ২০ লাখ মানুষ চাকরির বাজারে ঢুকছে। তাদের মধ্যে ১৩-১৪ লাখ মানুষের দেশের অভ্যন্তরে কর্মসংস্থান হয়। বাকিরা কাজের জন্য প্রবাসে যায়। তাই দুই দশক ধরে বেকারের সংখ্যা মোটামুটি ২৪-২৮ লাখের মধ্যেই রয়েছে।