সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

ঘুরে আসুন গজনী অবকাশ কেন্দ্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত : জানুয়ারি ২৭, ২০২৪

ভ্রমণ পিয়াসীদের পদচারণায় জমে উঠেছে শেরপুরের গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্র্র। স্থানীয়রা জানায়, প্রতি বছর নভেম্বর থেকে মার্চ এই পাঁচ মাস মুখরিত থাকে নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যবেষ্টিত গারো পাহাড় ঘেরা এই পর্যটন কেন্দ্রটি। কিন্তু এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত পর্যটক শূন্য ছিল অবকাশ কেন্দ্র। তবে গত ১২ জানুয়ারি থেকে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তে শুরু করে।

স্থানীয় আইয়ুব আলী ও শহীদুল ইসলাম বলেন, দেশের উত্তর সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুর। গারো পাহাড়ের পাদদেশে এবং ভারতের মেঘালয় রাজ্যের কোল ঘেঁষে নদ-নদী আর পাহাড়ি সৌন্দর্যে ভরপুর শেরপুর। এ জেলার বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে গারো পাহাড়ের বিস্তৃতি। ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নে অবস্থিত গজনী অবকাশ। এটি শেরপুর জেলা তথা বৃহত্তর ময়মনসিংহ বিভাগ ও উত্তরাঞ্চলের অন্যতম আকর্ষনীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে।


প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি গজনী, ব্রিটিশ আমল থেকেই সকলের কাছে পিকনিকট স্পট হিসেবে পরিচিত। দর্শনার্থীদের ভ্রমণ আরও আনন্দঘন করতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১৯৯৩ সাল থেকে এর সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করা হয়। এই পর্যটন কেন্দ্রটি প্রায় ২৭০ বিঘা এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।
বুলবুল আহমেদ নামে একজন বলেন, গজনী পাহাড়ি এলাকা সারি সারি গজারী, শাল, সেগুন, মহুয়া, আকাশমনি, ইউকেলিপটাসসহ নাম না জানা শত শত গাছ-গাছালি এবং লতাপাতার বিন্যাস। পাহাড়, বনানী, ঝর্ণা, টিলা, লেক, হ্রদসহ প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম সৌন্দর্য মিলে অন্যরকম প্রশান্তি এনে দেয় ভ্রমণকারীদের ক্লান্ত মনে। তাই তো প্রতি বছর শীতকাল এলে গারো পাহাড়ের সৌন্দর্য অবলোকন করতে ভ্রমণ পিপাসু মানুষগুলো ছুটে আসেন এ প্রাকৃতিক লীলাভূমিতে। তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর নভেম্বর থেকে শুরু করে মার্চ মাস পর্যন্ত চলে পর্যটকদের ভিড়। কিন্তু এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে নভেম্বর ডিসেম্বর ছিল পর্যটক শূন্য। ৭ জানুয়ারি নির্বাচন শেষ হওয়ার পর থেকে জমতে শুরু করেছে এ অবকাশ কেন্দ্রটি। জেলা এবং জেলার বাইরে থেকে ভ্রমণ পিপাসু এবং পর্যটকরা ছুটে আসছেন এ অবকাশ কেন্দ্রে।

স্থানীয় হাসিবুল হাসান বলেন, ইতোমধ্যে পাহাড়ি সৌন্দর্যের সাথে যোগ হয়েছে কৃত্রিম লেক আর মনোমুগ্ধকর ভাস্কর্য এবং বিনোদনের জন্য আরও অনেক কিছু।

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা থেকে আসা পর্যটক সোনিয়া আক্তার বলেন, পর্যটন কেন্দ্রটি আগের তুলনায় অনেকটাই বদলে গেছে। সম্প্রতি এখানে উদ্বোধন করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ভাসমান সেতু, লেকের পাশে সুবিশাল ওয়াটার কিংডম। এছাড়া ঝুলন্ত ব্রিজ, ক্যাবল কার এবং জিপলাইনিং। এছাড়া আকর্ষণীয় মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্ক দেখে আমরা সবাই মুগ্ধ।

 

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক ইসমাইল হোসেন বলেন, এখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি রয়েছে অসংখ্য দোকানপাট। সেখান থেকে পছন্দের জিনিসপত্র কিনতে পারছি। এসব দোকানে শিশুদের খেলনা এবং নারীদের জন্য বিভিন্ন প্রসাধনী ও শাড়ি কাপড় থেকে শুরু করে রয়েছে ঘর সাজানোর নানা আসবাবপত্র।

শেরপুরের জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম বলেন, সারা দেশের পর্যটকদের কাছে গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্রটি আরও আকর্ষণীয় করতে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। ইতোমধ্যে পর্যটন কেন্দ্রে চালু করা হয়েছে নতুন নতুন বিভিন্ন রাইডস। এছাড়া খুব শীঘ্রই এখানে পর্যটন কর্পোরেশনের তত্ত্ববধানে মোটেল নির্মাণ করা হবে।