গুরুদেব কী এই শান্তিনিকেতন চেয়েছিলেন!
মধুরিমা সাহাপ্রকাশিত : মে ১৮, ২০১৯
গুরুদেবের বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতন যা এক সময় ছিল সবার জন্য উন্মুক্ত, কিন্তু আজ অদ্ভুত সব নিয়মের বেড়াজালে হাঁসফাঁস করছে শান্তিনিকেতন। গুরুদেব কি আদৌ এই শান্তিনিকেতন চেয়েছিলেন? নাকি চেয়েছিলেন শিক্ষা আবদ্ধ থাক এক মুষ্টিমেয় শ্রেণির কাছে! না গুরুদেব এর কোনোটাই চাননি। তিনি চেয়েছিলেন উন্মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা, যে শিক্ষায় থাকবে আনন্দ, ঐক্যবদ্ধতা, থাকবে প্রকৃতির সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ। জাতপাত ধর্ম শ্রেণি নির্বিশেষে শিক্ষা হবে সবার সমান অধিকার। আর আজ! আজ কী হচ্ছে তার সেই সাধের শান্তিনিকেতন, বিশ্বভারতীতে? যেখানে কিনা বিশ্বভারতী এখনো পর্যন্ত একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানে সামান্য ভর্তি ফর্মের মূল্য যদি এত হয় তাহলে সেখানে সাধারণ ঘরের ছাত্র-ছাত্রীদের স্থান কোথায়!
গুরুদেবের সেই জাত ধর্ম শ্রেণি নির্বিশেষে তৈরি করা শিক্ষাকেন্দ্র বিশ্বভারতী যদি সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের কথা না ভাবে, তবে ভাববেটা কে! যে অচলায়তনের ভয় কবিগুরু পেয়েছিলেন সেই অচলায়তনেই পরিণত হচ্ছে বিশ্বভারতী। তাই আমরা বিশ্বভারতীর সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা গুরুদেবের আদর্শকে মাথায় রেখে পথে নেমেছি আমাদের হক আদায়ের দাবিতে। এই অস্বাভাবিক ফি বৃদ্ধি যে কারণেই হোক আমরা মানছি না মানবো না। অচলায়তনকে ভাঙার পথ তৈরি হচ্ছে, ছাত্রছাত্রীরা জোট বাঁধলে কর্তৃপক্ষ ভয় পাচ্ছে। তাই বিশ্বভারতী সকল ছাত্রছাত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি, আগামী ১৯ তারিখ সবাই এসো সকাল ১০টায় সেন্ট্রাল অফিসের সামনে। এরই মধ্যে আমরা আমাদের লিখিত দাবি জানিয়েছি, ১৯ তারিখে তার উত্তর কর্তৃপক্ষ দেবে।
কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সদুত্তর না মিললে আমাদের লড়াই চলবে। অনেক প্রতিকূলতা জয় করে আমরা আজ পথে নেমেছি, এই কড়া রোদ্দুর, অসম্ভব গরম, সামনে সেমিস্টার— এসব কিছুর তোয়াক্কা না করে আমাদের হক আদায়ের দাবিতে আজ আমরা পথে নেমেছি, তাই বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রী বিরোধী কর্তৃপক্ষ হুঁশিয়ার, আমরা সহজে মাথা নোয়াবো না।
লেখক: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী