আবু তাহের সরফরাজের পাঁচটি কিশোর কবিতা

প্রকাশিত : মে ২৫, ২০২২

ফেরিঅলা

সব কিছুতে চটকদারি
বিজ্ঞাপিত বাজার
গুণ যদি হয় একটা-দুটো
বলবে তারা হাজার।

মেকআপ নিয়ে রূপকুমারী
পণ্য ফেরিঅলা
সবার ঘরে বিক্রি করে
সাবান থেকে কলা।

পণ্যযুগে মানুষ কোথায়?
মানুষ নিজেই পণ্য
পুঁজির দালাল কিনছে মানুষ
বাজার ধরার জন্য।

রোদ নাকি বখাটে

রোদ নাকি বখাটে?
ওকে ডেকে বকা দে।
চচ্চড়ে রঙ তার
ছুটে যায় দুদ্দাড়
সূর্যের কড়ায়ে
পড়তেছে গড়ায়ে...

এই ভবে মাঠে আর ঘাটে
ছায়া নিয়ে একা একা হাঁটে।

বিকেলটা ম্যাড়মেড়ে
বলতেছে হাত নেড়ে,
এই আমি আর তুমি
রোদছাড়া তৃণভূমি।

এরপর সন্ধে
আসে ধীর ছন্দে।

রাত এলো ঘুটঘুটে
জ্যোসনা ফুটফুটে।
ছায়াবীথি ঘুম যা
স্বপ্নের চুম খা।

ভোরের রং

সত্যি কথাই বলি,
মাঞ্জা মেরে ঘুরে এলাম
ঢাকার অলিগলি।

একটা তো ছাদ    হাজারটা ফাঁদ
              সবাই যেন পর
পরস্পরে                        বসত করে
              ঘরের ভেতর ঘর।

সূর্য ওঠে ইটদেয়ালে
শহর জাগে নিজ খেয়ালে
ফুটপাথে কেউ চক্ষু মেলে
স্বপ্ন দ্যাখে এলেবেলে
এসির ঘরে ঘুম ভাঙে যার
সূর্যটা কি ওই ছেলেটার?

একটা মানুষ খুব গোপনে
দেখছে ভোরের রং স্বপনে
লোকটা বুঝি জাদুকর
সব মানুষের বাঁধে ঘর।

ফাঁদ

ফাঁদ পেতেছে শহর ঢাকা
দালানকোঠা দিয়ে
আটকে আছি ছটফটিয়ে
কোথায় সবুজ টিয়ে?

সবুজ টিয়ে সবুজ টিয়ে
কোথায় তুমি ভাই?
এই শহরে সবুজ কিছু
এক্কেবারেই নাই।

চাঁদ ওঠে না এই শহরে
রাত্রি নামে ঝুপ
নীলচে আলো লালচে আলো
এই কি রাতের রূপ?

জানলা দিয়ে চাইলে দেখি
ইটের পরে ইট
ইটদালানে আমরা সবাই
মানুষ নামের কীট।

গোত্তা খাওয়া রঙিন ঘুড়ি
আর দেখি না চোখে
এই শহরে বসত করে
পায় কী বলো লোকে!

বুকের ভেতর নদী

তুই কী ভোরের ঝরাপাতা?
ঝিরঝিরে বয় হাওয়া
দুপুর এসে বলল ডেকে,
এই ছিল তোর পাওয়া।

বলল সে তার মনের কথা
দেখব গোধূলি
এই দৃশ্য কিনতে পাবে
থাকলে আধুলি।

এই পৃথিবীর যা আছে সব
বিনিময়ের হাটে
বেচাকেনা করছে মানুষ
জীবন নদীর ঘাটে।

সব বিকিয়ে দাও যদিও
একটা রেখো নদী
বুকের ভেতর এই নদীটা
বইবে নিরবধি।