আবুল কাসেম হায়দারের ‘একটি নক্ষত্রের বিদায়’
তারেক মাহমুদপ্রকাশিত : মার্চ ১৯, ২০২০
আবুল কাসেম হায়দার দীর্ঘ চার দশক লেখালেখি করছেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি জাতীয় পত্রপত্রিকায় কলাম লিখে আসছেন। তার লেখার প্রধান বিষয়বস্তু বাংলাদেশের শিক্ষা, অর্থনীতি, সমাজনীতি, পোশাকশিল্প, সাম্প্রতিক বিষয়াদি, উন্নয়ন এবং সম্ভাবনার দিক। এ পর্যন্ত তার প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা পঞ্চাশের কাছাকাছি।
আবুল কাসেম হায়দার জীবনকে সবসময় ইতিবাচক দিক থেকে দেখেন। সদালাপি একজন মানুষ। বাংলাদেশের অন্যতম একজন শিল্পদ্যোক্তা হয়েও অতি সাধারণ জীবন যাপন করেন। যা এ মানুষটির অসাধারণ একটি দিক। তার জীবনযাপনের এইদিন অবশ্যই মুগ্ধ করার মতো। প্রতি বছর বইমেলাতে তার এক বা একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়ে আসছে। গত একুশে বইমেলা ২০২০-এ প্রকাশিত হয়েছে তার গ্রন্থ ‘একটি নক্ষত্রের বিদায়’।
আবুল কাসেম হায়দারের রচনা সহজ এবং প্রাঞ্জল। অনেক জটিল বিষয়কেও তিনি সহজ এবং সাবলীলভাবে প্রকাশ করেন। এটা একজন লেখকের বড় গুণ। পাঠককে আকৃষ্ট করবার ম্যাজিকটি এই লেখকের জানা। প্রথম রচনাটির শিরোনামেই গ্রন্থটির নামকরণ করা হয়েছে। লেখকের দীর্ঘদিনের পেশাগত সহকর্মী ইয়ুথ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব ফিরোজ আলমের অকাল মৃত্যু লেখককে ব্যথিত করেছে। তার স্মৃতিকথা দিয়ে প্রথম লেখা। সেই প্রথম লেখার শিরোনামেই গ্রন্থের নাম ‘একটি নক্ষত্রের বিদায়’।
পরবর্তী লেখার বিষয়বস্তু কবি আল মাহমুদকে নিয়ে ‘কবি আল মাহমুদ: আমার স্মৃতিতে’। ‘সমাজ-শিক্ষা’ এবং ‘ব্যবসা-বাণিজ্য’ দুটি অধ্যায়ে ২৪টি লেখা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ১৬৪ পৃষ্টার ‘একটি নক্ষত্রের বিদায়’ শিরোনামের এই গ্রন্থটি। এই গ্রন্থে যে সমস্ত লেখা প্রকাশিত হয়েছে তার শিরোনামগুলো হলো, ‘একটি নক্ষত্রের বিদায়’, ‘কবি আল মাহমুদ: আমার স্মৃতিতে’. ‘আমাদের চরিত্রে পরিবর্তন চাই: সমাজকে বদলাতে হবে’, ‘উচ্চ শিক্ষায় গুণগত মান উন্নয়নে বাংলাদেশ’. ‘এ্যাক্রোডিটেশন কাউন্সিল একটি আশার আলো’, এক দশকের অর্থনীতি: আগামীর বাংলাদেশ’,‘তৈরি পোশাক শিল্প: নতুন বাজারের সন্ধানে’, ‘স্পিনিং খাতে নীতি সহযোগিতা জরুরি’, ‘শরীয়া ভিত্তিক ব্যাংকিং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গতিময়’, ‘শিল্প বিপ্লবের জন্য মৌলিক ইস্পাত শিল্প কারখানা স্থাপন দরকার’, ‘কিভাবে সঞ্চয় করবেন’, ‘এগিয়ে থাকতে প্রযুক্তি নির্ভরতার বিকল্প নাই’, ‘অলাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ব মিল দ্রুত বেসরকারীকরন অত্যাবশ্যক’, ‘কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন বড় ও মাঝারী শিল্প স্থাপন’, ‘টাকা পাচার ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি’, ‘যে কোন শিল্প স্থাপন সকলের জন্য সমান সুযোগ প্রয়োজন’, ‘অর্থনৈতিক শিল্পাঞ্চল থেকে রপ্তানি শুরু’, ‘পাঁচটি পণ্যের উপর নির্ভরতা তৈরি পোশাক শিল্প ঝুঁকিতে’, ‘রপ্তানি আয় বৃদ্ধির জন্য জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন’,‘বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচক উন্নয়ন পদক্ষেপ’, ‘ব্যাংকিং খাতের উন্নয়নের উপর দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন নির্ভর’, ‘অর্থনীতিতে ফিরে দেখা ২০১৯’, ‘উৎপাদন খাতের পণ্য বহুমুখীকরণ অত্যাবশ্যক’, এবং ‘ভ্যালু অ্যাডেড পোশাক তৈরিতে এগিয়ে আসতে হবে’।
গ্রন্থটির বিস্তারিত আলোচনা এই স্বল্প লেখায় প্রকাশ সম্ভব নয়। এটা কেবলই গ্রন্থেও পরিচিতি মাত্র। তবে সংশ্লিষ্ঠ পাঠকদেও জন্য গ্রন্থটি অতীব মূল্যবান বলে মনে করি। একটি নক্ষত্রের বিদায় প্রকাশ করেছে লেখালেখি। প্রচ্ছদ এঁকেছেন আরিফুর রহমান। মূল্য ৩৫০ টাকা।