ডেঙ্গু একটি প্রাকৃতিক দূর্যোগ নয় কি

নাঈমুল হাসান হিমেল

প্রকাশিত : আগস্ট ০৬, ২০১৯

ইতল বিতল
গাছের পাতা 
গাছের তলায় ব্যাঙের মাথা।
বৃষ্টি পড়ে ভাঙ্গে ছাতা
ডোবায় ডুবে ব্যাঙের মাথা।

বৃষ্টি যখন জোরে সোরে আসবে ছাতা তো তখন ভাঙতেই পারে। তবে ছাতা ভেঙ্গে জলে ডুবে ব্যাঙের সর্দি না হলেও এযুগের মানুষের মরণ দশা ঠিকই হচ্ছে। আজকাল তো ঝড় বৃষ্টি ছাড়াই ছাতা ভাঙছে। এখানে লাশ হচ্ছে ওখানে লাশ হচ্ছে, কি হচ্ছে? তোলপাড় আর তোলপাড়।

 

প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিতে কার্পণ্য করছে বলেতো মনে হচ্ছে না। বন্যা হচ্ছে, অস্বাভাবিক উষ্ণতা, গুজব, মনুষত্যহীন কর্মকান্ড, ধর্ষন,বলাৎকার কি নেই তাতে? ঝড় কি সব সময় প্রকাশ্যেই আসে?

 

তবে সব ছাড়িয়ে বর্তমান ইস্যু কিন্তু ডেঙ্গু। মিটিং হচ্ছে মিছিল হচ্ছে ঔষধ আনা হচ্ছে, ঝাড়ু হাতে দাঁড়ানো হচ্ছে ক্যামেরার সামনে রাস্তা জুড়ে কামান হাতে ঘুরছে সৈনিক।
হায়রে কত তোর জোর হায়রে কত বাহার!তবে এত দিন যে জনগণের টাকায় বাজেট হলো বছর বছর মশার ঔষধ কেনা হলো, জনগনের টাকায় এসি গাড়িতে মেয়ররা ঘুরল। অবশেষে আমারই ডেঙ্গু হল , ক্ষতির হিসেব কি কেউ করল হে?

কে কি করল এই বলে কাল হতে কে চায়। থাক আমি আম জনতা, ভীত কাপুরুষ।

 

ঢাকা বিশ্বের শীর্ষ জনবহুল শহর গুলোর মধ্যে একটি। ছোট জায়গা পরজীবির মত বাড়ছে বিল্ডিং, মানুষের চাপ সামলাতে হিমশিম। তবে এটাত নতুন নয় বেশ কয়েক যুগ ধরে এ অবস্থা চলছে। কোন প্রস্তুতি কি নেয়া হয়েছে এ ব্যাপারে? জনগণের কথা মাথায় রেখেই তো নগর পরিকল্পনা করার কথা ছিল।

 

গত বার যখন চিকুনগুনিয়া তার বীরত্ব দেখিয়ে গেল তখন কি আমাদের মনে হয় নি এ ঔষধ কতটা কার্যকর? নতুন ঔষধ আনতে হবে।

 

চিকুনগুনিয়া কোন রকমে পার করা গেছে তাই এইটা নিয়ে মাথা ব্যাথা কেন? তাইতো, ডেঙ্গুতে মানুষ মরছে সামলানো দায় তাই এত তোরজোড়। মিডিয়াতে কোন কিছু আলোচিত হবে তা প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসবে তখন শুরু হবে তোরজোড়। এর আগে কার এত সময় দীর্ঘচিন্তা করার। উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারিরা তো এসি গাড়িতে চড়বে তাদের ঘরে থাকবে এসি। আরাম আর আরাম। প্রায় ১৬ কোটি মানুষের কিছু না হয় মরুক। কবে বৃষ্টি আসবে ছাতা ভাঙবে কবে ব্যাঙ জলে পড়বে, মরবে তারপর না হবে উদ্ধার অভিযান।

 

আমি ডেঙ্গুকে যদি প্রাকৃতিক দূর্যোগ বলি তাহলে কি ভুল হবে? প্রত্যেকটা এরিয়ায় প্রাকৃতিক একটা ভারসাম্য থাকা দরকার। যখন ভারসাম্য নষ্ট হবে তখন তো ঝড় আসবেই। বিপুল জনসংখ্যা এ শহরে এই ভারসাম্যটা একদমই নষ্ট হয়ে গেছে সবার অগোচরে। প্রকাশ্যে ছাড়াও গোপনে প্রকৃতি কতটা ভয়ংকর হতে পারে তার প্রমাণ এই ডেঙ্গু নামক মহামারি। এই হেন পরিস্থিতি যদি আর কয়েক মাস পরেই চাপা পরে যায় তবে সাধু সাবধান ভবিষ্যৎ আরও কঠিনতম হবে।