
খোলা কথা
রিফাত চৌধুরীপ্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৫
১. শুধু আইন পাশ করে সমাজ বিপ্লব আনা সম্ভব নয়, এমনকি মূল্যবোধ এবং মানসিক পরিবর্তন ঘটানোও সম্ভব নয়। বিশ্বে এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি যেখানে এগুলো বাদ দিয়ে সমাজ বিপ্লব আনা সম্ভব হয়েছে। একমাত্র আন্দোলনের মাধ্যমেই সমাজ বিপ্লব আনা সম্ভব।
২। পুলিশ না হাতি। দেশে যদি সত্যিই পুলিশ থাকবে তাহলে পথে-ঘটে এসব হয় কেমন করে? আসলে পুলিশ থেকেও নেই, তারা সবাই চোখ বন্ধ করে বসে আছে। নইলে কি এই শহরটার এমন দুর্দশা হয়?
৩। মানুষ যত দায়িত্বশূন্য হয়, সমাজিক পরিপ্রেক্ষিতে তত সে নিজের ব্যক্তিগত সমস্যার প্রতি মনোনিবেশ করতে পারে।
মানুষ দায়িত্বহীন ভাবে বাঁচতে পারে না। কারণ তাতে তার সৃজনীশক্তি স্বাধীনতা ও সম্মান সবই বাধাপ্রাপ্ত হয়। অতএব শুরু হয় আত্মসচেতনা ও আত্মনির্ভরতার প্রয়াস।
৪। নজরুল ইসলাম যে খাঁটি বাঙালী কবি ছিলেন, তার প্রমাণ তিনি তাঁর দুই ছেলের খাঁটি বাঙালী নাম রেখেছিলেন, আরবী নাম নয়। আর ‘ইশারা’, ‘রুমাল’, ‘আসবাব’, ‘কারখানা’ শব্দগুলি সমস্ত হিন্দু-মুসলমান বাঙালীই ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু ‘গোসল’, ‘পানি’, ‘শাদি’, শব্দগুলি মুসলমান বাঙালিরাই শুধু ব্যবহার করেন।
৫। আমার প্রয়োজন হয় মানসিক ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য সাংস্কৃতিক আহার।
৬। বড়লোকের উপরে সকলেরই প্রচন্ড রাগ দেখতে পাই অথচ নিরাব্বই ভাগ মানুষই বড়লোক হবার, যেন-তেন প্রকারেণ বড়লোক হবার স্বপ্ন দেখে। এ এক আশ্চর্য ব্যাপার। সত্যি!
৭। সাকসেফুল হলেই যে মানুষকে অমানুষ হয়ে যেতে হবে তার কোন মানে নেই। মনুষ্যত্ব না থাকলে আর মানুষের বাকি কি থাকল ?
৮। আমি যা কিছুই করি না কেন জীবনের সব ক্ষেত্রেই এক নম্বর হতে চাই। দু নম্বর তিন নম্বর নয়,
এক নম্বর। এক নম্বর হওয়ার জেদ যে করবে, তাকে অনেক কিছু হারাবার জন্যে তৈরি হয়েই সেই লক্ষ্যের দিকে এগোতে হবে।
৯। দেশের দুর্দিনে বাঙালীর ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রথমত চরিত্র বলের উন্নতি প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, স্বাধীনভাবে জীবিকা নির্বাহের চেষ্টায় আত্মনিয়োগ। কারণ চারিত্রিক বিপর্যয়ই আজকে বাংলার সাহিত্য শিল্প ও জীবন বিপন্ন করে তুলেছে।
১০। সংবাদপত্র শাসকদল ও সরকারের আজ্ঞাবহ।
১১। পদ্মা সেতুকে গ্রাস করল রাজনৈতিক রাহু।
১২। জীবন আর মৃত্যুর আলাদা কোন অর্থ নেই। জীবন বা মৃত্যু দুটোই সমান সমান।
১৩। খাঁটি ধার্মিক লোক এ দুনিয়াতে আপনি কখনোই পাবেন না। সৎ একজন মানুষের প্রতি আমদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত এমনকি মানবিক দূর্বলতা থেকে তিনি মুক্ত না থাকলেও।
১৪। বাংলাদেশের সংবিধান নাগরিকদের প্রকৃতপক্ষে একটি অধিকারই দিয়েছে, তা হল ভোটাধিকার। আর এই মূল্যবান অধিকারটি প্রয়োগের ফলে যে জনপ্রতিনিধিদের হাতে দেশ শাসনের ভার তুলে দেওয়া হয় প্রতি পাঁচ বছর অন্তর প্রতিদানে তাঁরা সাধারণ মানুষের কথা ভুলে যেয়ে দলীয় স্বার্থকেই বড় করে দেখেন। এটাই বাংলাদেশের রাজনীতির এক বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ দিক। তাই রাজনৈতিক স্বার্থেই চলে দল বদলের খেলা। আর সাধারন মানুষ শুধু সমস্যার বোঝা নিয়ে ফুটবলের মতো একের পা থেকে অন্যের পায়ে ঘুরে বেড়ায়।
সাধারণ মানুষ চায় চিকিৎসার সুযোগ। পরিবহন সমস্যার সমাধান, সন্তানদের শিক্ষার ব্যবস্থা আর অন্নবস্ত্রের সংস্থান, একটু মাথা গোঁজার জায়গা। এই নূন্যতম প্রয়োজনগুলি মিটলেই সকলেই খুশি। বারবার কৃতজ্ঞচিত্তে সরকারের জয়ধ্বনি করবে। সাধারণ মানুষের কাছে দল বা মন্ত্রী বড় নয়। তার বাঁচতে চায়, বাঁচার সুযোগের জন্যে তীর্থের কাকের মতো সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকে।
১৫। ধর্ম প্রশ্ন করলেন, পৃথিবীতে আশ্চর্য কী ? ভাঙ্গা মসজিদের ইমাম বললেন, বাজারের সকল সামগ্রীই অগ্নিমূল্য, তথাপি কোন সামগ্রীই অবিক্রিীত পড়ে থাকে না।
১৬। বাংলাদেশে যেখানে পরিবার পরিকল্পনার সামগ্রী পৃথিবীর সবচেয়ে কম মূল্যে বিক্রি হয় এবং গরিবদের বিতরিত হয় বিনামূল্যে, সেখানে পাশে অপুষ্টিতে ভরা শিশুকে রেখে যে জননী পৃথিবীতে আরও একজনকে আনতে চায় তার ভাববার দরকার আছে কি ?
১৭। রেস্তোরাঁর বাংলা কি ? নেই। অন্তত: এমন কোন বাংলা শব্দ গঠন করা যাবে যা দিয়ে রেস্তোরাঁ বলতে যা কিছু বোঝায় তার সবটুকু বোঝা যাবে। অতএব রেস্তোরাঁই বাংলা। যেমন স্টেশন বাংলা, ট্রেন বাংলা, পোস্টকার্ড বাংলা, ক্রিকেট বাংলা, বাংলা জানে কেমন করে অপরের ঝুলির ধন আত্বসাৎ করে ধনী হতে হয়। তাই বাংলা এমন ধনী। অবশ্য আত্বসাৎ করা শব্দটিতে ধ্বনিগত তারতম্য হয়ত কিছু ঘটে। তা ঘটুক। সেটা এমন কিছু অঘটন নয়।