চামেলীর পক্ষ থেকে মিটু
রিফাত বিন সালামপ্রকাশিত : নভেম্বর ২০, ২০১৮
না, এটা যৌন হয়রানির ঘটনা নয়। বাংলার দামাল নারীবাদীরা মিটুর মধ্যে হয়তো যুক্তও করবে না। তারা এসব হয়তো জানেও না। এসব নারীবাদের বাইরের জিনিস সম্ভবত। চরম পুরুষতান্ত্রিক ক্রিকেটে নারীরা কীভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে তারই বয়ান। এটা মহা হয়রানি। হয়রানির চূড়ান্ত।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক নারী ক্রিকেটার রাজশাহীর চামেলী খাতুন। সবাই আগেই তার অসুস্থতার খবর পেয়েছে। শুরুতে ক্রিকেট বোর্ড বা রাষ্ট্র কেউই তার চিকিৎসার ভার নিচ্ছিল না। কিন্তু সবার সমালোচনার কারণে নানা মহলের লোক তাকে সাহায্য করার আশ্বাস দেয়। এমনকি ক্রিকেট বোর্ড থেকে জাতীয় দলের কয়েকজন ক্রিকেটারও।
চামেলী ঢাকা আসে প্রায় ২০-২৫ দিন হলো। শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড প্রধানের কার্যালয়ের লোকজন খুব লাফঝাপ করে। দেশের গণমাধ্যম কর্মীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল তার রাজশাহীর বাড়িতে। বাদ যায়নি ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালও। কিন্তু ওখানেই সব শেষ।
জাতীয় দলের টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান কিংবা রুবেল হোসেন পাশে দাঁড়িয়েছেন বলে আশ্বাস দিলেও শেষপর্যন্ত চামেলী লড়ছেন একাই। এটাই তাজা খবর। পঙ্গু হাসপাতালে প্রথম দুই দিন ছাড়া প্রায় ২০ দিনই চিকিৎসার ব্যয়ভার চালাচ্ছেন চামেলী নিজেই।
চামেলী গণমাধ্যমে আবারো আকুতি করেছেন, "আমার জন্য কিছু করেন। আমি এভাবে শেষ হতে চাই না। প্রথমদিকে বেশ কিছুদিন খোঁজ-খবর নিয়েছেন অনেকেই, কিন্তু এখন কোনও খোঁজখবর নেই। আমি জানি না তারা তাদের ব্যস্ততার জন্য খোঁজ নিতে পারছেন না নাকি এমনিতেই নিচ্ছেন না। তবে ট্রেইনাররা নিয়েছেন।”
চামেলী আরো বলেছেন, “সাকিব ভাই আমাকে বলেছিল, আমি আপনার সাথে আছি। রুবেল ভাই আমার সাথে ছিলেন। সবচেয়ে বড় কথা, আমি টাকা চাই না, সাপোর্ট চাই। আর সেই সাপোর্টটাই আমি বিসিবি থেকে পাচ্ছি না।"
পুরোটা পরিষ্কার, শুধু নারী হওয়ার কারণে বাজারে চামেলীর গুরুত্ব কম। বাজারে চামেলী বিক্রি হচ্ছে না, তাই তার ভাত নাই। পুরুষ দিবসে আমাদের লজ্জার আর কিবা বাকি থাকে? কিসের মাশরাফি, সাকিব? লজ্জা...!
হ্যাঁ, আবার হয়তো কালই শুনবেন, আবার সবাই পাশে দাঁড়িয়েছে, বিসিবি, সাকিব, তামিম, মাশরাফি সবাই... কিন্তু সেটাও নাটক হবে। ২০ দিন আগে যেমন নাটক করেছে সবাই।