কোটাবিরোধীন আন্দোলন নিয়ে তারকাদের মন্তব্য

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : জুলাই ১৬, ২০২৪

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল সারা দেশ। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে বিনোদন জগতের প্রিয় মানুষেরা তাদের ফেসবুক পোস্টে নিজ নিজ মন্তব্য শেয়ার করছেন।

চিত্রনায়িকা পরীমনি আহত এক শিক্ষার্থীর ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, “নারীর প্রতি সহিংসতায় আপনার জবান বন্ধ থাকলে আপনি মুনাফিক।”

শবনম বুবলী লিখেছেন, “শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরবে কেন?”

নিলয় আলমগীর লিখেছেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আজকের ছাত্রছাত্রীরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তারাই একটা সময় দেশের হাল ধরবে। এত এত ছাত্রছাত্রী ভুল দাবি করতে পারে না। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়েও বলছি, দয়া করে কোটা সংস্কার করে দিন। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারকে যে সম্মান এবং ভালোবাসা আপনি সব সময় দেখিয়েছেন, তার জন্য আমরা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষের কাছে মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবার এখন হাসির পাত্র। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানের জায়গাটা ঠিক রাখতে হলেও কোটা সংস্কার মেনে নিন। আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের এই দুরবস্থা সহ্য করার মতো না। পুরো জাতি আপনার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে।”

কনটেন্ট ক্রিয়েটর সালমান মুক্তাদির লেখেন, “এমন কোনো ছাত্র আছেন, যিনি হামলার শিকার হয়েছেন অথবা হলে ঢুকতে পারছেন না? আমি আপনাদের খেয়াল রাখব।… কারও যদি থাকার জায়গার প্রয়োজন হয় অথবা চিকিৎসাসেবার প্রয়োজন হয়, আমি আছি।… আমি সত্যিই ভেঙে পড়েছি, বিব্রত বোধ করছি।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ ফেসবুকে লিখেছেন, “আমার ক্যাম্পাস রক্তাক্ত কেন? শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরবে কেন?”

নির্মাতা সুমন আনোয়ার লেখেন, “দুর্দান্ত ঢাকা, উত্তেজিত দেশ। ঘুরে দাঁড়াবেই বাংলাদেশ।”

নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদ লেখেন, “একের পর এক ভুল। সব পক্ষেরই ভুল। যুক্তি, চিন্তা, স্ট্যাটিকস— সব ভুলে বসে আছি সবাই। হুজুগ আর ক্ষমতা লড়ছে। সংলাপ বসে আছে অসহায় হয়ে।”

নির্মাতা খিজির হায়াত খান লিখেছেন, “আমাদের আগামীরা আজকে দেশব্যাপী রাজপথে। ওদের স্লোগান নিয়ে অনেক প্রশ্ন কিন্তু কেন এই স্লোগান সেটা নিয়ে কোনো কথা নাই। ন্যায্য অধিকারের আন্দোলন কাউকে রাজাকার বানায় না, বরং ওদের হাত ধরেই স্বাধিকার আসে। আমি ওদের পক্ষে দাঁড়ালাম।”

নির্মাতা রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত লেখেন, “এরা বুক ফুলিয়ে যতই জয় বাংলা বলে চেঁচাক, ১৯৭১-র মহান মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ২০২৪ এর আজকের এই ছাত্রলীগের কোনো ধরনের সম্পর্ক আছে বলে আমি মনে করি না। আজ এরা চেতনাহীন, পথভ্রষ্ট, অর্থলোভী পঙ্গপাল ছাড়া কিছুই নয়। আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনায় না গিয়ে এই পঙ্গপাল বাহিনী লেলিয়ে দেওয়া কোন আদর্শের রাজনীতি আমি জানি না। তবে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি বা দর্শনের সঙ্গে তার কোনো মিল নেই, তা ঢের বলতে পারি। এই পঙ্গপাল পুষতে পুষতে কবে গোটা জাতিই চেতনাহীন, পথভ্রষ্ট, ও অর্থলোভী হয়ে যায়!”

চিরকুট ব্যান্ডের শারমিন সুলতানা সুমি লেখেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়, আমাদের প্রজন্ম, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সকলের নিরাপত্তা ও সুদিন; সদ্বিবেচনার সঙ্গে নিশ্চিত করার বিনীত অনুরোধ রইল।” শিক্ষার্থীদের সমর্থন দিয়ে চিরকুটের ফেসবুক পেজ থেকেও পোস্ট করা হয়েছে।

নির্মাতা আশফাক নিপুণ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে কোটা আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ফেসবুকে এ প্রসঙ্গে শোবিজের মানুষদের নীরব থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নির্মাতা মিশুক মনি।

কোটাবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন অনেক তারকা। মিছিলে ‘রাজাকার’ স্লোগান দেওয়ার নিন্দা জানিয়েছেন তারা। লেখক ও নির্দেশক মাসুম রেজা ফেসবুকে লিখেছেন, “যারা একাত্তরে পরাজিত হলো তাদের পরিচয়ে নিজেদেরকে পরিচিত করছেন! কী দারুণ মেধাবী আপনারা! এত মেধা আপনাদের কোন প্রেতাত্মা সাপ্লাই করছে!”

অভিনেতা রওনক হাসান লিখেছেন, ‘কোটা সংস্কার হতেই পারে।..কিন্তু হাজারো সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের এই আন্দোলনকে সুকৌশলে যেদিকে প্রবাহিত করা হলো তা দেখে এটাই স্পষ্ট এর মাস্টারমাইন্ড কারা।”

অভিনেত্রী শামীমা তুষ্টি লেখেন, “যারা নিজেদের রাজাকার বলতেও দ্বিধা করে না, আবার তারাই সরকারি চাকরির জন্য কোটা চায়, তাদের হাতে দেশ গেলে কী হবে সেটাই ভাবছি।”