সংগৃহীত ছবি
একুশে বইমেলার শেষ সময়ের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে
নিজস্ব প্রতিবেদকপ্রকাশিত : জানুয়ারি ২৭, ২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে বাঙালির প্রাণের ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৪’। বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে মাসব্যাপী চলবে এই মেলা। তাই জোরেশোরে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি।
দেখা গেছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল মাঠজুড়ে পুরোদমে চলছে স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণকাজ। বাঁশের খুঁটি ও ফ্রেমিংয়ের কাজ প্রায় শেষের দিকে। কিছু কিছু স্টলের কাঠামো এরইমধ্যে দাঁড়িয়ে গেছে। কেউ আবার কাউন্টার শেল্ফ তৈরি, রং-চং আর লাইটিংয়ের কাজে ব্যস্ত।
মেলার প্যাভিলিয়ন তৈরিতে কর্মরত কয়েকজন শ্রমিক বলেন, অল্প সময়ের মধ্য চাপ নিয়ে স্টল-প্যাভিলিয়ন করতে হয়। সময় একটু বেশি পেলে ভালো হয়। তারপরেও অর্ধশতাধিক শ্রমিক ও মিস্ত্রি পুরোদমে কাজ করছেন। স্টল নির্মাণ, বইয়ের তাক নির্মাণ এবং ভেতরের ডেকোরেশনের জন্য আলাদা আলাদা মিস্ত্রি কাজ করছেন। আশা করছি, মেলা শুরুর আগেই সব কাজ শেষ হবে।
প্রকাশনীর মালিক ও তাদের প্রতিনিধিরা বলছেন, কাঠমিস্ত্রি, রং মিস্ত্রি, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি, ডিজাইনারসহ নানা পেশার মানুষের শ্রমে-ঘামে গড়ে ওঠে একেকটি স্টল। আশা করছি, এবারও মেলায় প্রচুর পাঠক আসবে।
বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমি মানবসম্পদ উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, মেলার পূর্বপ্রস্তুতি ও পর্যবেক্ষণের জন্য সাতটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করি গতবার যেসব অভিযোগ ছিল এবার থাকবে না। প্রকাশনী নিয়েও অস্থিরতা নেই।
তিনি আরও বলেন, বিগত বছরের মতো এবারও মেলার অবকাঠামোগত বিন্যাস অপরিবর্তিত থাকছে। একটা গলির সামনে দাঁড়ালে এর শেষ মাথা দেখা যাবে। গুচ্ছ আকারে থাকবে না। প্যাভিলিয়ন ও স্টলের লাইন আলাদা থাকবে, যাতে স্টল খুঁজে পেতে সহজ হয়।
এদিকে বইমেলা ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যা থাকছে-
১. প্রত্যেক দর্শনার্থীকে আর্চওয়ে দিয়ে মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে হবে।
২. বইমেলার ভেতরে ও বাইরে পর্যাপ্ত সংখ্যক সাদা পোশাকে ও ইউনিফর্মে পুলিশ ডিউটিতে নিয়োজিত থাকবে।
৩. সিসিটিভি দিয়ে মেলার ভেতরে ও চারপাশে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হবে।
৪. নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় থাকবে ওয়াচ টাওয়ার ও ফায়ার টেন্ডার এবং প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও থাকবে।
৫. অনুষ্ঠানস্থল সুইপিং করা, সাদা পোশাকে বিশেষ টিম মোতায়েন, বিলবোর্ড, ব্যানার ও মাইকিং করে দিক-নির্দেশনা দেয়া হবে।
৬. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মনিটরিং এবং মেলাপ্রাঙ্গণ ড্রোন দিয়ে মনিটরিং করা হবে।
৭. সোয়াট ও বোম্ব ডিসপোজাল টিমও স্ট্যান্ডবাই থাকবে বইমেলায়।
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, বইমেলাকে কেন্দ্র করে আমাদের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে জঙ্গিবাদ-মৌলবাদ, চুরি-ছিনতাই, অগ্নিকাণ্ড এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা। নতুন আরেকটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মেট্রোরেল। কারণ আমরা দেখেছি নাশকতাকারীরা মেট্রোরেলেও নাশকতা করার চেষ্টা করেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বর্ধমান হাউজ প্রাঙ্গণে বটতলায় চটের ওপর ৩২টি বই সাজিয়ে বইমেলার গোড়াপত্তন করেছিলেন চিত্তরঞ্জন সাহা। যা আজ অমর একুশে বইমেলায় পরিণত হয়েছে।