সংগৃহীত
এবং পথচারী
নাঈমুল হাসান হিমেলপ্রকাশিত : মার্চ ০৮, ২০১৮
বারান্দায় টুপ টুপ করে পানি পরছে, শব্দটা একটা ছন্দের মত। অবিরাম চলছে শব্দটা, টুপ টুপ শব্দটার সাথে হৃদ স্পন্দনের ধুপ ধুপ শব্দটার একটা সম্পর্ক হয়ে গেছে যেন।
গাঢ় নীরবতার মাঝে যে কোন শব্দই আরও স্পষ্ট শোনায়। ঘরে পূর্ব দিকের টিনের নিচের কাঠে ঘুন পোকাটাও সচল হয়েছে, বড্ড তারা যেন তার। ঘুন পোকার শব্দটা রহস্যময় লাগছে। তাল পাতার বাতাস করছিল কেউ,ভাল লাগছিল তখন এখানে ভীষন গরম।
কেউ কি আছ?
শুনতে পাচ্ছো কেউ?
একটা ইঁদুর যেন পায়ের পাতায় তার দাঁত চালাচ্ছে। একটা নয় আরেকটা এসেছে। দুয়ে মিলে ভক্ষন করছে। হঠাৎ নিজের চেহারাটা মনে করতে পারছি না। কত শত বার আয়নায় নিজেকে দেখেছি আর আজ একা নিজের অবয়ব খুঁজে ফিরছি।
শিমুল গাছে কি ফুল ফুটেছে ?
না!এটাও জানা গেল না।
পকেটে এই মাসের মাইনেটা ছিল, কি জানি কে পকেটে হাত দিয়ে নিয়ে গেল। রাস্তায় অর্ধ মৃত মানুষের পকেটও নিরাপদ নয়। গলিতে ভারি টায়ারের নিচে পিষ্ট মস্তিষ্কটাও কাউকে একটু সচেতন করে না। গলগলে রক্ত ধুয়ে যায় ড্রেনে পতঙ্গতে খায়। `ইশ` বলে পাশ কাটিয়ে চলে যায় পথচারি, এই ঘন উষ্ণ রক্তও কোন পথচারিকে ওভারব্রিজে উঠার ভয় বা আগ্রহ কোনটাই জাগাবে না। থুতু ছিটিয়ে দ্রুত চলে যায় গাড়ি চালকরা কি বোঝে কতটা ভুল ছিল তার। হয়তো বোঝে হয়তো না বোঝার ভান করে।
থাক আর নাই বা ভাবলাম।
মাসে ৫ তারিখ আজ,
ব্যাংক থেকে মাসের টাকাটা তুলে সবে বেরিয়েছি। মাসের এই একটা দিন বড় আনন্দে কাটে। পকেটে নতুন টাকা। একটা সিগারেট ধরিয়ে মাত্র রাস্তায় নেমেছি। সারা দিনের ক্লান্তি কি আর শরীরটাকে আর ওভার ব্রীজের দিকে টানে?
আমারও টানে নি ,সোজা ভারি টায়ারের নিচে।
মর্গে শুয়ে শর্ট কাট রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করছি।আফসোস অসীমতায়, এই শূণ্যতায় যে কোন শর্ট কাট হয় না ।