কামরুজ্জামান কামু
কামরুজ্জামান কামুর তিনটি কবিতা
প্রকাশিত : আগস্ট ১০, ২০২৩
রক্তাভ মেরুন
একটিমাত্র তারাজ্বলা আকাশের
বেদনায় রক্তাভ মেরুন হয়ে জেগে ওঠা
ওগো ফুল, গাছের গায়ের তারা,
তুমি কেন মানুষের হৃদয়ের মতো স্বাভাবিক
প্রাত্যহিক, অথচ চকচক করতে থাকা এক মালিন্য?
কেন মৌন আর উদাসিনী
মেঘের মতন তুমি ধেয়ে চলো
রাতের বুকের ঘন অন্ধকারে, একা?
কেন কেউ নাই, কেউ নাই
ডাকিনীর ডাক নাই, উড়ন্ত ময়ুর কোনো
বর্ণাঢ্য পালক, ফেলে রেখে যায় নাই
নাই নাই নাই নাই
আসলে কিছুই নাই কিঞ্চিৎ জীবনে;
তাই এই নিকট আকাশ
বিদীর্ণ তারাটিসম একা একা কাঁদে—
যেন কোনো ধ্বনিও নাই তার
আহা রে!
শুধুমাত্র রক্তাভ মেরুন!
হিমালয়ে
কোনো এক হিমালয়ের চূড়ায় বসিয়া
আমি ভব-সংসারের কথা ভাবিতেছি—
মানুষের মস্তিষ্ক রয়েছে একটা খোলের ভেতরে
রক্তক্ষরণ, স্মৃতি, শিহরণ সবকিছু আছে
যারা মারা যায় তাদেরও সকলই থাকে
মৃত্যুর অব্যবহিত পূর্বানুরাগের মতো
পর্বতের গায়ে এসে ধাক্কা খায় মেঘ ও বাতাস—
এখানে বসিয়া আমি সূর্যাস্তের জন্য
অপেক্ষায় অপেক্ষাকৃত অপেক্ষমাণ
রক্তিম গোলাকার বাঁকা ব্যক্তিত্ব বিলুপ্ত—
মাথাহীন কত শব্দ মাথার ওপরে দোলে
দোল খায়! মা-মা, আমি কোথায় যাব?
যাদের মা নাই তারা কোথায় যায়? তারা কেন
আগে মারা যায়? মরে গেলে আমাকে যেন
পুড়ে ফেলা হয়।
এখানে যে বড় বড় গাছগুলি রয়েছে
পাহাড় সমুদ্র গয়নার বাক্স তিমিমাছ
বাড়িঘর হিরো আলম আরাফাত বাইডেন-এমনকি—
এমনকি এই লোহা এই ঘড়ি এই এত এত
জড়-জগতের মাঝে বিচরণশীল
প্রাণ ও প্রকৃতি মাঝে কর্তব্যহীনতা আছে;
এরা যেন মরে না কখনো—
পাখি
ভরদুপুরে ডাকাডাকি
করবে কি আর সকল পাখি
একজনই সেই লালচে ঠোঁটের
একাগ্রতার ডাগর আঁখি
কোন কবিতার কোন চরণে
কখন সোনা মারবে উঁকি
কখন যে সে করবে মার্ডার
হৃদয়জুড়ে বিরাট ঝুঁকি
জামরুলের ওই শাখায় বসা
সেই পাখিটার পালক আঁকি
রোমান্টিক এই কবির বুকে
তোমাকে যে কোথায় রাখি
ওগো পাখি, আকাশ-ভরা
পক্ষীকুলের শিরোমণি
ডাক শুনলেই বুঝতে পারি
দুপুর চিরল কীসের ধ্বনি