উদ্ভিদবিজ্ঞানী জানকী অম্মলের আজ জন্মদিন
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : নভেম্বর ০৪, ২০২৪
উদ্ভিদবিজ্ঞানী জানকী অম্মলের আজ জন্মদিন। ১৮৯৭ সালের ৪ নভেম্বর কেরালার থলসেরীতে তার জন্ম। বাবা দেওয়ান বাহাদুর এডভালথ কাক্কট কৃষ্ণন, মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির উপ-বিচারক ছিলেন। মা দেবী ছিলেন জন চাইল্ড হ্যানিংটন ও কুঞ্চি কুড়ুম্বির অবৈধ কন্যা।
তার ছয় ভাই ও পাঁচ বোন ছিল। তার পরিবারে মেয়েদের বৌদ্ধিক চর্চায়, বিশেষত ললিতকলা চর্চায় উৎসাহ দেওয়ার চল ছিল। কিন্তু অম্মল বিষয় হিসাবে উদ্ভিদবিজ্ঞান বেছে নেন।
তেল্লিচেরিতে স্কুলের পড়াশোনার পাট শেষ করে জানকী মাদ্রাজ চলে যান। সেখানে কুইন মেরি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯২১ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে উদ্ভিদবিজ্ঞানে সাম্মানিক স্নাতক ডিগ্রি পান।
প্রেসিডেন্সি কলেজের শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় , জীবকোষ-সুপ্রজননবিদ্যার প্রতি তার অপার কৌতূহল তৈরি হয়। জানকী অম্মল চেন্নাইয়ের মহিলাদের ক্রিশ্চান কলেজে শিক্ষকতা করেন, যেসময় তিনি বারবার ছাত্রীবৃত্তি পেয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে অচির প্রবাসে ছিলেন।
সেখানে তিনি ১৯২৫ সালে তার স্নাতকোত্তর উপাধি লাভ করেন। ভারতে ফিরে আসার পরও তিনি উইমেনস খ্রিস্টান কলেজে পড়ানো চালিয়ে যান। ১৯৩১ সালে তিনি প্রাচ্যের প্রথম বারবার ফেলো হিসাবে পুনরায় মিশিগান যান এবং তার ডক্টর অফ সায়েন্স সম্পন্ন করেন ১৯৩১ সালে।
২০০০ সালের ১ জানুয়ারি গোপিকৃষ্ণ ও ওয়ান্ডানা কুমারের প্রকাশিত একটি ইন্ডিয়া কারেন্টস পত্রিকা প্রবন্ধে জানকী শতাব্দীর ভারতীয় আমেরিকানদের মধ্যে উল্লেখিত হন। সেখানে লেখা হয়, যে যুগে বেশিরভাগ মহিলারা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়েননি, একজন ভারতীয় মহিলার আমেরিকার সেরা সর্বজনীন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি অর্জন করা এবং তার নিজ ক্ষেত্রে মৌলিক অবদান রাখতে পারা সম্ভবপর?
কেরলে জন্মগ্রহণকারিনী আম্মল যুক্তিযুক্তভাবে উদ্ভিদবিদ্যায় পিএইচডি প্রাপ্ত প্রথম মহিলা এবং ১৯৩১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, তার মাতৃশিক্ষায়তন, মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা ডিএসসি honoris causa সম্মান প্রাপ্ত সামান্য কিছু এশিয়ান মহিলাদের মধ্যে একজন।
অ্যান আর্বারে তার বসবাস সময়কালে তিনি মার্থা কুক বিল্ডিংয়ে সর্বমহিলা বাসভবনে বাস করতেন এবং উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক হারলে হ্যারিস বার্টলেটের সাথে কাজ করেন। তিনি জানকী ব্রিঞ্জাল নামে পরিচিত একটি ক্রস বিকাশ করেছিলেন, বিঞ্জাল শব্দটি বেগুনের ভারতীয় নাম ছিল।
তার পিএইচডি থিসিস শিরোনাম নিকন্দ্রা ফিজিওলাইডসে ক্রোমোসোম স্টাডিজ ১৯৩২ সালে প্রকাশিত হয়। আম্মল ১৯৩৫ সালে ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমির এবং ১৯৫৭ সালে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স একাডেমির ফেলো নির্বাচিত হন। ১৯৫৬ সালে বোটানি ও সাইটিজেনটিক্সের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক এল এল ডি প্রদান করে বলেন, শ্রমসাধ্য ও নির্ভুল পর্যবেক্ষণ করার ক্ষমতা দ্বারা ধন্য, তিনি এবং তার পেটেন্ট একনিষ্ঠ এবং নিবেদিত বৈজ্ঞানিক কর্মীদের জন্য আদর্শ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৯৮৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান। ১৯৭৭ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী প্রদান করে। ২০০০ সালে ভারত সরকারের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় তার নামে শ্রেণীবিন্যাসবিদ্যার জাতীয় পুরস্কার শুরু করেন।