অঙ্কনঃ রিফাত বিন সালাম
অশরীরী
বাস্তব অভিজ্ঞতা
সৈয়দ রিয়াদ হোসেনপ্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৮
মধ্যরাত ৩ ঘটিকা।
প্রতিদিনের মতোই আমি অফিসের কাজ শেষ করে ঘরে ঘুমানোর জন্য প্রস্তুতি নিয়ে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম। প্রতিদিনের মতো ঘরের লাইট ও জানালা-দরজা বন্ধ করে শুয়ে আছি। ঘুমানোর চেষ্টা করছি কিন্তু ঘুম আসছে না। কিছু সময় পরই হঠাৎ আমার গায়ে থাকা পাতলা কম্বল ধরে কেউ যেন টানছে। আমি প্রথমে মনে করেছি, আমার এটি বিভ্রম। কিন্তু না, আস্তে আস্তে আমার গায়ের কম্বল টানার চেষ্টা বেড়েই চলেছে। আমি সাহস করে শক্ত হাতে কম্বল ধরে থাকালাম না নড়াচড়া করে। এভাবে কিছুক্ষণ চলল। এরপর আমি পরিস্থিতি বোঝার জন্য একটু নড়ে উঠলাম। তাকিয়ে কিছু দেখতে পেলাম না। ভাবলাম, যাক পরিস্থিতি শান্ত হবে। কিন্তু না, আমার ডানদিকের শরীরের অংশ ঠাণ্ডা হয়ে আসছে। আমি চোখ বন্ধ করে চুপ করে থাকলাম। আমার শরীরের উপর দিয়ে খুব ঠাণ্ডা বাতাস বয়ে গেল এবং আওয়াজ শুরু হলো হাতুড়ি দিয়ে লোহা পেটানোর। বাতাস যখন বয়ে গেল তখন আওয়াজটি ছিল ঝড়ের সময় বা জোরে বাতাস হলে যে ধরনের আওয়াজ হয়, ঠিক ওই আওয়াজ। তখন আমি চোখ খুলেই দেখি, কালো ছায়ার লাল আভা, যা বিশ্লেষণ করা যায় না।
আমি সাথে সাথেই আমার মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে হুড়মুড় করে বিছানা থেকে দৌড়ে নেমে দরজা খুলে পাশের রুমে আমার মাকে ডাকলাম। মা ঘরে এসে লাইট জ্বালালো। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আম্মা, তুমি কি কোনও আওয়াজ পাচ্ছো?
আম্মা বললেন, না তো।
কিন্তু আমি তখনো ওই হাতুড়ী দিয়ে লোহা পিটানোর আওয়াজ পাচ্ছি।... ঠিকাছে যাও ঘুমিয়ে পড়ো। এই বলে আমি দরজা হালকা খুলে লাইট জ্বেলে টেলিভিশনের দিকে তাকিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু ঘুম আসছে না। অনেকক্ষণ চেয়ে রইলাম টেলিভিশনের দিকে। হঠাৎ করে দেখি, টেলিভিশনের কাচে আমার পেছনের প্রতিবিম্ব। শাদা রঙের পোশাক পরা কেউ দ্রুতবেগে সড়ে গেল। আমি তাকে পরপর দু’বার দেখলাম।
রাতে আর ঘুমোতে পারলাম না। ঠিক ফজরের আজানের সময় কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি, জানি না।
পরদিন এর একটা সমাধানে আসতে চেষ্টা করলাম। এটা কী ভালো, নাকি খারাপ, কিম্বা এটা কী অশরীরী কিছু? যা হয়তো আমাকে কিছু বলতে এসেছিল। কিন্তু আমার তা শোনা হলো না! আবার এমনও তো হতে পারে, ওই অশরীরী আসলে আমার ক্ষতি করতে এসেছিল।