
আবু তাহের সরফরাজের বসন্তের কবিতা
প্রকাশিত : মার্চ ০৪, ২০২৫
জীবনপথের বাঁকে
জীবনপথের বাঁকে
একটা মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে
কোকিল হঠাৎ ডাকে—
বসন্তে আজ ফুটলো না গো ফুল
উড়ছে হাওয়ায় তোমার খোলা চুল
কুন্তলে মুখ ঢাকলে কী আর, বালা
ফুটবে বকুল? গাঁথবো বকুলমালা...
পথের বাঁকে বসন্তরূপ আলো;
ভাবছি হুদাই
কারে শুধাই—
কোকিল কেন কাকের মতো কালো!
কালো যদি কাকের দেহকেশ
কণ্ঠে কেন সুরের এত রেশ?
হাওয়ায় ভেসে যাচ্ছিল যে গান
একটু ঝুঁকে দাঁড়ালো সটান—
জীবনপথের ক্লান্তি চতুর্দিকে
কামরাঙা রোদ সন্ধে হলেই ফিকে।
এই বসন্তে
এই বসন্তে কোকিলের ডাক এখনো শোনোনি তুমি
প্রান্তরে ঘাসে ফুটে আছে ফুল, দেখে মাওলানা রুমি
হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল
ফাল্গুনে তাই ফোটে কত ফুল
শূন্য বাগানে চিৎ হয়ে শুয়ে রুমির আসে না ঘুম
কোকিলের ডাক কানে আসে তার, তুমি কেন বীরভূম
বেড়াতে গিয়েছো? এই বসন্তে হাহাকার বাংলায়
প্রকৃতির রূপ-লাবণ্য ছুঁতে প্রাণ মম তড়পায়।
স্মৃতির লাবণ্য
স্মৃতি ছাড়া আর কোনো লাবণ্য নাই
সময়ের ভাঁজ খুলে চেয়ে দেখি তাই—
আমাদের কথাগুলো ভাঙে নীরবতা
কথা নেই, আজ শুধু স্মৃতি-কাতরতা।
দিন নেই, তবু সেই দিনের ফসিল
কাঁধে নিয়ে হেঁটে যায় মুখর মিছিল
মুখরতা নিয়ে তুমি স্মৃতি কারুকাজ
স্বপ্নের দরজায় খিল আঁটা আজ।
স্মৃতিরঙে আল্পনা-আঁকা সেই বাড়ি
জনহীন পড়ে আছে স্মৃতি বিস্তারী—
ভিটে নয় যেন ধু-ধু উইয়ের ঢিবি
হাহাকার তুলে ডাকে, কী জবাব দিবি!
স্বপ্নের ছাই দিয়ে লিখি তব নাম
মুখোমুখি বসিবার নেই কোনো ধাম।
আমাদের নাম নেই, ধাম নেই কোনো
স্মৃতিছাড়া লাবণ্য ধূসরতা যেন!