সংগৃহীত ছবি
একাকী সুখী হওয়ার ১০ উপায়
লাইফস্টাইল ডেস্কপ্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২৪
মানুষ সামাজিক জীব। সমাজের সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকি আমরা। একা হতে কে ই বা চায়? তবু বাস্তবতা মেনে নিতে হয়। সম্পর্ক ভেঙে গেলে মানুষ একা হয়ে যায়। প্রিয়জন হারিয়ে একা হয় কেউ। আবার পড়াশোনা বা কাজের প্রয়োজনে আপনজনদের রেখে বহুদূর যেতে হয়। অচেনা পরিবেশে মানুষ তখন একা হয়ে যায়। একাকীত্ব যখন ডানা মেলে তখন দুঃখ এসে দাঁড়ায় দরজায়। সেই দুঃখকে পাশ কাটিয়ে সুখী হতে চায় সবাই।
আপনি কি একাকীত্বে ভুগছেন? অবসাদ রোজ গ্রাস করে নিচ্ছে আপনাকে? তবে একাকী সুখী হওয়ার কিছু কার্যকরী উপায় চলুন জেনে নেওয়া যাক-
নিজের মনের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলুন
আগে নিজেকে ভালবাসতে শিখুন। আপনি কী করতে ভালোবাসেন তা খুঁজে বের করুন। মনোবিদরা বলে থাকেন- সুখী হতে নিজেকে সময় দিন, নেতিবাচক স্ব-কথোপকথন এড়িয়ে চলুন এবং নিজের গুরুত্ব বুঝতে শিখুন। এমন কিছু কাজ করুন যা মনকে ভালো রাখে। যেমন- জার্নালিং, মননশীলতা, থেরাপি, যোগব্যায়াম ইত্যাদি। এই কাজগুলো মন ও শরীরের সংযোগ বিকাশে সাহায্য করে।
চারপাশের পরিবেশে নজর দিন
চারপাশের পরিবেশ মনের ওপর প্রভাব ফেলে। পরিবেশ যেন অনুকূলে থাকে খেয়াল রাখুন। নিজের ঘরটি মনমতো সাজান। নিজের জন্য একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করুন। আপনার বাড়ি বা কক্ষকে পছন্দের জিনিস দিয়ে সাজাতে পারেন। দেখলেই ভালো লাগা কাজ করবে সেখানে। এতে অন্যান্য কাজের আগ্রহ বাড়বে।
অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করা থেকে বিরত থাকুন
প্রায়ই কি আপনার মনে হয়, চারপাশে বসবাসরত সবার অনেক কিছু আছে। সেই তুলনায় আপনার কিছুই নেই কিংবা আপনি কিছুই করতে পারেননি। এই নেতিবাচক ধারণাগুলো আপনাকে কষ্ট দিতে পারে। নিজের যা আছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়াতে মানুষ তাদের জীবনের সেরা দিকগুলো দেখায়, যা দেখে মনে হতে পারে তারা কতই না সুখী। নিজেকে তখন ব্যর্থ মনে হতে পারে। মানসিক চাপ বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে কিছুদিন সোশ্যাল মিডিয়া এড়িয়ে চলুন। নিজেকে সময় দিন। মনে রাখবেন আপনার জীবন আপনার পরিবারের কাছে অনেক মূল্যবান এবং আপনি নিজেই একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
ভালোলাগার প্রতি গুরুত্ব দিন
আপনি কী করতে ভালোবাসেন তা খুঁজে বের করুন। এমন কিছু কাজ শিখুন যা আপনার মনকে প্রশান্তি দেবে। অন্যের ভালোলাগাকে আপনার পছন্দের ওপর প্রাধান্য দিবেন না। এতে মানসিক প্রশান্তি নষ্ট হতে পারে। নিজের সৃজনশীলতা খুঁজে বের করুন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করুন। সেই কাজটি অতি সামান্য হলেও শান্তি দিবে।
প্রতিদিন ব্যায়াম করুন
নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করুন। ব্যায়াম করার জন্য ওয়াকিং গ্রুপে যোগদান, রান ক্লাবের জন্য সাইনআপ, যোগব্যায়াম ক্লাসে যাওয়া, ভারোত্তোলন শেখা প্রভৃতি কাজ নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়াম শরীর ও মনকে সুস্থ রাখে।
একা থাকার গুরুত্ব বুঝুন
একা থাকার অনেক সুবিধা আছে। স্বনির্ভরশীল ব্যক্তিরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কারো উপর নির্ভর করে না। তারা সঙ্গীর চাপ ছাড়াই তাদের পছন্দের জিনিসগুলো করতে পারেন। দিনের কিছুটা সময় একান্তে সময় কাটান। এটি মন ও মস্তিষ্কে প্রশান্তি দিবে।
নিজেকে প্রাধান্য দিন
খুঁজে বের করুন কী করতে আপনি ভালোবাসেন। নিজের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটান। এতে করে নিজেকে বুঝতে শিখবেন। গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করবেন না। এটি আপনাকে মানসিক চাপে ফেলতে পারে। আপনি যেই কাজ করতে ভালোবাসেন সেটি করুন, অপছন্দের কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
সামাজিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করুন
হয়তো অনেকদিনের সম্পর্কে ভেঙে যাওয়ায় আপনি একা হয়ে গেছেন। কিংবা কাজের প্রয়োজনে নতুন কোনো জায়গায় আছেন যেখানে আপনার পরিবার বলতে কেউই নেই। এমনটা হলে নতুন মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করুন। বিভিন্ন সামাজিক কার্যকলাপে যুক্ত হোন যার ফলে সামাজিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পায়। সমাজ কল্যাণমূলক কিছু কাজ করুন। এতে আত্মতৃপ্তি পাবেন, সুখেও থাকবেন।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা করুন
আত্মনির্ভরশীল হওয়ার চেষ্টা করুন। ভবিষ্যতের জন্য কিছু সঞ্চয় করুন। কোথাও ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করুন। একা বেড়াতে গেলে আপনি নিজেকে আরও ভালোভাবে বুঝতে শিখবেন। আর্থিকভাবে স্বনির্ভরশীল ব্যক্তিরা অনেক বেশি সুখী হয়ে থাকে।
সাহায্যের জন্য ইতস্ততা কম করুন
কিছু মানুষ আছে যারা তাদের কষ্ট, সমস্যা বা অনুভূতি অন্যের কাছে ব্যক্ত করতে পারেন না। এদের বলা হয় অন্তর্মুখী। বহির্মুখী মানুষরা সহজেই তাদের সমস্যা ব্যক্ত করতে পারেন। যার ফলে তারা অন্তর্মুখী মানুষদের তুলনায় অনেক বেশি সুখী। সমস্যায় পড়লে সবাইকে জানালে হয়তো আপনি কোনো সাহায্য পেতে পারেন। এতে কষ্টের বোঝা অনেকটাই কমতে পারে। তাই ভয় বা ইতস্ততা দূরে রেখে নিজের সমস্যা অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নিন।
একা থাকা কষ্টের মনে না করে উপভোগ করতে শিখুন। খুব বেশি মানসিক অবসাদে ভুগলে মনোবিদের সাহায্য নিন।