আবু তাহের সরফরাজের ৬টি জাগরণী সঙ্গীত
প্রকাশিত : ডিসেম্বর ১৩, ২০২০
বখতিয়ারের ঘোড়া
বখতিয়ারের ঘোড়ার ক্ষুরে উড়ছে ধুলো জমিনে
জ্ঞানের দরজা বন্ধ বলেই আমরা চোখে দেখি নে।
বুকের মাঝে কোরান নিয়ে আমরা ছিলাম জ্ঞানী
দিগ্বিদিকে ছড়িয়েছি তাওহিদেরই বাণী।
নিঃস্ব হয়ে আমরা এখন
ভাবছি এসব খোদার লিখন
আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া ইসলামি জ্ঞান খুঁজিনে।।
ইসলামই একমাত্র বিধান সব মানুষের জন্য
এই চেতনা প্রচার করেই আমরা ছিলাম ধন্য।
কোথায় সে আজ বীরেশ্বর
কাঁপবে মাটি থরো থর
আয় রে ছুটে বখতিয়ারের ঘোড়ার লাগাম তুলে নে।।
যারা ছিল বীর
জ্ঞান গরিমায় একটা সময় যারা ছিল বীর
অজ্ঞানতায় আজকে তাদের অবনত শির।
খেজুর পাতার তখতে বসে করতো শাসন বিশ্ব
এই জগতের কেউ কখনো দ্যাখেনি যে দৃশ্য।
ব্যক্তিগত লাভ ও ক্ষতি
তাদের কাছে তুচ্ছ অতি
শাসন দণ্ড পেয়েও যারা নিঃস্ব মুসাফির।
ওমর আলি আবু বকর— নেই তারা আজ কেউ
কাঁদছে মানুষ, জগৎজুড়ে রক্তনদীর ঢেউ।
মর্দে মুমিন আয় রে ছুটে
গাফলতি নিঁদ যাক রে টুটে
বিশ্ব হয়ে উঠুক মুসলমানের এক শিবির।।
হে ওয়াজি
হে ওয়াজি, ওয়াজ থামাও কোরান-হাদিস পড়ো
আজেবাজে কথা রেখে আল্লাকে ভয় করো।
মাইকে তুমি করছ চিৎকার পারছি না ঘুমোতে
থেকে থেকে দিচ্ছ কোঁতন তাকবিরের ধ্বনিতে।
বলছ তুমি যেসব কথা
ইসলামি জ্ঞান নেই যে সেথা
রাত্রি জেগে মানুষ তবু মাহফিলে হয় জড়ো।।
মুহাম্মদের বাণী একবার করো তুমি স্মরণ
উচ্চস্বরে কোরান পড়তেও করেছিলেন বারণ।
বিরক্ত হয় মানুষ যাতে
সে কাজ তো নেই ইসলামেতে
মুসলমান আজ মূর্খ বলেই ঈমাম তুমি বড়ো।।
ইসলামেরই নাম ভাঙিয়ে অনৈসলামিক কাজে
লিপ্ত তুমি, ভাবছ না এ কাজটা কত বাজে।
শান্তির ধর্ম ইসলাম ওরে
অশান্তি ক্যান আনিস ধরে
তওবা পড়ে এবার তুমি দ্বীনের পথটা ধরো।।
সত্য-ন্যায়ের প্রতীক
সত্য-ন্যায়ের প্রতীক ওগো নবি মুহাম্মদ
পথ হারিয়ে বেপথে আজ তোমারই উম্মত।
যাদের পায়ের নিচে ঊষর মরু পেল প্রাণ
ধূলিমাটির পাপের ধরা পেল পরিত্রাণ।
আজকে তারাই ভীতবিহ্বল
নেই আজাদি নেই বুকে বল
নতুন দিনের সূর্যোদয়ের নেই কারো হিম্মত।।
অন্ধকারের পরদা তুলে আর আসে না ভোর
ঘুমন্ত তাই মর্দে মুমিন রাত্রি ঘনঘোর।
কণ্ঠ তুলে কেউ বলে না
আল্লাহ ছাড়া ভয় করি না
জীবন দিয়েও রাখবো খোদা তোমারই ইজ্জত।।
হেদায়েতের পথ
হেদায়েতের পথ দেখাতে আল্লাহ মেহেরবান
বেহেস্ত হতে দিলেন ধরায় পবিত্র কোরআন।
বিশ্বজগৎ সৃষ্টি যাহার তিনিই প্রজ্ঞাবান
সৃষ্ট সকল কিছুর স্বভাব তারই গোপন জ্ঞান।
যার যে স্বভাব সেই নিয়মে
চলছে সবাই জগৎধামে
মানুষই একমাত্র পারে ভাঙতে সেই বিধান।।
ইচ্ছাশক্তি দিলেন খোদা মানুষের ভেতর
দিলেন আরও ভালো-মন্দ বোঝারও অন্তর।
প্রতিনিধি কোরে খোদা পাঠালেন মানুষ
জ্ঞান অভাবে আজকে তারাই মূর্খ ও বেহুঁশ।
এই প্রকৃতির নিয়মরীতি
সৃষ্ট জগতের সম্প্রীতি
মানুষকে জানাতেই খোদা দিলেন যে কোরআন।।
সংবিধান
একদিন এই বিশ্ব শাসন করবে মুসলমান
কোরান হবে সেই বিশ্বের একক সংবিধান।
বিশ্বজগৎ চলছে মেনে মহান যে আইন
মানুষও চলবে তা মেনে আসবে সুখের দিন।
মানুষ যে প্রকৃতির সন্তান
কোরান হলো তার সংবিধান
এই সত্য একটা সময় হবেই যে প্রমাণ।
অনুসরণ করবে মানুষ সেই সে প্রকৃতি
যার ওপরই আল্লা দিলেন মানব আকৃতি।
সৃষ্টিআইন হয় না বদল
মানুষ পাবে মানুষ আদল
আত্মগত উপলব্ধি সরল পথের জ্ঞান।।
কারণ ছাড়া হয় না কার্য এটাই পরম জ্ঞান
কার্যকারণ সূত্র ধরেই এগোয় যে বিজ্ঞান।
মানুষ সৃষ্টি নয় অনর্থক
খোদার আনুগত্যে সার্থক
সত্যজ্ঞানে উদ্ভাসিত হবে মানব প্রাণ।।