খালেদা জিয়া ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যাচ্ছেন

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : জানুয়ারি ০৬, ২০২৫

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা রোববার রাতে তার বাসভবন ফিরোজায় সাক্ষাৎ করেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাওয়ার আগে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

রোববার রাত ৮টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্যরা ফিরোজায় ঢোকেন। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন: খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

এছাড়া লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রমও বৈঠকে যোগ দেন। পরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “উন্নত চিকিৎসার জন্য ৭ জানুয়ারি রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। সেই কারণে আমরা জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তাকে বিদায় শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলাম। আমাদের সাথে কথা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা দোয়া চেয়েছি, আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন। রাজনৈতিক কোনো আলোচনা হয়নি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। গণতন্ত্র ও জনগণের পক্ষে কাজ থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন।”

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, সব কিছু ঠিক থাকলে খালেদা জিয়া ৭ জানুয়ারি রাত ১০টায় কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। সেখানে উন্নত চিকিৎসার পর যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশে ফেরার পথে তিনি ওমরাহ পালন করতে পারেন। সফরসঙ্গী হিসেবে অন্তত ১৬ জনের একটি তালিকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে লন্ডন গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া এবং একই বছরের অক্টোবর মাসে দেশে ফিরে আসেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড হয়। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি থাকার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে তার সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়। পরবর্তী সময়ে প্রতি ৬ মাস পরপর এ মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়।

৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি ও ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বহুবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে এবং দিনের পর দিন হাসপাতালে কাটাতে হয়েছে। আওয়ামী সরকার তাকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। পরে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে তার অস্ত্রোপচার দেশেই করা হয়।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়া হয়।