আবু তাহের সরফরাজ
আবু তাহের সরফরাজের ছয়টি কিশোর কবিতা
প্রকাশিত : নভেম্বর ১৪, ২০২১
তেরে কেটে ধা
তেরে কেটে ধা
ধামা নিয়ে যা
মাঠ থেকে ধান এনে
ভাত রেঁধে খা।
তেরে কেটে ধা
ধাঁই ধাঁই
ছুটে যায়
কানা বগির ছা।
তেরে কেটে ধা
ধানাই পানাই
নেই তো কামাই
বাতাস টেনে খা।
তেরে কেটে ধা
ভালবাসি আমাদের
এই ছোট গাঁ।
তেরে কেটে ধা
খাই খাই করে এক
বুড়োধাড়ি খোকা।
আপন ছেড়ে বনেই ভালো
গাছের ডালে থাকেন তিনি
গাছের ডালেই ঘুমান
বিষটি এলে পাতার ফাঁকে
শরীর তিনি লুকান।
রাতের বেলা বাদুড় দেখে
ডাকেন তিনি আয় রে,
দুজন মিলে শেয়ার করে
গাছের লিচু খাই রে।
চাঁদের বুড়ি মুচকি হেসে
চরকা করে বন্ধ
দেখতে থাকে লোকটা যেন
একটুখানি অন্ধ।
একটু দূরে নিজের বাড়ি
লোকটা তবু যায় না
আপন ছেড়ে বনেই ভালো
আর সে কিছু চায় না।
ইচ্ছে
ইচ্ছে যদি
মেলত পাখা
চোখের পাতায়
যেমন আঁকা
উড়তে দ্যাখা চিল
আকাশ থেকে
চাঁদটা খসে
পড়ছে দেখে
লিখতে বসে
দিতাম ছড়ায় মিল।
ঝাঁক বাঁধা ওই
হাঁসের দলে
যেতাম আমি
খেলাচ্ছলে
কাপলা ফোটা বিল
তেপান্তরের
মাঠ পেরিয়ে
দেশান্তরের
দেশ বেড়িয়ে
দিতাম ঘরে খিল।
ইচ্ছে হলো ঘুড়ির মতো
ইচ্ছে হলো ঘুড়ির মতো
আকাশ ছুঁতে চায়
ঘর পালিয়ে মনটা ছোটে
মেঘ-পাহাড়ের গাঁয়।
মেঘের দেশে ছবির মতো
ভাসতে থাকে মন
ইচ্ছে হলো কল্পনা, তার
নেই কোনো বন্ধন।
বইয়ের পড়া ছবির খাতা
কিংবা খেলার গাড়ি
ইচ্ছেগুলো সব ছাড়িয়ে
ভিনগ্রহে দ্যায় পাড়ি।
সূর্য ঘিরে নয়টি গ্রহ
ঘুরছে কীসের টানে?
ইচ্ছে হলো মুহূর্ত-যান
ছুটতে পারে ধ্যানে।
খেলা
ফড়িং ধরে লাভ কী বলো
উড়ুক সে তার মতো
ফিনফিনে তার ছোট্ট ডানা
কোরো না ভাই হত।
ঘাসবনে সে খেলছে, খেলুক
পিছ নিও না তার
খেলতে পারো তুমিও যে
খেলা তো সব্বার।
ইচ্ছে হলে আঁকতে পারো
ওই ফড়িঙের ছবি
ফড়িং না হোক, হাবিজাবি
আঁকতে পারো সবই।
চারপাশে যা দেখছ সবই
খেলছে আপন খেয়ালে
শেয়াল যেমন চাটতে থাকে
মুরগি এঁকে দেয়ালে।
ভ্যানগগ
গোধূলির সোনারঙে স্বপ্নের ছবি
আঁকলেন ভ্যানগগ, ভিনদেশি কবি।
নীলিমার নীলে আঁকা তার ক্যানভাস
সবুজের মাঝখানে মাঠজোড়া ঘাস।
গোধূলির মাঠে মাঠে হাঁটে ভ্যানগগ
নীলিমার বুকে ঘুম দেয়া তার শখ।
পৃথিবীর ওইপাড়ে নীলিমার নীলে
ঘুম এলে ঘুমোবে দুইজন মিলে।
নীলিমার রঙছবি মুছে দিলে কেউ
থেমে যাবে সাগরের সবগুলো ঢেউ।
সূর্যের কাছাকাছি তাই ভ্যানগগ
ক্যানভাসে আঁকে নীল আসমানি বক।