আজ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, ব্যালট পেপারে বাংলা

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : নভেম্বর ০৫, ২০২৪

ষাটতম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আজ মঙ্গলবার। মূল লড়াইটা হচ্ছে ডেমোক্রেটিক পার্টির কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে। নির্বাচনে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ব্যালট পেপারে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাসহ ৪টি বিদেশি ভাষা ঠাঁই পেয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন পরিচালনাকারী সংস্থা বোর্ড অব ইলেকশন্সের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য শাখার নির্বাহী পরিচালক মাইকেল জে রায়ান সোমবার নিউইয়র্কের প্রধান শহর নিউইয়র্ক সিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

রায়ান বলেন, “অভিবাসী ভোটারদের সুবিধার জন্য ব্যালট পেপারে ইংরেজির পাশাপাশি ৪টি ভাষা অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড অব ইলেকশন্স নিউইয়র্ক শাখা। এই ভাষাগুলো হলো চীনা, স্প্যানিশ, কোরীয় ও বাংলা।”

তিনি আরও বলেন, “আমি বুঝতে পারছি, ব্যালট পেপারের জন্য অন্যান্য ভারতীয় ভাষাকে বাদ দিয়ে শুধু বাংলাকে বেছে নেওয়ায় অন্যান্য ভাষাভাষী ভারতীয়রা হয়তো মনঃক্ষুণ্ণ হতে পারেন। কিন্তু এটা ছাড়া আমাদের সামনে কোনো গত্যন্তর ছিল না।”

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক রাজ্যটি অধিবাসী অধ্যুষিত। দেশটির মোট অভিবাসীদের একটি বড় অংশ থাকে নিউইয়র্ক সিটিসহ এই রাজ্যের বিভিন্ন শহরে।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গোটা নিউইয়র্কের মানুষ দুশো ভাষায় কথা বলে। এসবের মধ্যে হিন্দি, পাঞ্জাবি, গুজরাটি ও তামিলসহ বিভিন্ন ভারতীয় ভাষাও রয়েছে। কিন্তু সেসবের মধ্যে ভারতীয় ভাষা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে একমাত্র বাংলাকে।

নিউইয়র্কে বাংলাভাষী বহু মানুষের বাস। যাদের সিংহভাগ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। ২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের এই রাজ্যে এক লাখেরও বেশি বাংলাভাষী মানুষ বসবাস করে। নিউইয়র্কে বাঙালিদের বসবাস মূলত ব্রুকলিন, কুইনস ও ব্রঙ্কসে। ব্রুকলিনের কেনসিংটন এলাকার একাংশকে স্থানীয় লোকজন ‘ছোট বাংলাদেশ’ বলে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রে যত বাঙালি বসবাস করে তাদের ৪০ শতাংশেরই বাস নিউইয়র্কে। সামগ্রিকভাবে গোটা যুক্তরাষ্ট্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে লাখেরও বাংলাদেশি। এ পরিস্থিতিতে মনে করা হচ্ছে, বাংলাদেশি ভোটারদের সুবিধার্থেই ব্যালটে বাংলা ভাষা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউইয়র্ক প্রশাসন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রদেশগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম রয়েছে। ২০২০ সালে যেমন হিন্দিভাষী ভোটারদের কথা মাথায় রেখে ইলিনয় প্রদেশের ব্যালটে অন্য অনেক ভাষার সঙ্গে হিন্দিও রাখা হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের ভোটার অধিকার আইন, ১৯৬৫- এর আওতায় দুই বছর আগে নিউইয়র্কের আদালতে একটি মামলা করা হয়। মামলাকারীদের দাবি ছিল, নিউইয়র্কে যেসব অঞ্চলে অভিবাসীদের সংখ্যা বেশি, সেসব অঞ্চলে ইংরেজির পাশাপাশি অন্তত একটি অভিবাসী ভাষায় ব্যালট পেপার দেওয়া হোক।

পরে নিউইয়র্কের রাজ্য প্রশাসন ও মামলাকারী- দুপক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে এই চার ভাষায় ব্যালট পেপার প্রকাশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।