দীঘিনালায় পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ, দোকান ও বাড়িঘরে আগুন

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪

খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে লারমা স্কয়ার এলাকায় এই সংঘর্ষ বাধে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহরের নোয়াপাড়া এলাকায় বুধবার ভোরে মোহাম্মদ মামুনকে (৩০) মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে মারধর করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মামুন খাগড়াছড়ি সদরের শালবন মধ্যপাড়ার মৃত নূর নবীর ছেলে। এ ঘটনার সূত্র ধরে আজ বিকেল ৫টার দিকে দীঘিনালায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে বাঙালিরা। ৫টার দিকে ৩০০ থেকে ৪০০ বাঙালি জামতলি ও বোয়ালখালী বাজারের দিক থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে।

তারা লারমা স্কয়ারের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পাহাড়িরা বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে অন্তত তিনজন আহত হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে লারমা স্কয়ার ও দীঘিনালা কলেজের পাশের প্রায় ৩৭টি ঘরবাড়ি ও দোকানপাট জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

বোয়ালখালী বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. লোকমান হোসেন বলেন, “মামুন হত্যার বিচারের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আমরা মিছিল বের করেছিলেন। পরে পাহাড়িরা এসে বাধা দেয়। এজন্য ঝামেলার সৃষ্টি হয়। এভাবে ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হবে, ভাবিনি।”

লারমা স্কয়ার এলাকার বাসিন্দা রিপন চাকমা বলেন, “মিছিলে পাহাড়িরা কেউ বাধা দেয়নি। মিছিল থেকেই অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে।”

নিহত মামুনের মামা মো. নুর হোসেন বুধবার গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, “মামুনকে পানখাইয়া পাড়ার স্লুইসগেট এলাকায় হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখা হয়। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মামুনের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।”

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন মৃধা বলেন, “মোটরসাইকেল চুরি করে পালানোর সময় বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে মামুন আহত হন। গণপিটুনির বিষয়টি আমার জানা নেই।”

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, “পানখাইয়াপাড়া প্রাইমারি স্কুলে শান্তি–শৃঙ্খলা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। মূলত বুধবারের ঘটনার বিষয়ে ওই সভা ডাকা হয়। সভা চলাকালেই দীঘিনালায় সংঘর্ষের খবর আমি পাই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আমি বিষয়টি জানিয়েছি। বর্তমানে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আছেন।”