‘গাজার তাঁবুগুলো মৃত্যুর ফ্রিজ’
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
ইজরায়েলি হামলায় গাজার বেশিরভাগ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে বাস করছে অস্থায়ী তাঁবুতে। শীতের মৌসুম গাজায় তাপমাত্রা কমে গেছে। এ পরিস্থিতিতে দক্ষিণ গাজার আল মাওয়াসিতে ঠাণ্ডায় জমে ৩ শিশু মারা গেছে।
ইজরায়েল গাজার মানুষকে শুধু বাস্তুচ্যুত করেনি; সঙ্গে তারা খাদ্য, পানি ও শীতের প্রয়োজনীয় পণ্য গাজায় ঢুকতে বাধা দিচ্ছে।
খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের পরিচালক আহমেদ আল ফাররা বৃহস্পতিবার বলেন, “৩ সপ্তাহ বয়সি এক নবজাতক ঠাণ্ডায় মারা গেছে। এর আগের ৪৮ ঘণ্টায় আমাদের কাছে পাঁচ দিন ও এক মাস বয়সি দুই নবজাতককে আনা হয়। তারাও ঠাণ্ডার কারণে মারা গেছে।”
ইজরায়েলি হামলায় ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হওয়া হাজার হাজার মানুষ তাঁবু টানিয়ে রাত কাটাচ্ছে। সেখানে শীতের রাতে উষ্ণ থাকার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই।
বৃহস্পতিবার সিলা মাহমুদ আল ফাসি নামের শিশুর দেহ অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। ডাক্তাররা শিশুটির কাছে পৌঁছানোর আগেই শিশুটির ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তাকে হাইপোথার্মিয়া (শীতজনিত মৃত্যু) থেকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
চিকিৎকরা জানান, সকালে যখন তার মা তাকে স্তন্যপান করাতে যাচ্ছিলেন, ঠাণ্ডার কারণে আমরা শিশুটির নীল হয়ে যাওয়া মুখ থেকে রক্ত বের হতে দেখে পাই।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক ড. মুনির আল-বুরশ সামাজিকমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “অনেক শিশু শীতের তীব্রতার কারণে মারা গেছে।”
আরেকটি পোস্টে তিনি গাজার তাঁবুগুলোকে মৃত্যুর ফ্রিজ বলে বর্ণনা করেন। শীতের কারণে আরও দুই শিশুর মৃত্যুর কথা উল্লেখ করেন তিনি।
খান ইউনিস হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ও প্রসূতি বিভাগের প্রধান আহমেদ আল ফাররা বলেন, “শিশুগুলো ছিল ৩ দিন ও ১ মাস বয়সি।”
তিনি আরও বলেন, “এই মৃত্যুগুলি গাজার পরিস্থিতির গুরুতর অবস্থা তুলে ধরে। ইজরায়েলি গোলাবর্ষণ থেকে বাঁচতে সেখানে কয়েক লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি পরিবার অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছে।”
জাতিসংঘ আহ্বান জানিয়ে বলেছে, গাজার স্কুল ও হাসপাতালসহ সব জায়গায় হামলা হচ্ছে। গাজায় যুদ্ধবিরতি অতিপ্রয়োজনীয়, যা দীর্ঘ বিলম্বিত হয়েছে। এ নিয়ে বিশ্বের সব দেশকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
এসবের মধ্যে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের নিয়ে জেরুজালেমের পবিত্র আল আকসা মসজিদ চত্বরে ঢুকেছিল ইজরায়েলি জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গিভির। এ নিয়ে জেরুজালেমে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
উগ্রপন্থি বেন গিভির যেন নিরাপদে প্রার্থনা করতে পারেন, সেজন্য আল আকসা চত্বরে ব্যাপক সেনা মোতায়েন করে ইজরায়েল। যদিও চুক্তি অনুযায়ী, ইহুদিদের আল আকসায় প্রার্থনা করা নিষিদ্ধ। ওই সময় মসজিদে মুসল্লিদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সূত্র: মিডেল ইস্ট আই