অলঙ্করণ: ঋত্বিক ত্রিপাঠী
আবু তাহের সরফরাজের তিনটি প্রেমের কবিতা
প্রকাশিত : নভেম্বর ২৫, ২০২০
তৃষ্ণার গন্তব্য
বুকের ভেতর খুন হয়ে তুই রক্ত ছলাৎ ঢেউ
ঢেউয়ের মানে এই জগতে জানল না আর কেউ।
কেউ না জানুক, আল্লাহ জানেন, তৃষ্ণা তারই পথে
তসবিহ দানা খুঁজতে গিয়ে ঠেকল কী এক হাতে!
হাতের ওপর হাতের ছোঁয়া পরম মমতায়
একজীবনে এইটুকু প্রেম সুন্দরে প্রাণ পায়।
প্রাণ খুলে যায় জগৎ মাঝে, দেখি পরম রূপ
রূপ সদাগর একটু হেসে পরক্ষণেই চুপ।
ডাক দিয়েছি নাম ধরে তোর রক্ত তুলে মুখে
তৃষ্ণাকাতর শহিদ আমি কারবালা সম্মুখে।
তুই এলি না, আসলো যে জন তারই পদধ্বনি
মৃত্যুসম যন্ত্রণাতেও কান পেতে আজ শুনি।
শরীর ছেড়ে প্রাণ উড়ে যায়—হঠাৎই সুন্দর
দিলেন খুলে মহার্ঘ্য তার রূপেরই অন্দর।
সুন্দরে যে লীন হতে চায়, সুন্দরও চায় তাকে
এই সত্য লেখা আছে তৃষ্ণানদীর বাঁকে।
রক্তনদী
হে আমার খুন ঝরানো রক্তনদী
একটা গোপন বুকের ভেতর ছলাৎ যদি
ঢেউয়ের ওপর ঢেউ দুলিয়ে
তীব্র স্রোতে দাও ভুলিয়ে
সকল হিশেব লাভ ও ক্ষতি।
ছোটাও তোমার পরম নেশা
দিগ্বিজয়ী ঘোড়ার হ্রেষা
আর কে এসে রুখবে রে তোর পাগলা গতি!
হে আমার চিরসখা, সর্বনেশে
বেঁচে থাক জীবনটাকে ভালোবাসে।
মানুষ বড়ো কাঁদছে
দুঃখ পেয়ে মানুষ এখন তোমার দিকে চেয়ে
ভাবছে, সূর্যোদয়ের আরেকটু ক্ষণ বাকি
তুমি তাদের শুশ্রুয়া দাও— রাত্রি নামে ধেয়ে
দূর নীলিমায় ফেরেস্তারা সুন্দরে লীন নাকি?
মানুষ বড়োই কাঁদছে দ্যাখো— নেই কি পরিত্রাণ?
বুক কাঁপানো হাহাকারেও বন্ধ তোমার কান।
ফুটছে গোলাপ শীতকুয়াশায় যেন তোমার মুখ
পাপড়ি খুলে কাঁপছে দু’ঠোঁট— শূন্য তবু বুক!